নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
'কাশ্মীর প্রিমিয়ার লীগ' নামে পাকিস্তানের অনুমোদিত একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে বিদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ করতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বাধা দিচ্ছে - এমন অভিযোগকে ঘিরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দুনিয়ায় তোলপাড় চলছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার হার্শেল গিবস প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছেন, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে যে, ওই লীগে অংশ নিলে ভবিষ্যতে তার ভারতে আসার রাস্তাই বন্ধ করে দেওয়া হবে। -বিবিসি বাংলা
একই কারণ দেখিয়ে ওই লীগ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সাবেক স্পিনার মন্টি পানেসরও। ভারতীয় বোর্ড আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য না-করলেও বোর্ডের সূত্রগুলো বিবিসিকে আভাস দিয়েছে, প্রিমিয়ার লীগের নামকরণে কাশ্মীর শব্দটির ব্যবহারেই তাদের মূল আপত্তি। মিরপুর, মুজফফরাবাদ, রাওয়ালকোট, বাগ ও কোটলি - পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের এই পাঁচটি শহরের নামে পাঁচটি টিম ও বিদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে আর একটি, এই ছয়টি দলকে নিয়ে পাকিস্তানে একটি টি-টোয়েন্টি লীগ শুরু হওয়ার কথা আগামী ৬ আগস্ট। কিন্তু কাশ্মীর প্রিমিয়ার লীগ নামে এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের বাইরের ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বা বিসিসিআই তীব্র বাধা দিচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান তারকা হার্শেল গিবস দুদিন আগে টুইটারে লিখেছেন, বিসিসিআই এখানে তাদের 'রাজনৈতিক এজেন্ডা' নিয়ে এসেছে এবং তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে কাশ্মীর প্রিমিয়ার লীগে খেললে ভবিষ্যতে তার ভারতে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইংল্যান্ডের সাবেক স্পিনার মন্টি পানেসরও আজ সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, ভারতে ক্রিকেট কমেন্ট্রি বা সাংবাদিকতার ক্যারিয়ার বিপন্ন করতে চান না বলে তিনিও কাশ্মীর প্রিমিয়ার লীগ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।
এপ্রসঙ্গে পাকিস্তানে বিবিসির ক্রীড়া সংবাদদাতা আবদুল রশিদ শাকুর বলেন, "আমরা সব সময় খেলাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার কথা বলি - কিন্তু এখানে ঠিক সেটাই ঘটছে।" "কাশ্মীর প্রিমিয়ার লীগ পাকিস্তানের একটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট, যাকে দেশের ক্রিকেট বোর্ড অনুমোদন দিয়েছে ও যাতে কয়েকজন বিদেশি ক্রিকেটারেরও খেলার কথা - কিন্তু রাজনৈতিক কারণে ভারত এই টুর্নামেন্ট ভেস্তে দিতে চাইছে।"
"পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও বিবৃতি দিয়ে ঠিক সেখানেই আপত্তি জানিয়েছে এবং তারা মনে করছে এই টুর্নামেন্টে বাধা দেওয়ার কোনও এখতিয়ারই ভারতের নেই।" কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটের অর্থনৈতিক পাওয়ারহাউস যে এখন ভারত, সেটা সবারই জানা এবং ভারতকে চটিয়ে কোনও সাবেক ক্রিকেটার নিজেদের ক্যারিয়ার বিপদে ফেলতে চাইবেন না এটাও খুব স্বাভাবিক। কাশ্মীর প্রিমিয়ার লীগকে ঠেকাতে ভারতীয় বোর্ড এই বাস্তবতাকেই হাতিয়ার করছে বলে বোর্ডেরই একটি সূত্র বিবিসিকে আভাস দিয়েছেন।
আরও জানা গেছে, এই গোটা বিষয়টি তদারকি করছেন বিসিসিআইয়ের সচিব জেয় শাহ - যিনি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শীর্ষ বিজেপি নেতা অমিত শাহ’র ছেলে।
তবে সহজবোধ্য কারণেই বিসিসিআই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি বা কোনও বিবৃতিও দেয়নি। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের অলরাউন্ডার ও সাবেক জাতীয় নির্বাচক মদনলাল কিন্তু বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "আমি মনে করি, বিসিসিআইয়ের এটাতে নাক গলানোই উচিত হয়নি।" "আজাদ কাশ্মীরে পাকিস্তান যদি লীগ করতে চায় করুক না, তাতে ক্ষতি কী? আমরা তো দুনিয়ার সেরা ক্রিকেট লীগ আইপিএল করি, তার সঙ্গে তো কেউ টক্কর নিতে পারবে না।" "আর কাশ্মীরি ক্রিকেটাররা যদি এতে কিছু এক্সপোজার পায় সেটা তো ইতিবাচক লক্ষণ ... রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়, খেলা খেলার জায়গায় থাকলেই ভাল।"
কাশ্মীর প্রিমিয়ার লীগ কমিটির প্রেসিডেন্ট আরিফ মালিক এখনও আশাবাদী, সব বাধাবিপত্তি টপকেও টুর্নামেন্ট সফলভাবে আয়োজন করা যাবে। নিজেদের অফিসিয়াল চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি জানিয়েছেন, "পাঁচজন কাশ্মীরি ক্রিকেটারের সঙ্গে বিদেশি ক্রিকেটারদের ড্রেসিংরুম শেয়ার করা নিয়েই মূল আপত্তি তোলা হচ্ছে, সেটা অ্যাড্রেস করা হচ্ছে।" "এছাড়া ভারতীয় বোর্ড এই লীগের বিরুদ্ধে যে ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে, আমরা সেটারও পাল্টা জবাব দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছি", বলেছেন তিনি।
এই বিতর্কের মধ্যেই পাকিস্তানের অজস্র ক্রিকেট-অনুরাগী সোশ্যাল মিডিয়াতে মন্তব্য করছেন, তাদের দেশের একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে অযথা গুরুত্ব দিয়ে ভারতই যে সেটিকে আন্তর্জাতিক মিডিয়ার স্পটলাইটে নিয়ে এসেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।