বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা ভবনে এক অ্যাম্বুলেন্স চালককে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কাদের মির্জার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
তাকে নির্যাতন শেষে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার ও হাসপাতালে তার স্বেচ্ছায় দেওয়া বক্তব্যের দুটি পৃথক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
নির্যাতনের শিকার মো. শহিদ উল্যাহকে (৩৫) উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সোলেমান মিয়ার ছেলে। সে বসুরহাট পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল গেইট থেকে জনসেবা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস নামে এ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এবং সে শ্রমিকলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত বলেও জানা যায়।
গতকাল সোমবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বসুরহাট পৌরসভা ভবনে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ রাত ৮টার দিকে তাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
মঙ্গলবার ২০ জুলাই সকালে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো.সাইফুদ্দিন আনোয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, অভিযোগ পেয়ে ভুক্তভোগীকে গতকাল রাত ৮টার দিকে পৌরসভা ভবন থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মো.শহিদ অভিযোগ করেন, গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেলের বাড়ীতে কাদের মির্জার অনুসারীরা হামলা চালায়। ওই হামলায় আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেওয়ায় অভিযোগে কাদের মির্জা তাকে পৌরসভা ভবনে ডেকে পাঠান। পৌর ভবনে গেলে কাদের মির্জার অনুসারী বুবির ছেলে মানিক, সাহাদাত, আরিফ। এ তিন জন প্রথমে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। শুধু রড, আর শুধু রড দিয়ে মেরে একটি হাত ভেঙ্গে দেয়। আর বলতেছে তোকে মেরে ফেলার অর্ডার। নির্যাতন সহ্য না করতে পেরে, এ পরিস্থিতি দেখে আমি চিন্তা করছি আমি সুইসাইড করব। আমাকে বলছে তুমি বলতে হবে তুমি অস্ত্র পাইছো। তিনি আরও অভিযোগ করেন,মেয়র আমাকে বলে তুমি মামলা করতে হবে। যারা তোমাকে নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তুমি যদি মামলা কর,বলব তুমি সঠিক আছ। মামলা না করলে বলুম তুমি অপশক্তির সাথে আছ (প্রতিপক্ষের সাথে আছ)।
এর আগে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বসুরহাট পৌরসভা ভবনে কাদের মির্জার অনুসারীরা তাকে বেধড়ক পিটিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। ওই জবানবন্দিতে তাকে বলতে বাধ্য করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আজম পাশা চৌধুরী রুমেলের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটলে অ্যাম্বুলেন্স করে কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারীরা অস্ত্র আদান প্রদান করেছে।
সেতুমন্ত্রীর ভাগনে ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু অভিযোগ করেন, কাদের মির্জার নির্দেশে তার অনুসারীরা নিরীহ অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারকে ডেকে নিয়ে আটকে রেখে নির্মম নির্যাতন করে আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা স্বীকারোত্তি¡ আদায় করে। এর আগেও একাধিক ছাত্রলীগ যুবলীগের নেতাকর্মিকে তার অনুসারীরা ডেকে নিয়ে পৌরসভা ভবনের টর্চার সেলে আটকে রেখে নির্যাতন করে।
এ বিষয়ে জানতে সকাল ৯টায় একাধিকবার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার ফোনে কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তাই এ বিষয়ে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ওসি সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, ভুক্তভোগী মৌখিক ভাবে পুলিশকে জানিয়েছে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভুক্তভোগীর একটি স্টেটমান্ট রয়েছে বলেও জানান তিনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।