বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নাছিম-উল-আালম : বরিশালে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমান বন্দরটি ক্রমশ ব্যস্ত হয়ে উঠছে। ১৯৯৫ সালের ৩ ডিসেম্বর প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশালে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র এ বিমান বন্দরটি চালু করার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থার ফ্লাইট চালুর পরেও নানা ষড়যন্ত্রে এক সময়ে বিমান বন্দরটি পরিত্যক্ত হতে চলছিল। সে বিমান বন্দরটি এখন ক্রমশ আগ্রহের সৃষ্টি করছে সরকারি-বেসরকারি আকাশ পরিবহন সংস্থার। তবে নানা প্রতিবন্ধকতা ও রহস্যজনক ধীরে চলো নীতের কারণে রাষ্ট্রীয় বিমান বেসরকারি এয়ারলাইন্স থেকে পিছিয়ে পড়তে শুরু করেছে বরিশাল সেক্টরে। গতবছর এপ্রিলে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান ও জুলাই মাসে বেসরকারি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স-এর ফ্লাইট চালুর পরে ইতোমধ্যে দেশের আরো বেসরকারি আকাশ পরিবহন সংস্থার নজর বরিশাল বিমান বন্দরের দিকে। আগামী মাসেই দেশের বিলাসবহুল বেসরকারি বিমান পরিবহন কোম্পানি ‘নভো এয়ার’ সপ্তাহে ৪টি ফ্লাইট নিয়ে বরিশালের আকাশে ডানা মেলতে যাচ্ছে।
২০০১ সালে ৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরে বরিশালÑযশোরÑঢাকা এবং ঢাকাÑযশোর-বরিশাল আকাশপথে যে বিমান ফ্লাইট চালু করেছিল, ২০০৭-এর সেনা সমর্থিত কথিত তত্ত¡বধায়ক সরকার তা বন্ধ করে দেয়। জরুরি অবস্থার চোখ রাঙানিতে সেদিন সাধারণ মানুষ মুখ না খুললেও তাদের দীর্ঘশ্বাস চাপা থাকেনি। তবে সরকার প্রধানের আন্তরিকতা ও একাগ্রতায় অনেক চড়াই-উতড়াই পেরিয়ে গতবছর এপ্রিলে বরিশালের আকাশে পুনরায় জাতীয় পতাকাবাহী বিমান ডানা মেলেছে। এক হিসেবে জানা গেছে, গতবছর এপ্রিলের প্রথমভাগ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সপ্তাহে দুটি ফ্লাইট নিয়ে বরিশাল সেক্টরে যাত্রা শুরু করে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫৪টি ফ্লাইটে ৭ হাজার ৫ জন যাত্রী পরিবহন করে। এ সময়ে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটির ফ্লাইট প্রতি যাত্রী সংখ্যা ছিল ৪৫.৪৮ জন। অপরদিকে গতবছর জুলাই মাসে বেসরকারি ইউএস-বাংলা বরিশাল সেক্টরে যাত্রা শুরু করে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬০টি ফ্লাইটে ৮ হাজার ৩৯২ জন যাত্রী পরিবহন করেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটির ফ্লাইট প্রতি যাত্রী ছিল ৫২.৪৫ জন করে।
মূলত ভাড়া বেশি হবার পরেও বেসরকারি এয়ারলাইন্সটির প্রতি যাত্রীদের আগ্রহ বেশি অনেকগুলো কারণে। একাধিক যাত্রী ও ট্যুর অপারেটরদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, বিমান প্রতি বুধ ও রোববার যে সময়ে ফ্লাইট সময়সূচি নির্ধারণ করেছে, তা যাত্রীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। সাধারণ যাত্রীদের দাবি রোববার সকালে এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে অবশ্যই বিমান ফ্লাইট প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি এ দুটি দিনের মাঝে মঙ্গলবারেও একটি ফ্লাইট প্রয়োজন। কিন্তু বিমান তার যাত্রীদের প্রয়োজনের কথা কখনোই বিবেচনায় নেয়নি। অথচ বেসরকারি এয়ারলাইন্সটি যাত্রীদের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়েই রোববার এবং বৃহস্পতিবারের ফ্লাইট ছাড়াও শুক্রবার ও মঙ্গলবারেও বরিশালÑঢাকা আকাশপথে যাত্রী পরিবহন করেছ। উপরন্তু বরিশাল মহানগরী থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে বিমান বন্দরে ইউএস-বাংলা বাতানুকুল গাড়িতে করে তার যাত্রীদের আনা নেয়া করছে। কিন্তু বিমান গত একবছরেও সে বিষয়টি আমলেই নেয়নি। ফলে সরকারি বিমানের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের পাশাাপাশি আর্থিক ক্ষতিরও সম্মুখিন হতে হচ্ছে। এতে করে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বরিশাল সেক্টরে বিমানের ফ্লাইটে ভ্রমণে অনাগ্রহের কথা জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীগণ।
এদিকে যাত্রীদের চাহিদার কথা বিবেচনায় নিয়েই আগামী মাসের প্রথমভাগে নভো এয়ার বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি বরিশালে তার সেলস অফিসও চালু করেছে। বিমান বন্দরেও প্রতিষ্ঠানটির ভিন্ন অফিস স্পেস দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নভো এয়ার বরিশাল-ঢাকা আকাশপথে সপ্তাহে ৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তবে পরিবর্তীতে তারা প্রতিদিনই ফ্লাইট পরিচালনার বিষয়টি বিচেনায় নিয়েই কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্বশীল মহল। বিমান ও ইউএস-বাংলার সাথে সমন্বয় করেই নভো এয়ার-এর ভাড়া নির্ধারণের কথা জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
এ সব বিষেয়ে বেসামরিক বিমান চালচল মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, বরিশাল বিমান বন্দর ক্রমে সরকারি-বেসরকারি ফ্লাইট অপারেটরদের কাছে আগ্রহের সৃষ্টি করছে। আমরা বরিশাল বিমান বন্দরকে সর্বাধুনিক করে গড়ে তোলার লক্ষেও কাজ চলছে। বিমানের পাশাপাশি এখন ইউএস বাংলা চলছে, আগামী মাসেই নভো এয়ায় বরিশালে ফ্লাইট শুরু করবে বলে জানান মন্ত্রী। বিমান প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমাদের জাহাজ স্বল্পতা রয়েছে। আগামী দু-তিন মাসের মধ্যে অভ্যন্তরীণ সেক্টরের জন্য বহরে আরো নতুন উড়োজাহাজ যোগ হবে বিমান-এ। তবে যত দ্রæত সম্ভব বরিশাল সেক্টরে বিমানকে ৩টি ফ্লাইট দিতে বলা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। পাশাপাশি বিমানের যাত্রীদের বিমান বন্দরে যাতায়তের বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়েছ বলে জানান তিনি। তবে এ ব্যাপারে বিমানের বাণিজ্য পরিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, মার্চের শেষ ভাগ থেকে গ্রীষ্মকালীন সময়সূচিতে বরিশাল সেক্টরে ১টি ফ্লাইট বৃদ্ধিসহ যাত্রীদের চাহিদার নিরিখে সময়সূচি প্রবর্তনের চেষ্টা চবলছে। পাশাপাশি বরিশাল মহানগরী থেকে বিমান বন্দরে যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি মিনি বাস চালু করার প্রস্তাবটিও সক্রিয় বিচেনাধীন বলে জানানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।