মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তানে একের পর একে শহর ও অঞ্চল দখল করে চলছে তালেবানের অগ্রযাত্রা। এবার তারা দেশটির একেবারে কেন্দ্রে অবস্থিত গজনি শহর ঘিরে ফেলেছে। আফগান কর্মকর্তারা সোমবার এ তথ্য জানিয়ে বলেন, কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ শহরটি তালেবানের হাতে পতনের হুমকিতে রয়েছে। এদিকে, তালেবানরা সোমবার দাবি করেছে যে, তারা আফগানিস্তানের বিমান বাহিনীর দুটি সিকোরস্কি ইউএইচ-৬০ মডেলের ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার ধ্বংস করে দিয়েছে। কুন্দুজ বিমানবন্দরে কৌশলগত আক্রমণ চালিয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া হেলিকপ্টার দুটি ধ্বংস করে।
গজনির প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য হাসান রেজায়ি বলেন, গজনির পরিস্থিতি খুবই জটিল। তালেবান যোদ্ধারা বিভিন্ন বাসাবাড়িতে আত্মগোপন করে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর (এএনডিএসএফ) সদস্যদের সঙ্গে লড়াই করছেন। এতে তালেবান যোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াই করা সেনাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন। এরপর থেকে দেশটিতে সরকারি সেনা ও তালেবানের মধ্যে লড়াই বেড়ে গেছে। আফগানিস্তানে ২০ বছরের আগ্রাসন শেষে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্কিন সেনাদের দেশটি ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে তালেবানের দাবি, তারা আফগানিস্তানের প্রায় ৮৫ শতাংশ এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
গজনি ছাড়াও আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ কান্দাহারে সেনাদের সঙ্গে তালেবানের লড়াই চলছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। এদিকে আফগানিস্তানে কথিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে নেতৃত্বদানকারী মার্কিন জেনারেল অস্টিন মিলার সোমবার তার দায়িত্বভার আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগ করেছেন। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের মিশনের পরিসমাপ্তি ঘটার একটি প্রতীক এটি। তালেবানের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মার্কিন সেনাদের পুরোপুরিভাবে প্রত্যাহারের চূড়ান্ত প্রস্তুতি, আফগান সেনা ও তালেবানের মধ্যে ঘোর লড়াই এবং এরই ধারাবাহিকতায় তালেবানের অগ্রযাত্রা—এসবের মধ্যেই কাতারের রাজধানীতে চলছে আফগান সরকার-তালেবান শান্তি আলোচনা। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছে সামান্যই।
গজনি ছাড়াও আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কান্দাহারে সেনাদের সঙ্গে তালেবানের লড়াই চলছে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। প্রদেশটি আগে থেকেই তালেবানের অন্যতম শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। রাজধানী কাবুল ও কান্দাহার শহরের মধ্যকার প্রধান সড়কটি গজনির ওপর দিয়ে গেছে। আফগানিস্তানের পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য হামিদজাই লেলে বলেন, চার দিন ধরে সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধারা পশ্চিম থেকে কান্দাহার শহরে আক্রমণ চালাচ্ছেন। আফগান সেনাবাহিনী, বিশেষ বাহিনীগুলো তাদের সঙ্গে লড়াই করছে। তালেবান যোদ্ধাদের পিছু হটানোর চেষ্টা করছে তারা। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফাওয়াদ আমান দাবি করেছেন, কান্দাহার পরিস্থিতি নিরাপত্তা বাহিনীর পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তালেবানের বিরুদ্ধে স্থল অভিযানের পাশাপাশি বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। পশ্চিমা দেশের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন, আফগানিস্তানে এ মুহূর্তে শতাধিক জেলা নিয়ন্ত্রণ করছে তালেবান। যদিও তালেবান বলছে, ৩৪টি প্রদেশের ২০০ জেলা তাদের নিয়ন্ত্রণে। তবে অধিকাংশ প্রধান প্রধান শহর ও প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ এখনো সরকারের হাতে।
এদিকে, এক টুইট বার্তায় তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, কুন্দুজ বিমানবন্দরে হামলায় আফগান বাহিনীও হতাহতের শিকার হয়েছে। তিনি হামলার ড্রোন ফুটেজও শেয়ার করেছেন, যাতে জ্বলন্ত হেলিকপ্টারগুলো দূর থেকে দেখা যায়। আফগানিস্তানে তাদের বিরুদ্ধে ভুয়া বিবৃতি, ভিডিও, নথি, হুমকি এবং অন্যান্য প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে দাবি করে তারা জানায়, সেগুলো কেবল সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ারই করা হয়নি, এমনকি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের কিছু জায়গায় বিমান দিয়েও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাঈমের শেয়ার করা এক বিবৃতিতে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মুখপাত্র জবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ‘শত্রু কর্তৃক এ জাতীয় সমস্ত অপপ্রচার তাদের ভয় ও উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করা, সাধারণ চিন্তাভাবনাকে বিভ্রান্ত করার ব্যর্থ প্রয়াস।’ তিনি নিরাপত্তা বাহিনী দ্বারা তালেবানদের কাছ থেকে আফগান জেলাগুলো পুনরায় দখল এবং শতাধিক হতাহতের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘ইসলামী আমিরাত উপরোক্ত সমস্ত উপাদানকে প্রত্যাখ্যান করে এবং কাউকেই কোথাও মানুষের বিরুদ্ধে সীমানা লঙ্ঘন করতে বা নিজের দ্বারা আইন-শৃঙ্খলা চাপিয়ে দেয়ার, বা জীবনকে অবরুদ্ধ করার অনুমতি দেয় না। এবং নারী ও পুরুষদের সাথেও কোন খারাপ ব্যবহার করা হয়নি এবং কাউকে এটি করার অনুমতিও দেয়া হয়নি। সূত্র : ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।