Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনকে আফগানরা বন্ধু মনে করে : তালেবান

উইঘুর বিদ্রোহীদের সমর্থন না দেয়ার প্রতিশ্রুতি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

আফগানিস্তান পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় চীনের বিনিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছে তালেবান। সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তালেবান মুখপাত্র সুহাইল শাহিন জানান, দেশের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় তারা চীনের বিনিয়োগের উদ্যোগকে স্বাগত জানাবেন।

টেলিফোনে দেয়া সাক্ষাৎকারে শাহিন জানান, বর্তমানে দেশের ৮৫ শতাংশ এলাকা তালেবানদের দখলে আছে। তারা চীনের বিনিয়োগকারী ও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। এর আগে, আফগানিস্তানে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়া চীনের বিচ্ছিন্নতাবাদী উইঘুর যোদ্ধাদের তাদের দেশে আর প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। আল-কায়েদা কিংবা অন্য কোনো দল যেন আফগানিস্তান থেকে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারে, সে বিষয়টিও তারা নিশ্চিত করবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের স্বাগত জানাই। যদি, তাদের বিনিয়োগের পরিকল্পনা থাকে, তাহলে আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো।’

সাক্ষাৎকারটি এমন সময়ে প্রকাশ করা হয়েছে যখন তালেবানরা আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের প্রদেশগুলোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার কার্যক্রম প্রায় শেষদিকে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ধারণা করছে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে কাবুলের ক্ষমতাসীন সরকারের পতন হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রায় ২০ বছর পরে আবার তালেবানরা আফগানিস্তানের শাসনভার দখল করতে যাচ্ছে। সন্ত্রাসী দল আল-কায়েদা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন শহর আক্রমণ করার পর যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে তালিবানরা আল-কায়েদাকে আশ্রয় দিয়েছে এবং এর ফলশ্রুতিতে তারা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে।

শাহিন বলেন, ‘মার্কিন সেনাবাহিনী চলে যাওয়ার পর আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী রাষ্ট্র চীনের সঙ্গে আলোচনায় বসা জরুরি হয়ে পড়েছে। আমরা অনেকবার চীনে গিয়েছি এবং তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে। চীন একটি বন্ধুভাবাপন্ন রাষ্ট্র এবং আমরা আফগানিস্তানের পুনর্গঠন ও উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য তাদেরকে স্বাগত জানাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, আফগানিস্তানে বিশ্বের বৃহত্তম অবিকৃত খনিজ পদার্র্থের আঁকর আছে। সেখানে আছে তামা, কয়লা, লোহা, গ্যাস, কোবাল্ট, পারদ, সোনা, লিথিয়াম ও থোরিয়ামের খনি। এসবের আনুমানিক মূল্য এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ২০১১ সালে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (সিএনপিসি) ৪০০ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে নিলাম জয়লাভ করে ২৫ বছরের জন্য তিনটি তেলের খনি খনন করার অনুমতি পেয়েছিল, যেখানে আনুমানিক ৮৭ মিলিয়ন ব্যারেল তেল আছে। এছাড়াও, চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো রাজধানী কাবুল থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লোগার প্রদেশের মেস আয়নাকে তামা খনন করার অনুমতি পেয়েছিল।

তবে, ১৯৯০ সালের দিকে ‘গেরিলা বিদ্রোহ’ ঘটানোর উদ্দেশ্যে চীন থেকে আফগানিস্তানে পালিয়ে যাওয়া উইঘুরদের একটি দলের ব্যাপারে দেশটির অভিযোগ রয়েছে। চীন ‘ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট (ইটিআইএম)’ নামের দলটিকে শিনজিয়াং অঞ্চলের পশ্চিম প্রদেশের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য দায়ী করে। শাহিন এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমরা অঙ্গীকার করেছি, অন্য দেশের নাগরিক বা কোন গোত্র যদি আফগানিস্তানকে চীনসহ অন্য যেকোনো দেশকে আক্রমণ করার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করতে চান, তাহলে আমরা তা প্রতিহত করবো।’ ‘দোহা চুক্তি অনুযায়ী এটি আমাদের অঙ্গীকার। আর আমরা সে চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল’, বলেন শাহিন। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দোহায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালিবানদের স্বাক্ষর করা শান্তি চুক্তিটিকে ‘দোহা চুক্তি’ বলা হয়। এ চুক্তির ফলে মার্কিন সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের পথ তৈরি হয়।

ইটিআইএমের ব্যাপারে আলাদা করে প্রশ্ন করা হলে শাহিন নিশ্চিত করেন, ‘হ্যাঁ, তাদেরকে আমরা প্রবেশ করতে দেব না।’ তিনি আরও জানান, আল-কায়েদা অতীতের বিষয় এবং তাদেরকে এই দেশে আর কখনও কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না। তিনি দাবি করেন আফগানিস্তানে বর্তমানে আল-কায়েদার আর কোনো সদস্য নেই। সূত্র : দ্য প্রিন্ট।



 

Show all comments
  • Mufti Ruhul Alam ১২ জুলাই, ২০২১, ১:৩৫ এএম says : 0
    কোরআনী শাসন প্রতিষ্ঠা যেখানে হবে সেখানে ১০০% শান্তি। আফগানের জনগণ সেটা বুঝতে পারছে বিধায় তালেবানকে তারা সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। আর এতে করে তালেবান একের পর এক জেলা নিয়ন্ত্রণ করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Muhammad Hefajur Rashid ১২ জুলাই, ২০২১, ১:৩৬ এএম says : 0
    · মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে অনেক বছর যাবত দখল করে খেয়েছে মার্কিনীরা।
    Total Reply(0) Reply
  • দৈনিক আসল খবর ১২ জুলাই, ২০২১, ১:৩৬ এএম says : 0
    ভয়ের কোন কারন নেই কারন তালেবানরা যদি প্রকৃত ইসলামী শাসন ব‍্যাবস্থা কায়েম করে তবে আফগানিস্তানে শান্তি ফিরে আসবে সবাই নিরাপদে থাকবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Shaikh Shadi ১২ জুলাই, ২০২১, ১:৩৭ এএম says : 0
    ২০ বছর ধরে সেখানে যে গনহত্যা চালানো হলো শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে তার কী বিচার হবে? যে সকল সাধারণ মানুষকে শান্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলো তাদের কে নিরাপত্তা দিবে?
    Total Reply(0) Reply
  • Belal Hossaini ১২ জুলাই, ২০২১, ১:৩৭ এএম says : 0
    আফগান জনগণের সিদ্ধান্ত তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত। এত রাজনৈতি না করে তাদের রাজনৈতি তাদের করতে দেওয়া এখন সঠিক সময়।
    Total Reply(0) Reply
  • Fazleh Alahi Rabby ১২ জুলাই, ২০২১, ১:৩৭ এএম says : 0
    তালেবানের ভয়ে কুকুরের মত লেজ গুটিয়ে ন্যাটো আ্যামরিকা জোট পালিয়েছে এটা বিশ্ব দেখাছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Masud Khan ১২ জুলাই, ২০২১, ১:৩৭ এএম says : 0
    আল্লাহ যাদের কবুল করেন.সারা বিশ্ব তার শত্রু হলেও কিছুই করতে পারে না।হক প্রকাশিত হয়েছে বাতিল পালাতে বাধ্য।
    Total Reply(0) Reply
  • Dadhack ১২ জুলাই, ২০২১, ১০:১৭ পিএম says : 0
    চীন যেভাবে মুসলিমদেরকে রেপ করছে মিলিয়ন মিলিয়ন মুসলিমদেরকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে অত্যাচার করছে তারা কিভাবে তালেবানদের বন্ধু হতে পারে ওরা হচ্ছে আমাদের বড় শত্রু আল্লাহর ইচ্ছায় একদিন ওদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হবে এবং ওদেরকে ইনশাল্লাহ আমরা হারিয়ে দেবো
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ