Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তালেবানদের দখলে কান্দাহার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

আফগানিস্তানের মূল দুইটি শহর বদখশান এবং কান্দাহারের পাঞ্জওয়াই সহ নতুন করে আরও ১৩ জেলা দখলে নিয়েছে তালেবান যোদ্ধারা। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির বিভিন্ন এলাকা দখলে নিচ্ছে তারা। তালেবানের অভিযানের মুখে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর অনেক সদস্য সীমান্ত পেরিয়ে প্রতিবেশি তাজিকিস্তানে পালিয়েছেন।

রোববার তাজিকিস্তানের স্টেট কমিটি ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি এক বিবৃতিতে জানায়, স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তিনশ’র বেশি আফগানসেনা বদখশান প্রদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর তালেবানরা ঐ এলাকা দখল করে নেয়। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রতিরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে ২২৪ তালেবান যোদ্ধা নিহত হয়েছে। তালেবানরা রাজধানী কাবুল ও ৩৪টি প্রাদেশিক রাজধানী ছাড়াও ৩৭২টি জেলার মধ্যে ১১০টি দখল করেছে। বাদাখাশানের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য মোহিব-উল রহমানের ভাষ্যমতে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাদাখাশান প্রদেশের বেশিরভাগ এলাকা কোনও ধরনের সশস্ত্র লড়াই ছাড়াই দখলে নিয়েছে তালেবানরা। দেশটির সামরিক বাহিনীর দুর্বল মনোবলের কারণে তালেবান এই সাফল্য পেয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

মার্কিন এবং ন্যাটো জোটের সৈন্যরা কাবুলের কাছের আন্তর্জাতিক প্রধান সামরিক ঘাঁটি বাগরাম ছেড়ে যাওয়ার মাত্র দু’দিন পর কান্দাহার প্রদেশের দক্ষিণের পানজওয়াই জেলার পতন ঘটেছে তালেবানের হাতে। বাগরাম ঘাঁটি থেকে গত ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে তালেবান এবং এর মিত্র আল-কায়েদার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আসছিল মার্কিন ও ন্যাটো জোট। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা জানিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করা হলে তালেবান ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করবে।

পাঞ্জওয়াইয়ের গভর্নর হাসতি মোহাম্মদ বলেছেন, ‘তালেবানরা জেলা পুলিশ সদর দফতর এবং গভর্নরের অফিস ভবন দখল করেছে।’ কান্দাহার প্রাদেশিক কাউন্সিলের প্রধান সাবফদ জান খাকরিওয়াল পাঞ্জওয়াইয়ের পতনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে সরকারী বাহিনী ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ শহরটি পরিত্যাগ করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। আফগান কর্মকর্তারা এই দাবি উড়িয়ে দিলেও স্বীকার করেছেন যে, কয়েকটি জেলা থেকে সরকারী সেনা পিছু হটেছে। স্বাধীনভাবে পরিস্থিতি যাচাই করা কঠিন। কাবুলের উত্তরে বাগরাম এয়ার বেস থেকে বিদেশি সেনাদের বেরিয়ে আসা উদ্বেগকে আরও জোরদার করেছে যে, নতুন অঞ্চল দখল করার জন্য বিদ্রোহীরা নতুন উদ্দামে ঝাঁপিয়ে পড়বে। বাগরাম বিমান ঘাঁটির সামরিক ও প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে, বিদেশী বাহিনী এর আগে সেখানে অবস্থান করেছিল ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিমান সহায়তা দিয়েছিল।

আফগান কর্তৃপক্ষ এই ঘাঁটিটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বলেছিল যে, তারা এটি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ব্যবহার করবে। ইতিমধ্যে তারা এর রাডার ব্যবস্থা পুনরায় সক্রিয় করেছিল। তালেবানরা এখন আফগানিস্তানের ৪২১ জেলার প্রায় এক তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে। কান্দাহার প্রদেশটি তালেবানদের জন্মস্থান, যারা ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত শরিয়া আইনের কঠোর সংস্করণ দিয়ে আফগানিস্তানে শাসন চালিয়ে যায়। সূত্র: টিওআই, ট্রিবিউন।



 

Show all comments
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ৫ জুলাই, ২০২১, ৪:৪৬ পিএম says : 0
    সাবাস তালেবান।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ