Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিস্তাসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধিঃ গঙ্গাচড়ায় পানিবন্দি ৫ হাজার পরিবার

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২১, ৬:১৯ পিএম

ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে তিস্তার পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে বানের পানি ঢুকে পড়ায় নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার পরিবার। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদীর উভয় তীরে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে।

রংপুরে গঙ্গাচড়ার কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা চরে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে নির্মিত বাঁধটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া লক্ষীটারী ইউনিয়নের কেল­ারপাড় চরে স্বেচ্ছাশ্রমের উপবাঁধটিও ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙনে কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা চরের ৬/৭ পরিবারের ঘর-বাড়ি ইতিমধ্যে তিস্তায় বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে পড়েছে বেশ কয়েকটি রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ। পানিবন্দি পরিবারগুলো মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ইতিমধ্যে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পানিবন্দি এলাকার মানুষ গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে। লক্ষীটারী ইউনিয়নের পশ্চিম ইচলি, শংকরদহ, বাগেরহাট আশ্রয়ন, পূর্ব ইচলির ১ হাজার, কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা, মটুকপুর, চিলাখাল, খলাইরচরসহ নিম্ন এলাকার ১ হাজার ৫শ, নোহালীর মিনার বাজার, কচুয়াচর, বৈরাতী বাঁধের ধার, চর নোহালী, বাগডহরা চরের ৫শ, মর্নেয়া ইউনিয়নের মর্নেয়াচর, তালপট্টি, আলাল চর, নরসিং চরের ৫শ, গজঘন্টা ইউনিয়নের কালির চর, ছালাপাক, গাউছিয়া বাজার, জয়দেব, মইশাসুর, রামদেব চরে ৫শসহ আলমবিদিতর ও গঙ্গাচড়া ইউনিয়নের নিম্ন এলাকার ৫/৬শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

আজ রোববার সরেজমিনে এসব এলাকায় গেলে বাগেরহাট আশ্রয়নের বাসিন্দা জরিনা, হালিমা, সুলতানা, মাজেদা, রুজিনা, সজিনা জানান, গত ৬/৭ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছি। কোন ত্রাণ সহায়তা পাইনি। কেল­ার পাড়ের মহির উদ্দিন জানান, কষ্ট হলেও পানিবন্দি হয়ে থাকা যায়, কিন্তু বাড়ি ভেঙে গেলে তার মত কষ্ট হয়না। তিনি ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। পশ্চিম ইচলির মতিবার, মালেক, বাবলু, আনোয়ার, জোবেদা বলেন, ৩ দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। উচুস্থানে কোন রকম রান্না এবং আত্বীয়র দেয়া খাবার ১ বেলা করে খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। বিনবিনা চরে মনতাজ, আইয়ুব, মাহাম্মদ, মান্নান জানান, ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আরো বাড়ি ও জমি বিলীন হয়ে যাবে। লক্ষীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল­াহ আল হাদী বলেন, তার ইউনিয়নের ১ হাজারের বেশী পরিবার ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভাঙন অব্যাহত আছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর জন্য দ্রুত ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজন। কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি ফলে ভাঙন দেখা দেয়ায় বিনবিনা চরে ৬/৭টি পরিবারের বাড়ি বিলীন হয়েছে। তিনি ভাঙন রোধসহ পানিবন্দির জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সহায়তা ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের দাবি জানান।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসলীমা বেগম জানিয়েছেন, পানিবন্দি এসব পরিবারের জন্য ইতিমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যানের অনুকুলে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে।



 

Show all comments
  • নাঈম ৬ জুলাই, ২০২১, ২:৫৬ পিএম says : 0
    ত্রাণ দিলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? সেটা মাত্র সাময়িক সুবিধা কিন্তু এলাকাবাসী চিরস্থায়ী সমাধান চায়,যেটি একটি টেকসই বাধ নির্মানের মাধ্যমেই সম্ভব।সরকারি সহযোগিতা না পেলেও এলাকাবাসী স্বেচ্ছা শ্রমের মাধ্যমে একটি বাধ নির্মানের চেষ্টা করেছিল কিন্তু তাতে সফল হতে পারেনি।একটু সরকারি সহযোগিতা পেলে এই দুখি মানুষ গুলোর দুঃখ চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে।তবে প্রতিকূলতার সাথে যুদ্ধ করে বেচে থাকার চেষ্ঠায় এই মানুষ গুলো একদিন সফল হবে ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ