মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তাপদাহ সম্পর্কে সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয়টি প্রশান্ত মহাসাগরের উপর প্রভাব যে, সেটি এত বড় ব্যবধানে রেকর্ড ভঙ্গ করছে। ওরেগনের পোর্টল্যান্ডে থার্মোমিটারগুলো একটি অস্বাভাবিক ৪৬.৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড (১১৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট)-এ পৌঁছেছিল, এ অঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহর যেখানে পূর্ববর্তী রেকর্ডগুলো পুরো ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে (৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পরাস্থ হয়েছিল। এদিকে, মধ্য ইউরোপ এমনকি সাইবেরিয়ায়ও উত্তাপের তরঙ্গ বাড়ছে।
তাপদাহগুলো শিরোনামে আসতে পারে, তবে সেগুলো যতটা পাওয়ার কথা তার চেয়ে মনোযোগ কম পায়। মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে হিটস্ট্রোকের কারণে ৬৫ বছরের বেশি বয়সের প্রায় ৩ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিলেন, বিশেষত ভারতে এবং চীনে ২০০০ সালের পর থেকে ৫৪ শতাংশ বেড়েছে।
ঝড় ও বন্যার বিপরীতে, তাপদাহ ঘটনার আগে-পরে সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত করে না। এটি একটি নীরব ঘাতক। এর শিকাররা প্রায়শই কেবল হতাশায় নিমজ্জিত হয়, কারণ এর মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তির পরিসংখ্যান বেশি। (উদাহরণস্বরূপ, ২০০৩ সালে ইউরোপে হিটওয়েভের ফলে প্রায় ৭ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল, এটি ২০০৮ সালেই স্পষ্ট হয়েছিল)) হার্টের সমস্যার মতো উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতেও উত্তাপের ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সুতরাং এটিকে সরাসরি দায়ী করা হয় না।
এদিকে তীব্র তাপদাহের কারণে গত কয়েকদিন ধরেই সংবাদের শিরোনাম হয়েছে কানাডা। সেখানে প্রচণ্ড তাপদাহে এ পর্যন্ত ৭১৯ জনের মৃত্যুও হয়েছে। পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ দেশটির ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে। তবে শুধু তীব্র তাপদাহই নয়, দেশটিতে রেকর্ড পরিমাণ বজ্রপাতেরও ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ১৫ ঘণ্টায় কানাডায় এই রেকর্ড পরিমাণ বজ্রপাতের ঘটনা ঘটেছে। দেশটির ব্রিটিশ কলম্বিয়া ও অ্যালবার্টা প্রদেশে এই সময়ের মধ্যে ৭ লাখ ১০ হাজার বার বজ্রপাত হয়েছে। বুধবার দুপুর ৩টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত এসব বজ্রপাত হয়।
গত পাঁচ বছরে সেখানে বজ্রপাতের বার্ষিক গড় ছিল ৮ হাজার ৩০০। কর্তৃপক্ষ বলছে, অতিরিক্ত তাপমাত্রায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। চলতি সপ্তাহে দেশটিতে ৪৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বিশেষ করে কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার পরিস্থিতি নাজুক। সেখানকার প্রধান লিসা লাপয়েন্তে শুক্রবার দেশটির বাসিন্দাদের বলেন, ‘অনুগ্রহ করে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশী এবং বিশেষ করে যারা একা থাকেন তাদের খোঁজ নিন’।
খবরে বলা হয়, কানাডার পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র দাবদাহ এবং বজ্রপাত থেকে দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। ১৩০টির বেশি ছোটবড় দাবানলের কারণে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি সপ্তাহের শুরুতে ওই প্রদেশের লাইটন থেকে পালাতে বাধ্য হয়েছে গ্রামের লোকজন।
কানাডার দাবানল নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশে কমপক্ষে শতাধিক দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৭টি সৃষ্টি হয়েছে গত দু’দিনে। এগুলোর বেশির ভাগই বজ্রপাত থেকে সৃষ্টি। দাবানলের আগুন নেভাতে স্থানীয় দমকল কর্মীদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ব্রিটিশ কলম্বিয়ার প্রায় ১ হাজার বাসিন্দা দাবানল থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এখনও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছে। সম্প্রতি ব্রিটিশ কলম্বিয়ার লাইটন গ্রামে তাপমাত্রা ৪৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বোচ্চ। দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এর মধ্যেই শুরু হয়েছে ভয়াবহ দাবানল। শুধু কানাডা নয়, এবার উত্তর আমেরিকাজুড়েই অস্বাভাবিক গরম পড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, এর মধ্যেই তিনি ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই এলাকাগুলোর বিভিন্ন সমস্যা খুঁজে বের করতে একটি বিশেষ টিম গঠন করা হবে। কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হারজিৎ সজ্জন জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় হেলিকপ্টার ও হারকিউলিস টারবোপ্রপ পরিবহন উড়োজাহাজের মাধ্যমে সহায়তা কার্যক্রম চালানো হবে। ভ্যানকুভারের ২৬০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রায় ২৫০ জনের বসবাস। বুধবার বিকেলে সেখানে দাবানল শুরু হওয়ার পর লোকজন বাধ্য হয়েই বাড়ি ছেড়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।