মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তানের মাটি থেকে আল-কায়েদার পরিচালিত ৯/১১ হামলার ২০ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র অবশেষে সৈন্য প্রত্যাহার করে চলে যাচ্ছে। একাধিক সামরিক সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে যে, পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বিদেশের মাটিতে বহু বছরের যুদ্ধ মার্কিন দেশটির মর্যাদা হ্রাস করেছে এবং তার অভ্যন্তরীণ রাজনীনৈতিক বিভেদে অবদান রেখেছে, যা তার বৈশ্বিক আধিপত্যকে আরও দুর্বল করে দিয়েছে। এর মধ্যে, চীনের উত্থান এবং রাশিয়ার বৈরিতায় সৃষ্ট দুর্দান্ত শক্তি প্রতিযোগিতার এক নতুন যুগ এখন সবচেয়ে বেশি উদ্বেগে ফেলেছে ওয়াশিংটনকে। পাশাপাশি, সন্ত্রাসবাদের চেয়ে কোভিড-১৯ মহামারী এপর্যন্ত কয়েক লক্ষাধিক আমেরিকানের মৃত্যু ঘটিয়েছে। তবে আফগান যুদ্ধ আমেরিকান ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ। ৩ হাজার ৫ শ’রও বেশি আমেরিকান ও তাদের মিত্র এই যুদ্ধে নিহত হয়েছে, আরও অনেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকলাঙ্গ হয়েছে এবং কয়েক হাজার আফগান প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য এবং বেসামরিক নাগরিক যারা মারা গিয়েছে। কিন্তু এরপর কি ঘটবে, সেই প্রশ্নের জবাবের জন্য বিশে^র দৃষ্টি যুক্তরাষ্ট্রের ‘দীর্ঘতম যুদ্ধ’টির সমাপ্তি টানা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর নিবদ্ধ থাকবে।
বাইডেন রাজনৈতিক বা কৌশলগত লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন কিনা, এটি একটি প্রশ্ন। তবে বিদেশে যুদ্ধ সমাপ্তির সিদ্ধান্ত প্রগতিশীল এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভোটারদের একজোট করে দিয়েছে। পরের প্রশ্নটি হ’ল যে, লাখ লাখ আফগানদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা আছে কি না, যারা মার্কিন গণতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সাফল্য অর্জন করেছে এবং যারা এখন অন্যান্য সন্ত্রাসবাদের পাশাপাশি, ছোট মেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়া সামন্ততান্ত্রিক তালেবানদের অধীনে নতুন অন্ধকার যুগের মুখোমুখি। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে তালেবানরা সারা দেশে জেলাগুলির নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। আশঙ্কা রয়েছে, যে কোনও সময় আফগান সরকারের পতন ঘটবে, যা আমেরিকার প্রতিপত্তিতে ওপর গুরুতর আঘাত বলে বিবেচিত হতে পারে। আফগানিস্তানের বাইরের ঘাঁটিগুলি থেকে মার্কিন বাহিনী সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়ে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে। তবে, কিছু সামরিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে এই ধরনের পদক্ষেপ কার্যকরী হবে না।
তাই সুদীর্ঘ ২০ বছরের এই যুদ্ধটি ঋদ্ধ ছিল কিনা, সেই প্রশ্নটি হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইং বা ওয়াশিংটন থিংক-ট্যাঙ্কেদের চেয়ে এখন ৯/১১-পরবর্তী যুদ্ধে নিহতদের সংখ্যা রক্ষাকারী আর্লিংটন জাতীয় কবরস্থানের সংখ্যাগুলিতে ঘুরছে। যখন বুশ প্রশাসন ইরাকের দিকে মনোযোগ সরিয়ে নিয়েছিল, সেখানকার যুদ্ধ নিস্তেজ হয়ে যায় এবং তালেবানরা পুনরায় সংঘবদ্ধ হয়। এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আক্রমণ ও আফগান বাহিনী গঠনের নতুন পরিকল্পনার উদ্ভ ঘটে। তবে, এতে যুক্তরাষ্ট্র বড় সাফল্য লাভ করেনি। ২০১২ সালে ওয়াশিংটন পোস্ট কর্তৃক প্রকাশিত গোপনীয় নথিতে বলা হয়েছে যে, উর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা সাধারণ আমেরিকানদের সাথে যুদ্ধের বিষয়ে আশাবাদগুলি পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন, যা মিথ্যা বলে তারা জানতেন।
গবেষণাপত্রটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মার্কিন কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, তাদের যুদ্ধ-পরিচালনা কৌশল মারাত্মকভাবে ত্রুটিযুক্ত এবং সেকারণে ওয়াশিংটন আফগানিস্তানকে একটি আধুনিক দেশ হিসাবে পুনর্র্নিমাণের জন্য প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে।’ সুদীর্ঘ বছর ধরে আফগানিস্তান এমন একটি যুদ্ধ ছিল, যা থেকে যুক্তরাষ্ট্র অর্জন করতে পারেনি এবং এটিকে বের হয়ে আসতেও পারেনি। তবে বাইডেন ট্রাম্পের বিদায়ের আগে ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদি কাবুল সরকারের পতন হয় এবং রক্তপাত ঘটে, তা বাইডেনের নজরদারিতেই হবে। মার্কিন কূটনীতিকরা সন্ত্রাসী হামলায় মারা গেলে তিনি মানবিক ও রাজনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবেন। যুক্তরাষ্ট্র-পরবর্তী আফগানিস্তান অতি বিপদজ্জনক। দেশটির শীর্ষ মার্কিন কমান্ডার জেনারেল অস্টিন মিলার মঙ্গলবার নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন যে, দেশটিতে গৃহযুদ্ধ একটি বাস্তব সম্ভাবনা এবং এটি বিশ্বের জন্য উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত। সূত্র : সিএএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।