বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়েছে লিওনেল মেসির। পেশাদার এবং বার্সা ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বৃহস্পতিবার ফ্রি এজেন্ট হয়ে যান আর্জেন্টাইন জাদুকর। তার প্রায় ৫০ কোটি ইউরো মূল্যের চুক্তির মেয়াদ ফুরায় ১ জুলাই মধ্যরাত শুরুর সঙ্গে। এখন তিনি ‘ফ্রি এজেন্ট’ হিসেবে যেকোনো ক্লাবের যোগ দেওয়া নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারেন। কিন্তু স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম আগেই জানিয়েছে, চুক্তির মেয়াদ ফুরানোয় মেসি আনুষ্ঠানিকভাবে বার্সার খেলোয়াড় না হলেও কাতালান ক্লাবটিতেই থাকতে চান। বার্সার পক্ষ থেকেও এমন কথা বলা হয়েছে কয়েকবার এবং ক্লাবটিও তাঁকে ধরে রাখতে চায়। তাহলে চুক্তি নবায়নে সমস্যাটা কোথায়? বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা জানিয়েছেন, লা লিগার ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে নীতির (আর্থিক সংগতি নীতি) কারণে মেসির সঙ্গে বার্সার নতুন চুক্তি ঝুলে রয়েছে, অর্থাৎ দেরি হচ্ছে।

কিছুদিন আগে লা লিগা সভাপতি হাভিয়ের তেবাস বার্সেলোনাকে সতর্ক করে বলেছিলেন, আগামী মৌসুম সামনে রেখে মেসির নতুন চুক্তির আগে কাতালান ক্লাবটিকে অবশ্যই ব্যয় সংকোচন করতে হবে। সেই হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে দলের প্রাণভোমরাকে ক্যাম্প ন্যুতে রাখতে এরই মধ্যে ব্যয় সংকোচক করা শুরু করেছে ক্লাবটি। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে বার্ষিক বেতনে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করত বার্সা (৬৭১ মিলিয়ন ইউরো)। কিন্তু গত মার্চের দিকে তা প্রায় অর্ধেকে (৩৪৭ মিলিয়ন ইউরো) নেমে এসেছে।
লুইস সুয়ারেজ, আর্তুরো ভিদাল, ইভান রাকিটিচকে ছেড়ে দিয়ে বেতনে ব্যয় সংকোচন শুরু করে বার্সা। কিন্তু মেসির সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে আরও বেশি ব্যয় সংকোচনের দরকার ক্লাবটির। এর মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটি থেকে আরেক আর্জেন্টাইন ও মেসির বন্ধু সার্জিও আগুয়েরোসহ আরও চার নতুন খেলোয়াড় দলে টেনেছে ক্লাবটি। যদিও নেতো, স্যামুয়েল উমতিতি, ফিলিপ কুতিনহো ও মিরালাম পিয়ানিচের মতো বেশ বড় অঙ্কের বেতন পাওয়া খেলোয়াড়দের ছাড়ার বিষয়ে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বার্সা। ইএসপিএনকে সূত্র জানিয়েছে, ইউরো এবং কোপা আমেরিকা শেষে এ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে কাতালান ক্লাবটি। ব্যয় সংকোচনের আরও কিছু পথ বের করা নিয়েও তারা ভাবছে।
মেসির সর্বশেষ চার বছর মেয়াদি চুক্তির মধ্যে ছিল বেতন, বোনাস ও ইমেজ স্বত্ব। এর মূল্য ছিল ৫০ কোটি ইউরো- যা এখন নতুন চুক্তিতে তাঁকে দিতে পারবে না বার্সা। মেসি ক্লাবটিতে থাকতে গিয়ে তার আয় যেন খুব বেশি না কমে- এই দিকটি ভেবে দীর্ঘ মেয়াদে তাঁকে ক্ষতিপ‚রণ দিয়ে যাওয়ার কথাও ভাবছে ক্লাবটি। এদিকে ম্যানচেস্টার সিটি ও পিএসজির মতো ক্লাব বার্সার সঙ্গে মেসির পরিস্থিতি ছয় মাস ধরে পর্যবেক্ষণ করছে। সংবাদমাধ্যমের খবর তারা মেসিকে কিনতে আগ্রহী, যদিও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছুই শোনা যায়নি। তাদের সেই আশায় কিছুটা হলেও পানি ঢালতে পারে লাপোর্তার এক কথায়। গতপরশু স্পেনের রেডিও ওন্দা চেরোকে বার্সা প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘আমরা তাকে (মেসি) ধরে রাখতে চাই, লিও নিজেও থাকতে চায়। সবকিছু ঠিক আছে। আমাদের ফিন্যান্সিয়াল ফেয়ার প্লে-র বিষয়টি সুরাহা করতে হবে। দুই পক্ষের জন্যই সেরা সমাধানটা আমরা খুঁজে বের করব।’