মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
জন্মের শততম বর্ষে পা দিল চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি)। সামরিক বিমানের ফ্লাই-পাস্ট, তোপধ্বনি ও দেশাত্মবোধক গানের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন শুরু হয়। বিশেষ এ দিনটি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানী বেইজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কয়ারে ৭০ হাজার লোকের উপস্থিতিতে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
তিয়েনআনমেন স্কয়ারে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বললেন, বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশ হিসেবে গড়ে উঠেছে চীন। যারা চীনের পিছনে লাগার চেষ্টা করবে, তাদের মাথা ভেঙে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে তাইওয়ান প্রসঙ্গেও স্পষ্ট অভিমত জানিয়েছেন শি জিনপিং। বলেছেন, তাইওয়ান চীনের অংশ। মূল চীন থেকে তাকে যদি কেউ আলাদা করতে চায়, তাহলে শাস্তি পেতে হবে।
শতবর্ষ উপলক্ষে বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে গোটা চীন জুড়ে। তিয়েনআনমেন স্কয়ারে বিশাল সংখ্যায় মানুষ জড়ো হয়েছে। হেলিকপ্টার এবং প্লেন থেকে স্যালুট জানানো হয়েছে। জায়েন্ট স্ক্রিন টাঙানো হয়েছে গোটা চত্বরে। সেখানে লাইভ দেখানো হয়েছে প্রেসিডেন্টের বক্তৃতা। এছাড়াও ব্যান্ড এবং দেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান গেয়েছেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে দলবদ্ধভাবে যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন, ক্যানন স্যালুট ও দেশাত্মবোধক গান বাজানো হয়।
শি জিনপিং বলেছেন, এক সময় চীনের মানুষদের হত্যা করা হতো। তাদের নিয়ে হাসাহাসি করা হতো। সে যুগ চলে গেছে। চীনে কমিউনিস্ট শাসন গড়ে উঠেছে। ১৪০ কোটির দেশের বিরুদ্ধে কেউ সে কাজ করার চেষ্টা করলে তার মাথা ভেঙে দেওয়া হবে। গ্রেট ওয়াল অফ স্টিলে মাথা থেতলে দেওয়া হবে। প্রেসিডেন্টের কথা শুনে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন সাধারণ মানুষ। হাততালি দিয়ে তারা স্বাগত জানিয়েছেন শি জিনপিংয়ের কথা।
প্রেসিডেন্ট বলেছেন, চীনের মানুষ কেবল পুরনো মূল্যবোধ ভেঙে, নতুন মূল্যবোধ গড়ে তুলেছে। শক্তিশালী চীন গড়ে তুলেছে। যেখানে দারিদ্র্য নেই। অনটন নেই। দেশকে আরো উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শি জিনপিং বলেছেন, দেশের সামরিক শক্তি আরো উন্নত করতে হবে। সমস্ত সেনাবাহিনীকে আরো আধুনিক করে তোলা হবে।
মাও জেদংয়ের পর চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা শি বলেন, “কেবল সমাজতন্ত্রই চীনকে রক্ষা করতে পারবে।” চীনের জনগণ কখনোই কোনো বিদেশি বাহিনীকে তাদের অপমান, দমন ও পরাধীন করতে দেবে না বলে মন্তব্য করেন শি।
“যে কেউ এরকম কিছু করার সাহস দেখালে চীনের ১৪০ কোটিরও বেশি লোকের স্টিলের মহাদেয়ালে তাদের মাথা রক্তাক্ত হয়ে যাবে,” বলেন তিনি; উপস্থিত জনতা ব্যাপক করতালির মাধ্যমে তার এ বক্তব্যকে স্বাগত জানায়। ‘একটি পরিমিত সমৃদ্ধ সমাজ’ গড়ে তোলার মাধ্যমে চীন তার শতবর্ষী লক্ষ্য অর্জন করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাব থেকে চীনকে দ্রুত বের করে নিয়ে আসা ও বিশ্ব মঞ্চে আরও দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার জন্য শি ও কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা আরও উচ্চাসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
কিন্তু হংকংয়ে দমনপীড়ন এবং শিনজিয়াংয়ে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর বিষয়ে নেওয়া পদক্ষেপের কারণে বহির্বিশ্বে বেইজিং সমালোচনার মুখে পড়েছে।
তিয়ানআনমেন স্কয়ারের দক্ষিণপাশে বেইজিংয়ের ‘নিষিদ্ধ শহরের’ দুর্গপ্রকারে বসা দেশটির নেতারা যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারের উড্ডয়ন ও শতবর্ষ উদযাপনে তাদের তৈরি করা ‘হান্ড্রেড’ উপভোগ করেন।
শতবর্ষ আগে ১৯২১ সালের ১ জুলাই চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দীর্ঘ এক গৃহযুদ্ধের পর ১৯৪৯ সালে তারা চীনের ক্ষমতায় আসে। তারপর থেকে ৭২ বছর ধরে দলটি চীন শাসন করে আসছে।
প্রথমে কৃষক ও শ্রমিকদের নিয়ে গঠিত হলেও পরবর্তীতে চীনের ক্ষমতাসীন এ দলটি ‘চীনা ধরনের সমাজতন্ত্র’ শ্লোগানের আলোকে বাজার অর্থনীতি ও এর উদ্যোক্তা সংস্কৃতিকে বরণ করে নেয়, কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা ভøাদিমির ইলিচ লেনিনের প্রবর্তিত পার্টির কর্তৃত্ববাদী শাসনের মডেল ধরে রাখে।
২০২০ সালে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টিতে ২৪ লাখ ৩০ হাজার নতুন সদস্য যুক্ত হয়। ২০১৩ সালে শি প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে এ বছরই সবচেয়ে বেশি লোক দলটিতে যোগ দেয়। এখন দলটির সদস্য সংখ্যা নয় কোটি ৫১ লাখ ৫০ হাজার বলে বুধবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে।
১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছিল চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের পর প্রায় ৭২ বছর আগে ক্ষমতালাভ করে দলটি। সেই থেকে একনাগাড়ে চীন শাসন করছেন কমিউনিস্ট নেতারা। চীন হয়ে উঠেছে বিশ্বের অন্যতম একদলীয় শাসনের দেশ। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।