মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বব্যাপী চীনের প্রভাব এবং উত্থান ঠেকাতে গেল মার্চে যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া, ভারত এবং জাপারকে সাথে নিয়ে ২০০৭ সালে কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়ালগ-কোয়াড গঠন করে। গেল ১২ মার্চ সংগঠনটির প্রথম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। চীন তাৎক্ষণিকভাবে এটিকে শান্তির প্রতি প্রকৃত হুমকি অভিহিত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এমনকি বাংলাদেশসহ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলিকে এটির সাথে সহযোগিতা না করার জন্য সতর্ক করে দেয় এবং এসোসিয়েশন অফ সাউথইস্ট এশিয়ান নেশন (আসিয়ান) কে পুনর্বার সতর্ক বার্তাটি পাঠায়।
কোয়াডের সদস্যদের মধ্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্রই চীনের বিরুদ্ধে পূর্ব এবং দক্ষিণ চীন সাগরে একটি বিশাল আকারের শক্তিশালী এবং স্থায়ী সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখতে সক্ষম। চীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেশটি জিততে পারে, বা কমপক্ষে অনুকূল শর্তে যুদ্ধ শেষ করতে পারে। তবে বিগত কয়েক দশকে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি প্রয়োজনীয় পেশী অর্জন করেছে, যুদ্ধের ক্ষেত্রে যার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ভারী মূল্য পরিশোধ করতে হবে; এবং এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
এবার এখানে প্রাসঙ্গিক প্রশ্নটি হ’ল, কোয়াডের বাকীরা চীনের বিরুদ্ধে কতটুকু সক্ষম? দুর্ভাগ্যক্রমে, ভারতের বিপক্ষে চীনের শক্তিমত্তার প্রদর্শনী এবং অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রের পাশাপাশি পুনরায় সৈন্য প্রেরণ, লক্ষ্য অর্জন, এবং সাইবারওয়ারফেয়ার ব্যবস্থায় চীনের সুস্পষ্ট সুবিধা রয়েছে এবং চীনের সামগ্রিক প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্ব এবং সামরিক বাজট ভারতের চেয়ে প্রায় চারগুণ বেশি হওয়ার কারনে চীন তার আধিপত্য বজায় রাখবে এবং এমনকি আরও বাড়িয়ে তুলবে।
এছাড়া, ভারতীয় বাহিনীকে একদিকে দক্ষিণ চীন সাগরে পৌঁছানোর জন্য ২ হাজার ৩শ’ ৫০ মাইলেরও বেশি পথ অতিক্রম করতে হবে এবং অন্যদিকে চীনা সৈন্যরা উত্তর ভারতের বিশাল পর্বত সীমান্তের উপরে অবস্থান করবে। সুতরাং চীনকে পরাজিত করতে, ভারত কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাজে আসতে পারে তা, কল্পনা করা বেশ শক্ত।
ঐতিহাসিক এবং ভৌগলিক কারণে সম্ভবত পূর্ব এশিয়ার কোনও দেশ (তাইওয়ানকে বাদ দিয়ে) জাপানের চেয়ে চীনের পুনরুত্থান সম্পর্কে বেশি উদ্বেগে নেই। সামরিক হিসাবে, জাপানের প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত এবং এর পরিশীলিত প্রতিরক্ষা শিল্পগুলি বিশ্বমানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অস্ত্র তৈরি করে।
তবুও যুদ্ধে সাফল্য অর্জনের জন্য চীনেরও অনেক বেশি অস্ত্র রয়েছে। জাপান যদি পূর্ব এশিয়ায় চীন বিরোধী সামরিক জোটে যোগ দেয়, দেশটি অহরহ চাইনিজ ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলার ঝুঁকিতে পড়বে। তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, ওয়াশিংটনের ঐক্যফ্রন্টের আহ্বান সত্ত্বেও, টোকিও তাইওয়ানকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার করেছে।
কোয়াডের চতুর্থ সদস্য অস্ট্রেলিয়া প্রকৃতই এই জোটটিকে সাহায্য করতে পারবে না। দেশটির নৌবাহিনীকে দক্ষিণ চীন সাগরে পৌঁছানোর জন্য ৩ হাজার মাইলেরও বেশি এবং তাইওয়ানে পৌঁছানোর জন্য আরও ৫শ’ মাইল যাত্রা করতে হবে। সমুদ্রে অস্ট্রেলীয় বাহিনীর সরবরাহ এবং যোগাযোগের ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র, সাবমেরিন এবং বিমার হামলার পাশাপাশি, চীনা অভিযানের বিরুদ্ধে তাদের হিমশিম খেতে হবে।
অস্ট্রেলিয়ার রফতানির ৩৯ শতাংশ চীনে যায়। তারা ৫জি প্রকল্পে চীনা টেলিযোগাযোগ জায়ান্ট হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করেছে, হংকং এবং শিনজিয়াংয়ে বেইজিংয়ের আচরণের সমালোচনা করেছে এবং কোভিড-১৯ এর উৎস তদন্তের আহ্বান জানানোর পর ইতোমধ্যে পাল্টা আঘাতের মুখোমুখি হয়েছে।
যদিও অস্ট্রেলিয়ানরা ক্রমবর্ধমানভাবে চীনকে অবিশ্বাস করে এবং হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে, তবে সাম্প্রতিক লাউয়ি ইনস্টিটিউটের এক সমীক্ষা অনুসারে, ৫৭ শতাংশ অস্ট্রেলিয়ানই চায় যে, তাদের দেশটি চীন-মার্কিন বিরোধ থেকে দূরে থাকুক। বিকল্প পথ হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্রের কোয়াড অংশীদাররা বেইজিংয়ের উপর অর্থনৈতিক অবরোধ ও চাপ জোরদার করতে সহায়তা করতে পারে, তবে চীনা বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উপর নির্ভরতার কারণে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে সামরিক দুর্বলতার কারণে তারা বিষয়টিকে নাজুকভাবে দেখলে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই।
পরিশেষে, কোয়াড হয়তো রয়ে যাবে। তাদের শীর্ষ সম্মেলন, বিবৃতি প্রদান এবং নৌ মহড়া চলতেই থাকবে। তবে যারা চীনের বিরুদ্ধে ওয়াশিংটনের নব্য-নিয়ন্ত্রণ কৌশলটির চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে চায়, তারা আদতে নিজেরাই নিজেদের বিভ্রান্ত করছে। সূত্র: ফরেন পলিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।