Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলো দূর করতে হবে

| প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০২১, ১১:৪৬ পিএম

নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, সৈয়দ নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ও শেরে বাংলা এ. কে. এম. ফজলুল হকের মতো পূর্ববাংলার কয়েকজনের ধারাবাহিক সংগ্রামের ফসল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২০ সালে ভারতীয় আইনসভায় পাশকৃত ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট (অ্যাক্ট নং- ১৩) ১৯২০’ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি। যার বাস্তবায়ন হয়েছিল ১৯২১ সালের ১ জুলাই। প্রতিষ্ঠার পর স্বল্প পরিসরে কার্যক্রম শুরু হলেও, ধীরে ধীরে বিভিন্ন বিভাগ, অনুষদ, ইন্সটিটিউট ও একাডেমিক ভবনসহ সার্বিকভাবে এর কার্যক্রমের পরিধি বৃদ্ধি পেয়ে এ পর্যন্ত এসেছে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ এখান থেকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। যেগুলি থেকে শিক্ষার্থীরাসহ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সর্বস্তরের জনসাধারণ উপকৃত হচ্ছে। এখানকার ছাত্র নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস, পদার্থবিজ্ঞানী এ এফ এম ইউসুফ হায়দার এবং বুদ্ধদেব বসুর মতো হাজারো শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানীগণ বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন বা এখনো অনেকেই করে যাচ্ছেন। মূলত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়াটা এই অঞ্চলের মানুষের কাছে যেন অধরা এক স্বপ্নের বাস্তবায়ন। কারণ, ব্রিটিশ আমলের পাকিস্তান আন্দোলন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৪ এর আইয়ূব ও মোনেম বিরোধী আন্দোলন, ৬৬ এর ৬ দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর নির্বাচন, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনসহ সাধারণ মানুষের স্বার্থ সম্বলিত সকল ঘটনাবলী ও বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতির সাথে রয়েছে এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের গভীর সম্পর্ক। এভাবে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বাংলাদেশের সকল ক্রান্তিলগ্নে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছায়ার মত দেশের পাশে দাঁড়িয়ে, সকল অন্যায় ও অসঙ্গতি মোকাবেলার চেষ্টা করেছে এবং দেশ ও জাতির উন্নয়ন আর অধিকারের কথা বলেছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ পার করলেও বেশকিছু সমস্যায় জর্জরিত এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ‘বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ এরকম শিরোনাম আমাদের প্রায় প্রায়ই দেখতে হয়, যা সত্যি উদ্বেগজনক। যদি আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কিছু দিকে লক্ষ্য করি তাহলে, আবাসন সংকট, সান্ধ্যকালীন বাণিজ্যক কোর্স, গবেষণা খাতের বাজেট স্বল্পতা, ক্যান্টিনসমূহে খাবারের নিম্ন মান এবং হলগুলোতে অছাত্রদের সরব উপস্থিতিসহ বহু সমস্যাই খুঁজে পাওয়া যাবে। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সকল সমস্যা নিরূপণ করে তা সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি, সার্বিক দিক থেকেই ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ড’ নামের যথার্থতা যেন ঠিক থাকে, সেদিকেও নজর দিতে হবে।

মো. জাফর আলী
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


আরও
আরও পড়ুন