Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তালেবানদের দ্রুত সাফল্যে বিস্মিত পাকিস্তান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২১, ৬:০৫ পিএম

মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী প্রত্যাহার করা শুরুর পর আফগানিস্তানের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে, সেখানে তালেবানদের দ্রুত সাফল্য পাবে বলে পাকিস্তান মনে করছে না।

লং ওয়ার জার্নাল সূত্রে জানা গেছে, ১ মে থেকে মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করার পরে, তালেবানরা দেশটির ৪০৭টি জেলার মধ্যে ৬৯টি দখল করে নিয়েছে। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকাও রয়েছে, যাকে তালেবান বিদ্রোহীদের সীমানা এবং সরকারের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে দেখা হত। তালেবানরা এখন ১৪২টি জেলা দখল করেছে এবং আরও ১৭০টির নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে। চলতি সপ্তাহেই, তারা তাজিকিস্তানের সাথে উত্তরের প্রধান সীমান্ত প্রবেশদ্বার শির খান বান্দার দখল করেছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাকিস্তানের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এটি নজিরবিহীন। আমাদের মূল্যায়ণে আমরা কখনই ভাবিনি যে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার শুরুর পরেই তালেবানরা এত কম সময়ে এত বেশি সফলতা অর্জন করবে।’ তিনি বলেন, ‘তারা (তালেবান) তাজিকিস্তান সীমান্ত অবধি তাদের প্রভাব বিস্তার করেছে।’ পাকিস্তানের জন্য উদ্বেগের বিষয় হ’ল তালেবান হামলার মুখে আফগান সুরক্ষা বাহিনী কোন প্রতিরোধই করে উঠতে পারেনি। পারলেও তা ছিল খুবই সামান্য। আফগান ন্যাশনাল আর্মিতে সেনার সংখ্যা ৩ লাখ। বিপরীতে তালেবানদের মাত্র ১০ হাজার সশস্ত্র পদাতিক সেনা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা যোগ করেছেন, ‘মাঠ থেকে যে তথ্য আমরা পাচ্ছি তা হ’ল বাইকে চড়ে থাকা তালেবানরা এপিসি [আর্মার্ড পার্সোনাল ক্যারিয়ারস] এর নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। এটি অবিশ্বাস্য।’ তালেবানরা দাবি করেছে যে, আফগান সুরক্ষা বাহিনী আত্মসমর্পণ করে বা পালিয়ে যাওয়ার পরে অনেক জেলায় তারা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল।

সম্প্রতি ওয়াশিংটনে অবস্থানরত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি জোর দাবি করেন যে, আফগান সুরক্ষা বাহিনী তালেবানদের কাছ থেকে ছয়টি জেলার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তবে গনিকে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে এবং বাইরের অনেকেই শান্তির প্রচেষ্টাতে বাধা হিসাবে দেখছেন। এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কারণ হ’ল তিনি শান্তি আলোচনায় আগ্রহী নন বা আফগান তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে রাজি নন। তিনি যদি ভাবেন যে অন্য কেউ তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করবে তবে তিনি অবশ্যই ভুল ভাবছেন।’

কাবুলে এক পশ্চিমা কূটনীতিক আল-জাজিরাকে বলেছিলেন যে, ‘প্রেসিডেন্ট গনি আফগান সরকারের একাকী ব্যক্তিত্ব। তার মতে, গণি কেবল তার চিফ অফ স্টাফ, তার জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা এবং সম্ভবত তার স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে চলেন। ওয়াশিংটনে তার সফর সম্ভবত তাকে কিছুটা উৎসাহ দিয়েছে, তবে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই বার্তাটি পরিষ্কার ছিল যে, নিজেদের ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত আফগানদের নিজেদেরকেই নিতে হবে।

আরেক পাকিস্তানি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আফগানদের একটি সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তারা যদি নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করে সমাধান করতে না পারে, তবে কোন কিছুইতেই কাজ হবে না।’ আফগানিস্তানের পরিস্থিতি ভারসাম্যহীন অবস্থায় থাকায়, পাকিস্তান রাজনৈতিক সমাধানের জন্য তার পক্ষ থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসলামাবাদ কূটনৈতিকভাবে আফগান নেতাদের কাছে পৌঁছেছে, রাজনৈতিক সমাধানের জন্য তাদের উৎসাহিত করছে।

তুরস্ক সম্মেলনে ব্যর্থতার পরে দোহা বা ইসলামাবাদে আফগান সরকার ও তালেবানদের আলোচনার টেবিলে আনার চেষ্টা চলছে। তবে যুদ্ধের ময়দানে তালেবানদের দ্রুত সাফল্যের কারণে পর্যবেক্ষকরা অদূর ভবিষ্যতে কোনও অগ্রগতির আশা করছেন না। সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।



 

Show all comments
  • Dadhack ২৮ জুন, ২০২১, ৬:৩৩ পিএম says : 0
    আমাদের জীবনের চলার পথ- তা যতই বিচিত্র হোক, সকল কাজ-কর্ম; তা যতই বিক্ষিপ্ত হোক, সবকিছুতেই আছে ইসলামের সঠিক নির্দেশনা। আমাদের ব্যক্তি-জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন, সবক্ষেত্রেই আছে ইসলামের সুমহান নীতি ও আদর্শ, যে আদর্শের অনুসরণে জীবনের সকল ব্যস্ততা, তার সকল বৈচিত্র্য সত্তে¡ও, ভিতরে-বাহিরে এক কল্যাণ-আদর্শের ছাঁচে-ঢালা হয়ে যায়। জীবনব্যাপী নানাবিধ কর্ম-তৎপরতার খন্ড খন্ড অংশগুলো একত্র হয়ে অপরূপ লাভ করে। জীবনের গতি হয় একমুখী। জ্বী, মহান আল্লাহমুখী। জীবন ও কর্মের এই একমুখিতা, অখন্ডতা মানুষকে দান করে এক অনির্বচনীয় প্রশান্তি। বিক্ষিপ্ততা, বিচ্ছিন্নতা ও লক্ষ্যহীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে, ছোট-বড়, স্বকল্পিত, মানব-রচিত অসংখ্য প্রভুর দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ লাভ করে এক বেহেশতি অনুভূতি, যার তুলনা এই মাটির পৃথিবীর আর কোনো কিছুর সাথেই হতে পারে না। মানুষের মুক্ত-স্বাধীন, পরিতৃপ্ত হৃদয় থেকে তখন উৎসারিত হয়- আলহামদু লিল্লাহ; সকল প্রশংসা আল্লাহর। এই পবিত্র আদর্শ মহান রাব্বুল আলামীনের অতি বড় দান। তাঁর রবুবিয়্যাতের সুমহান প্রকাশ। মানুষের জীবন-ধারনের জন্য যিনি চারপাশের প্রকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য উপাদান তিনিই মানুষের মুক্তি ও কল্যাণের জন্য দান করেছেন সুমহান আদর্শ- দ্বীন ইসলাম। এই মহান দ্বীন যে মহামানবের সূত্রে আমরা লাভ করেছি, তিনি আমাদের প্রিয়নবী (সা.)। তাঁর ওপর কোরবান আমাদের জান-মাল সবকিছু। কোরবান আমাদের সকল স্বজন-প্রিয়জন-প্রিয় বস্তু। তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সমগ্র মানবতার মুক্তির দূত। এই পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত তাঁর আনীত আদর্শই অনুসরণীয়-অনুকরণীয়। তাঁরই ওপর নাযিল হয়েছে সর্বশেষ আসমানী কিতাব আলকুরআন। আর তাঁর পবিত্র জীবন ও কর্ম হচ্ছে আল কোরআনের প্রায়োগিক ব্যাখ্যা। তাঁর পবিত্র সীরাত কিয়ামত পর্যন্ত সকল আল্লাহমুখী বান্দার চোখের জ্যোতি, আত্মার দ্যুতি, হৃদয়ের আলো, জীবন ও কর্মের আলোকবর্তিকা। মানবজাতির জন্য তিনি মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নিআমত। তাঁর ওপর ঈমান আনা ছাড়া কেউ আল্লাহর কাছে মুমিন গণ্য হয় না। তাঁর সুন্নাহর অনুসরণ ছাড়া কোনো ইবাদত আল্লাহর ইবাদত হয় না। তাঁর ইত্তিবা ও অনুসরণ ছাড়া কোনো ভালো কাজ নেক আমল হয় না। তাঁর জীবনাদর্শের অনুসরণ ছাড়া কোনো জীবন আদর্শ জীবন হয় না। তাঁকে ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ। তাঁর আনুগত্য আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উপায়। তাঁর পবিত্র জীবনের অনুসরণ দুনিয়া-আখিরাতে সফলতার চাবিকাঠি। যে আদর্শের অনুসরণে জীবন আল্লাহমুখী হয়, মানুষ আল্লাহওয়ালা হয়, জীবনের সকল কাজ-কর্ম আল্লাহ মুখিতার আলোকিত সূত্রে সুবিন্যস্ত-আলোকিত হয়ে যায় তিনি সেই আদর্শের শ্রেষ্ঠ নমুনা
    Total Reply(0) Reply
  • Dadhack ২৮ জুন, ২০২১, ৬:৩৯ পিএম says : 0
    আমাদের জীবনের চলার পথ- তা যতই বিচিত্র হোক, সকল কাজ-কর্ম; তা যতই বিক্ষিপ্ত হোক, সবকিছুতেই আছে ইসলামের সঠিক নির্দেশনা। আমাদের ব্যক্তি-জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন, সবক্ষেত্রেই আছে ইসলামের সুমহান নীতি ও আদর্শ, যে আদর্শের অনুসরণে জীবনের সকল ব্যস্ততা, তার সকল বৈচিত্র্য সত্তে¡ও, ভিতরে-বাহিরে এক কল্যাণ-আদর্শের ছাঁচে-ঢালা হয়ে যায়। জীবনব্যাপী নানাবিধ কর্ম-তৎপরতার খন্ড খন্ড অংশগুলো একত্র হয়ে অপরূপ লাভ করে। জীবনের গতি হয় একমুখী। জ্বী, মহান আল্লাহমুখী। জীবন ও কর্মের এই একমুখিতা, অখন্ডতা মানুষকে দান করে এক অনির্বচনীয় প্রশান্তি। বিক্ষিপ্ততা, বিচ্ছিন্নতা ও লক্ষ্যহীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে, ছোট-বড়, স্বকল্পিত, মানব-রচিত অসংখ্য প্রভুর দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে মানুষ লাভ করে এক বেহেশতি অনুভূতি, যার তুলনা এই মাটির পৃথিবীর আর কোনো কিছুর সাথেই হতে পারে না। মানুষের মুক্ত-স্বাধীন, পরিতৃপ্ত হৃদয় থেকে তখন উৎসারিত হয়- আলহামদু লিল্লাহ; সকল প্রশংসা আল্লাহর। এই পবিত্র আদর্শ মহান রাব্বুল আলামীনের অতি বড় দান। তাঁর রবুবিয়্যাতের সুমহান প্রকাশ। মানুষের জীবন-ধারনের জন্য যিনি চারপাশের প্রকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য উপাদান তিনিই মানুষের মুক্তি ও কল্যাণের জন্য দান করেছেন সুমহান আদর্শ- দ্বীন ইসলাম। এই মহান দ্বীন যে মহামানবের সূত্রে আমরা লাভ করেছি, তিনি আমাদের প্রিয়নবী (সা.)। তাঁর ওপর কোরবান আমাদের জান-মাল সবকিছু। কোরবান আমাদের সকল স্বজন-প্রিয়জন-প্রিয় বস্তু। তিনি আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। সমগ্র মানবতার মুক্তির দূত। এই পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত তাঁর আনীত আদর্শই অনুসরণীয়-অনুকরণীয়। তাঁরই ওপর নাযিল হয়েছে সর্বশেষ আসমানী কিতাব আলকুরআন। আর তাঁর পবিত্র জীবন ও কর্ম হচ্ছে আল কোরআনের প্রায়োগিক ব্যাখ্যা। তাঁর পবিত্র সীরাত কিয়ামত পর্যন্ত সকল আল্লাহমুখী বান্দার চোখের জ্যোতি, আত্মার দ্যুতি, হৃদয়ের আলো, জীবন ও কর্মের আলোকবর্তিকা। মানবজাতির জন্য তিনি মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নিআমত। তাঁর ওপর ঈমান আনা ছাড়া কেউ আল্লাহর কাছে মুমিন গণ্য হয় না। তাঁর সুন্নাহর অনুসরণ ছাড়া কোনো ইবাদত আল্লাহর ইবাদত হয় না। তাঁর ইত্তিবা ও অনুসরণ ছাড়া কোনো ভালো কাজ নেক আমল হয় না। তাঁর জীবনাদর্শের অনুসরণ ছাড়া কোনো জীবন আদর্শ জীবন হয় না। তাঁকে ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ। তাঁর আনুগত্য আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উপায়। তাঁর পবিত্র জীবনের অনুসরণ দুনিয়া-আখিরাতে সফলতার চাবিকাঠি। যে আদর্শের অনুসরণে জীবন আল্লাহমুখী হয়, মানুষ আল্লাহওয়ালা হয়, জীবনের সকল কাজ-কর্ম আল্লাহ মুখিতার আলোকিত সূত্রে সুবিন্যস্ত-আলোকিত হয়ে যায় তিনি সেই আদর্শের শ্রেষ্ঠ নমুনা
    Total Reply(0) Reply
  • Md Sadad ২৮ জুন, ২০২১, ৮:৪০ পিএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ। তালেবান জিন্দাবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shakawath ২৮ জুন, ২০২১, ৮:৪০ পিএম says : 0
    Monta khusite vore jasse
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ২৮ জুন, ২০২১, ৯:৫৩ পিএম says : 0
    আলহামদুলিললাহ আলহামদুলিললাহ আলহামদুলিললাহ। আমি মনে করি নিঃশর্ত সরকারের সরে যাওয়া উচিত,হতাহত করে সরকারের কি লাভ,মধ্যখানে মুসলমান মুসলমান হত্যা করা ছাড়া আর কিছুই না,কিন্তু সরকারের জানা থাকা দরকার একদিন সরকার কে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে,এখনই সরকার সরে যাওয়া উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ