Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চট্টগ্রামে স্বামী-স্ত্রীর ছিনতাইকারী দল

২০ সেকেন্ডে অটোরিকশার পর্দা কেটে যাত্রীর মালামাল লুট

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০২১, ১২:০৩ এএম

ব্যস্ত সড়কে চলন্ত অটোরিকশার পেছনে উঠে পর্দা কেটে যাত্রীর মালামাল লুট করেন মো. আকাশ (২৪)। এমন অভিনব এবং ভয়ানক কায়দায় ছিনতাই করতে তার সময় লাগে মাত্র ২০ সেকেন্ড। স্ত্রীসহ ছিনতাইকারী চক্রের চারজনকে গ্রেফতারের পর চক্রের দল নেতা আকাশ সম্পর্কে এমন তথ্য জানায় পুলিশ। স্ত্রী তানিয়া বেগম (২৫) এছাড়াও এই দলে আছেন আরো অন্তত ১০ জন।
নগরীর আগ্রাবাদ বাদামতল মোড় থেকে বৃহস্পতিবার রাতে দম্পতিসহ চারজনকে পাকড়াও করে ডবলমুরিং থানা পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ৮ পিস ডায়মন্ড, বিভিন্ন সময় ছিনতাই করা ১৬টি ভ্যানিটি ব্যাগ, ছিনতাইকৃত ভিভো, অপ্পো, রেডমি, এমআইসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১১টি মোবাইল সেট, নগদ ২০ হাজার টাকা এবং অটোরিকশার হুড কেটে নেওয়ার একটি কাটার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার অপর দুই জন হলেন- আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (৪৫) এবং মো. তাজুল ইসলাম (৪০)। আনোয়ার নিজেকে পুলিশের সোর্স বলে পরিচয় দেয়। দল নেতা আকাশ চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় ৩টি মামলা রয়েছে।
গত রমজানে অটোরিকশার পর্দা কেটে এক তরুণীর ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে পালিয়ে যায় আকাশ। তখন থেকেই তাকে ধরতে অভিযানে নামে পুলিশ। পুলিশ জানায় অভিনব পন্থায় ভয়ঙ্করভাবে ছিনতাই করে আকাশ। তার প্রধান টার্গেট অটোরিকশা। চলন্ত অটোরিকশায় পেছনে উঠে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই পর্দা কেটে ভেতরে থাকা যাত্রীর ব্যাগ, মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।
থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, আকাশ ছিনতাই করে ১০ বছর ধরে। আগে সে নারী ছিনতাইকারী ফারজানার গ্রæপে কাজ করত। পরে সে নিজেই আলাদা দল গঠন করে। গত ৩ বছরেই ২ শতাধিক ছিনতাই করেছে সে। নগরীর দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকা পর্যন্ত তার মূল অপরাধ সীমানা। আকাশ একসময় চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রমিকের চাকরি করত। তখন বন্দরে চলাচলরত গাড়ি থেকে কৌশলে চালকের মোবাইল ছিনিয়ে নিত। স্ত্রী তানিয়া সব জেনে শুনেই বয়সে ছোট আকাশকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে স্বামীর অপকর্মে সহযোগিতাও করেছেন সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে। আকাশ ছিনতাইয়ের পর সব মালামাল জমা রাখতেন স্ত্রীর কাছেই। আবার স্বামী ধরা পড়লে আদালত পাড়ায় ছুটতেন স্ত্রী তানিয়া। আকাশ আগেও তিন বার গ্রেফতার হন। প্রতিবারই জামিন করান স্ত্রী তানিয়া। সর্বশেষ এপ্রিলে গ্রেফতার হয়ে বেশ কয়েকদিন কারাগারে ছিলেন আকাশ।
পুলিশ জানায় গ্রেফতার আনোয়ার হোসেন মঞ্জু নিজেকে পুলিশের সোর্স বলে পরিচয় দেয়। আর তাজুল সম্পর্কে আকাশের মামা। এই পরিচয়ের সুবাদেই ছিনতাইকৃত মালামালের চার ভাগের তিন ভাগই তাদের দিতে হয়। পুলিশের অভিযানেও এই তথ্যের সত্যতা মিলে। উদ্ধারকৃত ৮টি ডায়মন্ডের মাত্র দুইটি পাওয়া গেছে আকাশের স্ত্রী তানিয়ার কাছে। বাকি ৬টি ডায়মন্ডের ৩টি উদ্ধার করা হয়েছে আনোয়ারের কাছ থেকে এবং বাকি তিনটি তাজুলের কাছ থেকে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ছিনতাই


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ