মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফগানিস্তান থেকে সামরিক উপস্থিতি সরিয়ে নিতে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরইমধ্যে অর্ধেকেরও বেশি সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ৯/১১ হামলার ২০তম বার্ষিকীতে এই সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ন্যাটো বাহিনীও দেশটি ছেড়ে যাবে। তবে একমাত্র বিদেশি বাহিনী হিসেবে আফগানিস্তানে থেকে যেতে চায় তুরস্ক। এরইমধ্যে বিষয়টি স্পষ্ট করেছে আঙ্কারা। তুরস্কের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মে মাসে ন্যাটো জোটের এক বৈঠকে আঙ্কারা এ বিষয়ে নিজেদের প্রস্তাব তুলে ধরেছে। ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে যোগদানের প্রাক্কালে রবিবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানও এ বিষয়ে জোরালো ভাষায় কথা বলেছেন। এ নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আঙ্কারার আলাপ হয়েছে বলেও জানান তিনি। ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এরদোগান বলেন, আফগানিস্তান ত্যাগের পর তুরস্ককে হিসাব করবে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা রক্ষায় তুরস্কই হবে ‘একমাত্র নির্ভরযোগ্য’ দেশ। সোমবার ন্যাটো সম্মেলনের সাইডলাইনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা নিয়ে কথা বলবেন বলে জানান এরদোগান। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র খুব শিগগিরই আফগানিস্তান ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা চলে যাওয়ার মুহূর্ত থেকেই সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র নির্ভরযোগ্য দেশ তুরস্ক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন তুর্কি কর্মকর্তা বলেন, তুরস্ক যদি আফগানিস্তানে থাকতে হয় তাহলে তারা কিসের ভিত্তিতে সেখানে থাকবে? ন্যাটো জোটের অধীনে কিংবা দ্বিপক্ষীয় শর্তে? যদি এটি ন্যাটোর পৃষ্ঠপোষকতায় হয় তাহলে তারা কার কর্তৃত্বে সেখানে থাকবে? ওই কর্মকর্তা বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো আফগানিস্তানে তুরস্কের উপস্থিতি দেখতে চায়। তারা কাবুল বিমানবন্দরের সুরক্ষা চায়। তবে কেউ সমর্থন না দিলে তুরস্ক কেন জোরালো চেষ্টা করবে? এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করা দরকার। তুরস্ক শুধু আফগানিস্তানে অবস্থান করাই নয়; বরং কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও পরিচালনার দায়িত্বও নিতে চায় তারা। আঙ্কারার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। একজন তুর্কি কর্মকর্তা জানান, তুরস্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সম্ভাব্য সব দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। ওয়াশিংটন কিছু বিষয়ে সম্মত হয়েছে। তার মতে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর তুরস্কের পক্ষ থেকে কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনা এবং ভ‚মধ্যসাগরে খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান নিয়ে বিরোধের পর থেকে ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে আঙ্কারার সম্পর্কে কিছুটা ফাটল দেখা দিয়েছে। এখন কাবুল বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব পেলে পশ্চিমাদের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কের উন্নতি ঘটতে পারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা জানান, তারা তুরস্কের প্রস্তাবকে স্বাগত জানাচ্ছেন। কিন্তু এই কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অনেক কিছু চাইছে আঙ্কারা। এদিকে কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনা করতে তুরস্ক যে প্রস্তাব দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে তালেবান। তালেবানের মুখপাত্র সুহেল শাহীন বলেছেন, ২০২০ সালের স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুসারে তুরস্কের উচিত নিজেদের সেনাদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করা। রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তালেবানের মতামত জানতে চাইলে দোহাভিত্তিক এক মুখপাত্র জানান, ২০ বছর ধরে তুরস্ক ন্যাটোর অংশ ছিল। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, তুর্কি সেনাদের আফগানিস্তান ছাড়তে হবে। তালেবান মুখপাত্র আরও বলেন, তুরস্ক একটি মুসলিম দেশ। আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। ভবিষ্যতে যখন আমরা নতুন ইসলামি সরকার গঠন করবো তখন তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও ভালো সম্পর্ক প্রত্যাশা করি। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেনি রয়টার্স। তবে পেন্টাগন জানিয়েছে, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকারের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ও আঞ্চলিক নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন। অন্যদিকে শনিবার তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মার্কিন ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার ‘কোনও আশা’ রাখা উচিত নয়। দ‚তাবাস ও বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আফগানদেরই দায়িত্ব। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, ফ্রান্স ২৪, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।