Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আফগান বাহিনী কি তালিবান মোকাবেলায় সক্ষম?

সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০২১, ১২:০১ এএম

আফগানিস্তানে তালিবান-নেতৃত্বাধীন সহিংসতা ক্রমেই বাড়ছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষণা অনুযায়ী সব আমেরিকান সেনা সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আফগানিস্তান ত্যাগ করবে। অন্যান্য ন্যাটো বাহিনীও আমেরিকানদের মতো দেশটি থেকে চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফলে, এরপর আফগান সেনাবাহিনীকে নিজ বাহুবলে তালিবানদের মোকাবেলা করতে হবে।
বিগত ৪ দশক ধরে মৌলবাদের ভয়াবহতার শিকার আফগানিস্তানে ন্যাটো ও মার্কিন বাহিনীর অনুপস্থিতিতে প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সরকারের জন্য তালিবানদের সহিংসতা মোকেিবলার ফলাফল কী হতে পারে তা নিয়ে এখন আলোচনা করছে আফগানরা। তবে, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, মার্কিন সেনা প্রত্যাহার তালিবান নেতাদের উৎসাহিত করেছে, যারা বিশ্বাস করে যে, তাদের সামরিক জয়ের সুযোগ রয়েছে।
তালিবানরা বিভিন্ন অঞ্চল ও শহর দখল করে কাবুলের উপর চাপ প্রয়োগ করার চেষ্টা করে আসছে। সম্ভবত, আফগান সরকার এবং তালিবান উভয় পক্ষের সামরিক শক্তির ভারসাম্য এখন একটি গ্রীষ্মকালীন যুদ্ধের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
১ জুন প্রকাশিত জাতিসংঘের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পল্লীঅঞ্চলের ৫০ থেকে থেকে ৭০ শতাংশে কোথাও কোথাও দু’পক্ষের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে বা সেগুলো তালিবানদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আফগান পুলিশ এবং সৈন্যদের সমন্বয়ে তৈরি আফগান বাহিনী পল্লী অঞ্চলের সংর্ঘগুলোতে বারবার পরাজিত হয়েছে। এমনকি উন্নততর অস্ত্রসজ্জিত ন্যাটো বাহিনীও তালিবানদের নিজেদের তৈরি মাইন এবং অ্যাম্বুশ ব্যবহারে গেরিলা কৌশলগুলোর বিরুদ্ধে হিমশিম খেয়েছে। কান্দাহারের বাইরের জেলাগুলোর উপজাতি প্রবীণ নেতারা বলছেন যে, আফগান পুলিশের চৌকিগুলো প্রায়শই বিনা বেতনে কাজ করে এবং খাবার ও গোলাবারু সঙ্কটে ভোগে। ফলে, তালিবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো শক্তি তাদের থাকে না।
পুলিশ এবং নিয়মিত সেনাবাহিনীর পাশাপাশি, আফগান সরকার ক্রমবর্ধমান হারে তার প্রশিক্ষিত বিশেষ বাহিনীর উপর নির্ভর করে। এসব কমান্ডো প্রায়শই ন্যাটো বাহিনীর সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করেছে এবং সামান্য চাপ পড়লেও তারা বারবার বিদ্রোহীদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছে। তারা একের পর এক জঙ্গি আক্রমণ রুখে দিয়েছে এবং জেলাগুলো পুনরুদ্ধার করেছে। তবে, উভয় পক্ষের এবং বেসামরিক মানুষের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা ব্যাপক।
তালিবানরা বড় বড় শহরগুলোর বিরুদ্ধেও চাপ বাড়াচ্ছে, তবে তারা এখনো সেগুলো দখল পারেনি বা বিশেষ বাহিনীর সমন্বিত পাল্টা আক্রমণের বিরুদ্ধে এসব অঞ্চল দখল করতে অক্ষম হয়েছে। ফলে, এ মুহূর্তে গনি সরকারের অবস্থান তুলনামূলক আশাব্যঞ্জক। তালিবানদের সাথে চুক্তি করার বিষয়ে আমেরিকান চাপের মধ্যেই গনিকে আফগানিস্তানের সুবিধা প্রত্যাশী ও দ্বন্দ্বপ্রবণ দলগুলোকে একত্রিত করতে হবে।
আগামী কয়েক মাসের জন্য প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির প্রধান কাজ হ’ল, আফগানিস্তানকে খণ্ডবিখণ্ড হওয়া রোধ করে ঐক্যবদ্ধ করে রাখা। তালিবানদের উচ্ছ্বাস এবং আফগানিস্তানের বিষয়ে ওয়াশিংটনের অনাগ্রহের মধ্যে দেশটির বর্তমান সরকারের জন্য বর্তমানে সামরিক মনোবল টিকিয়ে রাখা কার্যকরী প্রমাণ হতে পারে। একজন আফগান কূটনীতিক বলেছেন, ‘এটি এখন মূলত মনস্তাত্ত্বিক। আমরা যদি এ গ্রীষ্মের চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে সক্ষম হই, তবে আমরা ঠিক থাকব।’ সূত্র : দ্য ইকোনোমিস্ট।



 

Show all comments
  • Harun Izhar Fn ৮ জুন, ২০২১, ৩:০৫ এএম says : 0
    আমেরিকা যতগুলা দেশে হামলা করেছে লক্ষ লক্ষ নীরীহ মানুষ হত্যা করেছে তাদের জঙ্গী-সন্ত্রাসী বলা হয়নি আর তালেবানরা নিজেদের মাতৃভূমি রক্ষার জন্য জিহাদ করতেছে তাদের জঙ্গী-সন্ত্রাসী ট্যাগ দেয় দালাল মিডিয়াগুলা
    Total Reply(0) Reply
  • Rakibul Islam ৮ জুন, ২০২১, ৩:০৫ এএম says : 0
    তালেবানরা জঙ্গি নয়। তারা স্বাধীনতাকামি ইসলামি সৈন্য। তারা মুজাহিদ। তালিবান জিন্দাবাদ❤️ আফগানে তালিবান সরকার শক্তিশালীভাবে গঠিত হতে পারলে উপমহাদেশের কোথাও মুসলমানদের ওপর কেও নির্যাতন করার সাহস পাবে না। যারা নির্যাতন করবে তালেবানরা তাদেরকে উপযুক্ত শিক্ষা দেবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Maruf Hasan ৮ জুন, ২০২১, ৩:০৬ এএম says : 0
    তালেবানদের প্রতি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা না করে আফগানদের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনা করা উচিৎ। সংখ্যাগরিষ্ঠ আফগানরা এখনও তালেবানদের শাসন ব্যবস্থার উপর আস্থাশী
    Total Reply(0) Reply
  • MD Miraj Mollah ৮ জুন, ২০২১, ৩:০৬ এএম says : 0
    পশ্চিমা দেশগুলোর নিজেদের তাবেদারি টিকিয়ে রাখতে পৃথিবী জুড়ে নোংরা খেলা খেলছে,,, সাথে তাদের দালাল মার্কা মিডিয়া। কিন্তু আফগানিস্থানে ঠিকই মার খেয়েছে। মুলতঃ পৃথিবী জুড়ে যতো অশান্তি, খুন,লুটপাট, নিরীহ মানুষ হত্যা সবই পাশ্চিমাদের সৃষ্টি।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Abul Kayas ৮ জুন, ২০২১, ৩:০৬ এএম says : 0
    তালেবানরা ২০০১ এ নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছিল। সাধারণের প্রতিনিধি তো বস্তুত তারাই। গানীর পুতুল সরকার কে ক্ষমতায় বসিয়ে আফগানিস্তানে আমেরিকা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিল। এর আগে ব্রিটিশরা, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও আফগানীদের ক্ষতি করেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Dadhack ৮ জুন, ২০২১, ১:২৭ পিএম says : 0
    Those who says তালেবানরা জঙ্গি they are not muslim. We fought barbarian Pakistan, people around the world called us freedom fighter. In Afghanistan Talibal was the legitimate government. America destroy twin tower and blamed Osama bil laden, Osama bin laden don't have any country or any sophisticated technology to destroy twin tower.. Main reason behind the destruction of Taliban was they were ruling their country by Qur'an as such enemy of Allah and Munafiq, Murtard so called muslim ruler attack and destroy Afghanistan and occupied Afghanistan. May Allah give back power to Taliban so that again they will rule their country by Qur'an then people can live in peace.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ