পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইসরাইলের অভ্যন্তরে গত দুই সপ্তাহে অন্তত এক হাজার সাত শ’ আরব নাগরিককে আটক করেছে ইসরাইলি পুলিশ। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়। খবরে আরো জানানো হয়, একই সময়ে ইসরাইলে আরব বাসিন্দাদের এবং তাদের সম্পত্তির ওপর তিন শ’র বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইসরাইলে আরব নাগরিকদের সংস্থা হাই কমিটি ফর আরব সিটিজেনস ইন ইসরাইলের সংশ্লিষ্ট আরব ইমারজেন্সি কমিটি জানিয়েছে, মসজিদুল আকসায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলা এবং গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসন প্রতিরোধের সাথে সংহতি জানিয়ে ইসরাইলে আরব নাগরিকদের বিক্ষোভের আয়োজনের কারণে এই হামলা ও আটক অভিযান চালানো হচ্ছে। কমিটি আরো জানায়, ইসরাইলে আরব নাগরিকদের বিরুদ্ধে আটক অভিযান এখনো চলছে। প্রতিদিনই অন্তত এক শ’ জন করে আরব নাগরিককে আটক করা হচ্ছে। গত ১৩ এপ্রিল জেরুসালেমের শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনি পরিবার উচ্ছেদ, মসজিদুল আকসায় মুসল্লিদের ওপর হামলা ও গাজায় সামরিক আগ্রাসনের প্রতিবাদে অন্য ফিলিস্তিনি আরবদের মতোই ইসরাইলে বাস করা আরব নাগরিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। অধিকৃত জেরুসালেমের শেখ জাররাহ মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনি বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করে ইহুদি বসতি স্থাপনে গত ২৫ এপ্রিল ইসরাইলি আদালতের আদেশের জেরে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে পরপর কয়েক দফা মসজিদুল আকসায় হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত এই সকল হামলায় এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জাতিসঙ্ঘের মানবিক সাহায্য বিষয়ক দফতর ইউএনওসিএইএ। মসজিদুল আকসা চত্ত¡রে মুসল্লিদের ওপর ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ মে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে মসজিদ থেকে সৈন্য সরিয়ে নিতে ইসরাইলকে আলটিমেটাম দেয় গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর গাজা থেকে ইসরাইলের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামাস রকেট হামলা শুরু করে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজা থেকে ইসরাইলি ভ‚খÐে মোট চার হাজার তিন শ’ ৬০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। ইসরাইলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোমে বেশিরভাগ রকেট ধ্বংস করা হলেও বেশ কিছু রকেট ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে আঘাত হানে। রকেট হামলায় ইসরাইলের ১৩ অধিবাসী নিহত ও সাত শ’ ৯৬ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ইসরাইল ভ‚খÐে হামাসের রকেট হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ মে রাত থেকেই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। ইসরাইলি বিমান হামলায় ৬৬ শিশু ও ৩৯ নারীসহ ২৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত হন। হামলায় আহত হয়েছেন আরো এক হাজার নয় শ’ ৪৮ গাজাবাসী। অপরদিকে গাজায় আগ্রাসনের প্রতিবাদে পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে ইসরাইলি পুলিশের হামলায় ২৫ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। টানা ১১ দিনের আগ্রাসনের পর ২০ মে রাতে ইসরাইল গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। মিসরীয় উদ্যোগে এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরাইলি মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ২১ মে সকাল থেকে তা কার্যকর হয়। ফিলিস্তিনিরা এই যুদ্ধবিরতিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে গণ্য করছেন। যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরাইলে বাস করা আরব বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে আটক অভিযান শুরু করে ইসরাইলি নিরাপত্তা বাহিনী। মিডল ইস্ট মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।