পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি আগ্রাসন অব্যাহত থাকার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে তুরস্ক। অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) এক জরুরি বৈঠকে এই প্রস্তাব তুলেছে আঙ্কারা। দখলকৃত ফিলিস্তিনের জন্য ‘ইন্টারন্যাশনাল প্রটেকশন ম্যাকানিজম’ নামে এই বাহিনী গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে তারা। গত সপ্তাহে শুরু হওয়া গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে ২১২ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৬১ জন শিশুও রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। ওআইসি’র জরুরি বৈঠকে সউদী আরব, মালয়েশিয়া ও পাকিস্তানের মতো সদস্য দেশগুলো পূর্ব জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আর বলেছেন ইসরাইল যুদ্ধাপরাধ করছে। তবে তুরস্ক শুধু নিন্দা না জানিয়ে বাহিনী গঠনের প্রস্তাব সামনে এনেছে। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু প্রতিনিধিদের বলেন, ‘আগ্রহী দেশগুলোর সামরিক এবং আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন করে ফিলিস্তিনিদের শারীরিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা উচিত।’ তিনি ওআইসি এবং আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে ন্যায়বিচার ও মানবতার পক্ষে দাঁড়ানোর আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘অন্য কোনও বিবেচনা থাকা উচিত নয়। এখন আমাদের একতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের কার্যকারিতা প্রদর্শনের সময়।’ তিনি বলেন মুসলিম বিশ্ব প্রত্যাশা করছে ওআইসি নেতৃত্ব এবং সাহস প্রদর্শন করবে। তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে তুরস্ক।’ এই ধরনের আন্তর্জাতিক কোনও বাহিনী গঠনের বিস্তারিত নিয়ে ওআইসি’র সভায় কোনও আলোচনা হয়নি। তবে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওআইসিকে আশ্বস্ত করেছেন যে, ২০১৮ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের একটি প্রস্তাবের আওতাতেই আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত ভাবেই এই ধরনের বাহিনী গঠন সম্ভব। তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আগে একই ধরনের প্রস্তাব সামনে আনেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় এই প্রস্তাব দেন তিনি। অপরদিকে, ফিলিস্তিনের নিরীহ মানুষের ওপর ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর চলমান বিমান হামলার বিষয়ে সোমবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ও পোপ ফ্রান্সিসের মধ্যে ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়। দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এরদোগান পোপ ফ্রান্সিসকে বলেন, ইসরাইল ফিলিস্তিনে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। ইসরাইল শুধুমাত্র মুসলিমদেরকে হত্যা করছে তা নয়, বরং সকল মুসলিম, খ্রিস্টান ও মানবতার ওপর হামলা চালাচ্ছে তারা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, আল আকসা মসজিদ ও হলি সেপুলচার গির্জায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ছাড়াও উপাসনার স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করা, ফিলিস্তিনি ভূখন্ডের নিরপরাধ বেসামরিক মানুষদের হত্যা, মানবিক মর্যাদা লঙ্ঘনের মতো অপরাধ করছে ইসরাইল। দখলদার রাষ্ট্র হিসেবে তারা আঞ্চলিক নিরাপত্তাও বিঘ্ন করছে। এরদোগান আহবান জানিয়ে বলেন, বিশ্ব মানবতাকে এখনই ইসরাইলের এই অনৈতিক ও অমানবিক হামলার বিরুদ্ধে এক হতে হবে, যা জেরুজালেমেরও মর্যাদাহানি করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের উচিত এখনই ইসরাইলকে একটি উপযুক্ত শিক্ষা দেয়া। তাদের বিরুদ্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়া সময়ের দাবি হয়ে পড়েছে। এরদোগান বলেন, আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় যদি ইসরাইলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা না নেয় তাহলে ফিলিস্তিনে এই হত্যাকান্ড চলতেই থাকবে, যা প্রকাশ্য মানবতাবিরোধী অপরাধ। আনাদোলু, আল-জাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।