নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
করোনাভাইরাসের ছোবলে মাঝপথে স্থগিত করা হয়েছে আইপিএল। আবার কবে শুরু হবে তার নিশ্চয়তা নেই। তবে এই সিদ্ধান্তের কারণে এ বছর ২ হাজার কোটির বেশি রুপি ক্ষতি হচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (বিসিসিআই)। ব্রডকাস্ট ও স্পন্সরশিপ থেকে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পেতো বিসিসিআই।
বোর্ডে এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘এই মৌসুমের মাঝপথে আইপিএল স্থগিতের কারণে আমরা দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার কোটি রুপির মতো হারাতে পারি। নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে সেটা হতে পারে ২ হাজার ২০০ কোটি রুপি।’
৫২ দিন ও ৬০ ম্যাচের এই টুর্নামেন্ট আগামী ৩০ মে আহমেদাবাদে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার সংক্রমণের কারণে ২৪ দিনে ২৯ ম্যাচ শেষে বন্ধ করতে হলো টুর্নামেন্ট।
বিসিসিআই সবচেয়ে বেশি অর্থ হারাচ্ছে টুর্নামেন্টের ব্রডকাস্ট রাইটস পাওয়া স্টার স্পোর্টসের কাছ থেকে। ১৬ হাজার ৩৪৭ কোটি রুপিতে স্টার পাঁচ বছরের চুক্তি করেছে, মানে প্রতি বছর ৩২৬৯.৪ কোটি রুপি। এক মৌসুমে যদি ৬০ ম্যাচ হয়, তাহলে প্রত্যেক ম্যাচের মূল্য সর্বোচ্চ ৫৪.৫ কোটি রুপি।
এই পরিমাণ অর্থ যদি স্টার দিয়ে থাকে, তাহলে ২৯ ম্যাচ শেষে তা দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ১৫৮০ কোটি রুপি। আর পুরো টুর্নামেন্ট শেষে বোর্ড পেতো ৩২৭০ কোটি রুপি। মানে বোর্ড হারাচ্ছে ১৬৯০ কোটি রুপি।
একইভাবে মোবাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভিভো ছিল আইপিএলের টাইটেল স্পন্সর। প্রত্যেক মৌসুমে তাদের দেওয়ার কথা ৪৪০ কোটি রুপি। টুর্নামেন্ট স্থগিতের কারণে এখন তার অর্ধেক পরিমাণ অর্থ পাবে বোর্ড।
এছাড়া ইউএনঅ্যাকাডেমি, ড্রিম ১১, সিরেড, উপসটক্স ও টাটা মটর্সের মতো প্রতিষ্ঠান আইপিএলের সহযোগী স্পন্সর। তাদের কাছ থেকে ১২০ কোটি রুপির মতো উপার্জনের কথা।
তবে টুর্নামেন্ট স্থগিতের কারণে প্রত্যেক ফ্র্যাঞ্চাইজি কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হবে তা প্রকাশ করেননি বোর্ডের ওই কর্মকর্তা।
এর মধ্যে আরও বিপদ বাড়লো। ১ হাজার কোটি রুপির জনস্বার্থ মামলার ঝামেলায় পড়ে গেছেন গাঙ্গুলিরা। মামলাটি হয়েছে বোর্ডের বিরুদ্ধেই। কিন্তু সভাপতি হওয়ায় এ নিয়ে ঝামেলা তৈরি হলে সেটার বেগ গাঙ্গুলিকেই বেশি পোহাতে হবে।
বন্দনা শাহ নামের একজন আইনজীবী মুম্বাই হাইকোর্টে মামলাটি দায়ের করেছেন। মামলাতে তিনি উল্লেখ করেছেন, প্রতিদিনই লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে মারা যাচ্ছেন কয়েক হাজার। অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চলছে, মিলছে না আইসিইউ। এমন সময়ে বিসিসিআই কর্মকর্তারা কীভাবে আইপিএল চালিয়ে যাচ্ছিলেন, এমন প্রশ্ন তুলে মামলা করেছেন বন্দনা শাহ। এমনকি বিসিসিআই কর্মকর্তাদের জাতির কাছে মাফ চাইতেও বলা হয়েছে মামলায়।
মামলাতে উল্লেখ করা হয়েছে বিসিসিআই সভাপতি ও ভারতের সাবেক অধিনায়ক গাঙ্গুলির কথা। তার ওপরই সব দায় বর্তানোর মতো একটা অবস্থা তৈরি হয়ে গিয়েছে। মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, জনস্বার্থ মামলার এই ১ হাজার কোটি রুপি যেন করোনায় আক্রান্ত মানুষের চিকিৎসায় ব্যয় করেন সৌরভ গাঙ্গুলি। আইসিইউ তৈরি, অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ানো, ওষুধ ও টিকার পেছনে এই টাকা ব্যয় করার কথা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিসিসিআই কর্মকর্তাদের রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন বন্দনা শাহ। মামলা দায়ের করা এই আইনজীবী বলেছেন, ‘বিসিসিআই ও এই সংস্থাটির কর্মকর্তারা বেজায় অহংকারী। ব্যাপারটা এমন, যেন তাদের কোনো কিছুতেই কিছু যায়-এসে না। করোনাভাইরাসে হাজার হাজার মানুষ যখন চরম কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, মানুষ মারা যাচ্ছে, বিসিসিআইয়ের কর্তারা তখন চোখ-কান বন্ধ করে আইপিএল চালিয়ে গেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা রীতিমতো মানবিক আচরণের বিরোধী। বিসিসিআই কর্তাদের মধ্যে সামান্য দায়িত্ববোধ ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকলে তারা করোনা মোকাবেলায় মাঠে নামতেন। তাদের এখন করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন সুবিধা তৈরিতে ১ হাজার কোটি রুপি ব্যয় করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।