মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আজ শপথবাক্য পাঠ করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজভবনে হবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে রাজ্যপাল শপথ বাক্য পাঠ করবেন মুখ্যমন্ত্রীকে। যদিও করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে সাদা-মাটাভাবে ছোট করেই হবে শপথ গ্রহণ পর্ব। অতিথি তালিকায় যতটা সম্ভব ছোট রাখা হয়েছে এবারে। জানা গেছে, শপথ গ্রহণে আমন্ত্রিতদের তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, দিলীপ ঘোষ, বিমান বসু, অধীর চৌধুরী ও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়সহ কয়েকজন। রাজভবনে শপথ গ্রহণের পরেই প্রশাসনিক ভবন নবান্নের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
গতকাল তাই সাজো সাজো রব ছিল নবান্নে। প্রশাসনিক নজরদারি ও যাবতীয় তৎপরতার সঙ্গে চলেছে প্রস্তুতি পর্ব। বিকেলের পড়ন্ত আলোয় দেখা গেছে নীল-সাদা রঙের নতুন প্রলেপ পড়েছে নবান্নের দেওয়ালে দেওয়ালে। যেন শেষ মুহ‚র্তের সাজগোছ সেরেছে কর্মীরা। ২০১৩-এ এই নবান্নকেই কাজের জায়গা হিসেবে বেছে নেন মমতা।
গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে এই পথেই নবান্নে ঢুকবেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। পুলিশের পক্ষ থেকে নব নিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রীকে ভবন চত্বরে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে প্রথমেই। ‘গার্ড অব অনার’ গ্রহণের পর সম্ভবত কর্মকর্তা ও সহকর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই প্রশাসনিক ভবনে তৃতীয়বারের জন্য পা রাখবেন তিনি। এই নিয়ে পর পর তিনবার বিধানসভা নির্বাচন জিতে হ্যাট্রিক করা রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তার আগে মঙ্গলবার বিকেলে নবান্ন যেন যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে তৈরী হচ্ছিল আরও এক ইনিংসের জন্য।
এদিকে বাংলায় নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতেই মোদি বিরোধী মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জাতীয় স্তরে তুলে ধরতে নতুন ছক তৈরি হচ্ছে। সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইউপিএ চেয়ারপার্সন বা কনভেনার করতে ইতিমধ্যেই তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এমন কি, এ প্রস্তাবে কংগ্রেস শীর্ষ নেতাদের মতো দলের ২৩ বিদ্রোহী নেতারও সমর্থন রয়েছে বলে খবর। বর্তমানে ইউপিএ চেয়ারপার্সন পদে রয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। তবে মমতাকে ঘিরে এই পরিকল্পনা একেবারেই প্রাথমিক স্তরে রয়েছে।
সূত্রের খবর, বাংলার ভোটের ফল সামনে আসতেই আসরে নেমে পড়েছেন কংগ্রেসের এক মধ্যস্থতাকারী নেতা। তার সৌজন্যেই গত ডিসেম্বর মাসে দলের ২৩ বিদ্রোহী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন সোনিয়া গান্ধী। আবার এই নেতাই এক সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জাতীয় যুব কংগ্রেসে তুলে ধরেছিলেন। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ফোন গিয়েছে বিরোধী শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতার কাছে। কমবেশি সবারই সায় রয়েছে এই প্রস্তাবে।
এ পরিকল্পনার নেপথ্যে অনেকগুলো দিক আছে। একটি দিক হল, রাহুল গান্ধী নিজে কংগ্রেসের রাশ হাতে নিয়ে মমতাকে ইউপিএ-এর হাল ধরতে বলুন। কারণ কংগ্রেস ক্রমাগত আত্মসমীক্ষার কথা বললেও বাস্তবে তার জন্য কোনও পদক্ষেপই চোখে পড়েনি। যার জেরে ২০১৫ এবং ২০২০-তে দিল্লি, ২০১৯- অন্ধ্র প্রদেশের পর এবার পশ্চিমবঙ্গেও খাতা খুলতে পারল না কংগ্রেস।
কংগ্রেসের বিদ্রোহী নেতারাও বুঝতে পারছেন, এ ধরনের বিদ্রোহে আসলে নির্বাচনী লড়াইয়ে দলের বেশি ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া তারা এও মেনে নিচ্ছেন, জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যুক্তি দিয়ে তোলার ক্ষেত্রে এখনও সোনিয়া-রাহুলের বিকল্প নেই। আর একটা কারণ হল, এখনও মনমোহন সিং-এর সঙ্গে গান্ধী পরিবারের সুসম্পর্ক। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি এখনও অধিকাংশ বিদ্রোহী কংগ্রেস নেতা শ্রদ্ধাশীল। ফলে সবমিলিয়ে গান্ধী পরিবারের নেতৃত্বকে অস্বীকার করার উপায় নেই। কংগ্রেস নেতাদের একাংশ মনে করেন, ইউপিএ-এর দায়িত্ব মমতার হাতে দেওয়ার বিষয়ে যদি সনিয়া গান্ধীর সম্মতি পাওয়া যায়, তাহলে রাহুল গান্ধীকে কংগ্রেস সভাপতি করার চেষ্টা করা যাবে।
২০০৪ সালে কেন্দ্রে মনমোহন সিং সরকার গঠনের পর তৈরি হয়েছিল ইউপিএ। কিন্তু ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের কাছে হারের ধাক্কায় কার্যত অকেজো হয়ে গিয়েছে বিজেপি বিরোধী দলগুলির এই জোট। ইউপিএ-র কয়েকটি শরিক দল আঞ্চলিক নির্বাচনে জোট বেঁধে লড়লেও জাতীয় স্তরে সক্রিয় ছিল না ইউপিএ। কিন্তু বাংলা ভোটের ফল দেখে বিরোধী নেতারা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিরোধী জোটকে এক ছাতার তলায় আনতে পারলে জাতীয় স্তরেও বিজেপি-র বিজয়রথ থামানো সম্ভব। বিশেষত বর্তমানে দেশে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবং বাংলায় বিপর্যস্ত হওয়ার পর বিজেপি এখন অনেকটাই কোণঠাসা। তবে ২০২৪-এ বিজেপি-কে ধাক্কা দিতে গেলে তার প্রস্তুতি যে এখন থেকেই শুরু করতে হবে, তাও বুঝতে পারছেন বিরোধী নেতারা। মাঝে বেশ কয়েকবার ইউপিএ-এর রাশ হাতে নিতে উদ্যোগী হয়েছিলেন শরদ পাওয়ার। কিন্তু রোববারের পর তার নাম আর কোথা উচ্চারিত হচ্ছে না। সূত্র : নিউজ১৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।