পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছিলেন যে, ১৯১৫ সালে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের দ্বারা আর্মেনিয়ানদের গণহত্যা নিয়ে তুরস্কের অবস্থানকে ইসলামাবাদ সমর্থন করে। রোববার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত ক্যাভুসোগলুর সাথে ফোনালাপের সময় এই মন্তব্য করেন কুরেশি। এরপর এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাহিদ হাফিজ চৌধুরী বলছেন, পাকিস্তান বিশ্বাস করে যে ‘একতরফা দৃষ্টিভঙ্গি এবং ঐতিহাসিক ঘটনাবলির রাজনৈতিক শ্রেণিবিন্যাস’ আসল ঘটনাকে দুর্বল করতে পারে এবং দেশগুলির মধ্যে মেরুকরণের কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টিতে সত্যতা যাচাই করার জন্য সকলকে নিয়ে একটি যৌথ ইতিহাস কমিশন গঠনে তুরস্ক যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা আমরা প্রশংসা সহকারে নোট করছি।’ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আজারবাইজান এবং নাগর্নো-কারাবাখের সংঘর্ষে আর্মেনিয়ার ভ‚মিকার সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে আর্মেনিয়াকে রাষ্ট্র হিসাবে স্বীকৃতি না দেয়া বিশ্বের একমাত্র দেশ হচ্ছে পাকিস্তান। এরপর তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইট করে বলে, ‘ভ্রাতৃসম পাকিস্তানকে ধন্যবাদ! তুরস্ক-পাকিস্তানের বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবী হোক!’ অপরদিকে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমান সাম্রাজ্যে লাখ লাখ আর্মেনিয়ানদের হত্যা, গণহত্যার সামিল বলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে ঘোষণা দেন তা প্রত্যাহারের জন্য সোমবার দাবি জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মন্তব্যের জবাবে এরদোগান বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এক শতাব্দী আগে আমাদের ভ‚মিতে দুঃখজনক ঘটনা নিয়ে ভিত্তিহীন, অন্যায় ও অসত্য মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, তার আশা যে বাইডেন এই ভুল পদক্ষেপ থেকে দ্রæত সরে আসবেন। তিনি ইউরোপীয় অধিবাসীরা আদি আমেরিকান জনগণকে যেভাবে হত্যা করেছে তার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলেন, এসব সত্য যখন বিদ্যমান, তখন তুরস্কের জনগণের বিরুদ্ধে আপনি গণহত্যার দোষারোপ আনতে পারেন না। এরদোগান বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই মন্তব্য আমাদের দুটি দেশের সম্পর্কে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করবে, যে সম্পর্ক ইতিমধেই নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে বিনষ্ট হয়েছে। রাশিয়া থেকে অত্যাধুনিক বিমান বিধ্বংসী ব্যবস্থা কেনার কারণে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট এরদোগান আশাবাদী যে, জুন মাসে ন্যাটো সম্মেলনে দুই নেতা তাদের সম্পর্ক ঝালাই করে নিতে সমর্থ হবেন। এর আগে গত শনিবার, প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে অটোমান যুগে আর্মেনিয়ানদের হত্যা এবং নির্বাসনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছেন জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘১৯১৫ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে ওসমানীয় কর্তৃপক্ষের অধীন কনস্টান্টিনোপলে (বর্তমানে ইস্তাম্বুল) আর্মেনিয়ান বুদ্ধিজীবী এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের গ্রেফতারের সাথে সাথে প্রায় ১৫ লাখ আর্মেনিয়ানকে নির্বাসন, গণহত্যা, বা নির্মূলে অভিযান চালানো হয়েছিল।’ তবে অটোমান সাম্রাজ্যের উত্তরসূরি রাষ্ট্র হিসাবে তুরস্ক নিয়মিতভাবে আর্মেনিয়দের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ডেইলি সাবাহ অনুসারে, তুরস্কের অবস্থান হল পূর্ব আনাতোলিয়ায় কয়েকজন আর্মেনিয়ান যখন অটোম্যানদের বিরুদ্ধে আক্রমণকারী রাশিয়ান বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল তখন নিহত হয়েছিল। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘২৪ এপ্রিল উগ্র আর্মেনিয়ান চেনাশোনা ও তুরস্কবিরোধী গোষ্ঠীর চাপের মধ্যে ১৯১৫ সালের ঘটনা সম্পর্কে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে আমরা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা করি।’ ‘শব্দগুলি ইতিহাস পরিবর্তন বা পুনর্লিখন করতে পারে না,’ টুইটারে কভুসোগলু বলেছিলেন, ‘তুরস্কের নিজের অতীত সম্পর্কে কারও কাছ থেকে শেখার কিছুই নেই।’ সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর, ভয়েস অব আমেরিকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।