পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ১৯১৫ সালের আর্মেনিয়া গণহত্যাকে স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক। শনিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এই প্রত্যাখ্যানের কথা জানানো হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, উগ্র আর্মেনিয়ান চক্র ও তুর্কিবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর চাপে ২৪ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিবৃতিতে ১৯১৫ সালের ঘটনাকে কঠিন শব্দে বর্ণনা আমরা প্রত্যাখ্যান ও নিন্দা করছি। বিবৃতিতে বলা হয়, ১৯১৫ সালের ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনার কোনো শর্তই প‚রণ করেনি। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ১৯১৫ সালের ঘটনার প্রকৃতি বর্তমান রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক লক্ষ্য বা অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিবেচনার পরিবর্তন করেনি। এই দৃষ্টিভঙ্গি শুধু ইতিহাসের এক নোংরা মিথ্যাচারেরই সহায়ক হবে। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, সভ্যতার স‚তিকাগার খ্যাত অঞ্চলের কেন্দ্রে থাকা দেশ হিসেবে এবং সকল দুর্ভোগ সত্তে¡ও মানবতার শান্তি ও স্বস্তির জন্য কাজ করার দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা দেশ হিসেবে, তুরস্ক কখনোই তার ইতিহাসের মুখোমুখি হওয়া এড়িয়ে যায়নি এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ এই বিষয়ে অন্য কোনো দেশ থেকেই শিক্ষা নেবে না। বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রতি স্বীকৃতির গুরুতর ভুলকে সংশোধনের আহবান জানানো হয়। পরে শনিবার বাইডেনের স্বীকৃতির পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্কে মার্কিন দ‚তকে ডেকে পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর আগে শনিবার এক বিবৃতিতে প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৯১৫ সালে তৎকালীন উসমানিয়া সাম্রাজ্যের প‚র্বপ্রান্তে আর্মেনীয় জাতিগোষ্ঠীর আবাসে সংগঠিত ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেন জো বাইডেন। বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, আজ থেকে ১০৬ বছর আগে শুরু হওয়া গণহত্যায় যেসব আর্মেনিয়ান নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল, আমেরিকার জনগণ তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। খবরে বলা হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় তুর্কি অটোমানদের হাতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শনিবার আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভানে জড়ো হয় হাজারো মানুষ। দিনটিকে নানাভাবে স্মরণ করেন তারা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিপুল পরিমাণে আর্মেনীয়কে নির্বাসনে পাঠিয়েছিল অটোমানরা। পরে, বিভিন্ন রোগে ও অনাহারে মারা যান অনেকে। আর্মেনীয়দের দাবি, ওই হত্যাযজ্ঞে অন্তত ১৫ লাখ মানুষ মারা গেছেন। যদিও তুরস্কের অনুমান মৃতের সংখ্যা এর পাঁচ ভাগের এক ভাগ। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোওগলু শনিবার এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমাদের ইতিহাসের বিষয়ে কারও কাছ থেকে শিখব না আমরা।’ এছাড়া তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আঙ্কারার ‘তীব্র প্রতিক্রিয়া’ জানাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদ‚তকে ডেকে পাঠিয়েছে। বøুমবার্গ জানিয়েছে, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে সা¤প্রতিক ফোনালাপে আর্মেনীয় গণহত্যার প্রসঙ্গটি সামনে আনেন জো বাইডেন। গত জানুয়ারিতে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর এই প্রথম দুই নেতা কথা বললেন। এছাড়া বাইডেন এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারেন বলে গত শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেলিনা পোর্টার। তিনি বলেছিলেন, ‘আর্মেনিয়ান গণহত্যার বিষয়ে আগামীকাল ঘোষণা আসতে পারে।’ তবে তুরস্ক বরাবরই বলে আসছে যে, তৎকালীন অটোমান সাম্রাজ্যে যে আর্মেনীয়দের জাতিগত হত্যা ও বহিষ্কার করা হয়েছিল, তা গণহত্যা নয়, বরং তা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ব্যাপক সংঘাতের ফল। আনাদোলু এজেন্সি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।