Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আফগানিস্তানে বি-৫২ বোমারু পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র : পেন্টাগন

সামরিক সরঞ্জাম সরানো শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০২ এএম

মার্কিন প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগন জানিয়েছে, আফগানিস্তানে কয়েকটি বি-৫২ বোমারু বিমান এবং বাড়তি সেনা পাঠানো হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনা উপস্থিতি জোরদার করার অংশ হিসেবে এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে পেন্টাগন জানিয়েছে। পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অস্টিন লয়েড এরইমধ্যে আফগানিস্তানে কয়েকটি দীর্ঘ পাল্লার বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েন করার বিষয়টি অনুমোদন করেছেন। এছাড়া, পারস্য উপসাগরে আইসেনহাওয়ার যুদ্ধজাহাজ রাখা হবে। পেন্টাগন দাবি করছে, নিরাপদে আফগানিস্তান থেকে সম্পূর্ণভাবে সেনা প্রত্যাহার করার জন্য মধ্যপ্রাচ্যে সেনা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। জন কিরবি জানান, সেনাদের সুরক্ষার জন্য আফগানিস্তানে আমেরিকা বাড়তি সেনাও মোতায়েন করতে পারে। আফগানিস্তান থেকে আগামী সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সমস্ত সেনা প্রত্যাহার করা হবে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা দেয়ার কয়েক দিন পর পেন্টাগনের মুখপাত্র এসব তথ্য জানালেন। অপর এক খবরে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে সামরিক সরঞ্জাম সরানোর কাজ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের অংশ হিসেবে এ প্রক্রিয়া শুরু করেছে ওয়াশিংটন। শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের তিনটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের এই প্রক্রিয়া নিরাপদ করতে অঞ্চলটিতে বাড়তি কয়েকশ’ মার্কিন সেনা মোতায়েনের অনুমতি দিয়েছে পেন্টাগন। স‚ত্রগুলো জানিয়েছে, বর্তমানে মার্কিন বাহিনীর অব্যবহৃত সামরিক সরঞ্জামাদি অপসারণ বা আফগান বাহিনীর কাছে হস্তান্তর এবং অপ্রচলিত সরঞ্জাম ধ্বংসের ওপর জোর দিচ্ছে জো বাইডেন প্রশাসন। এদিকে মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছাড়লে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ফ্র্যাংক ম্যাকেঞ্জি জুনিয়র। প্রতিনিধি পরিষদের সশস্ত্র বাহিনী কমিটির কাছে নিজের এমন মতামত দেন তিনি। জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘তালেবানের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত তারা কী করে। যদি তারা আফগানিস্তানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায়, তাহলে তাদের চুক্তি মেনে চলতে হবে।’ তিনি জানিয়েছেন, ‘আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর প্রতিবেশী কোনও দেশে গোয়েন্দা রাখার বিকল্প ভাবনা যুক্তরাষ্ট্র খতিয়ে দেখছে। তাহলে সেনা প্রত্যাহারের পরও দেশটির পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা যাবে। সেক্ষেত্রে কোনও বিপদ এলে দ্রুত তার মোকাবিলা করা যাবে।’ ভবিষ্যতে সন্ত্রাসবিরোধী মিশনের সম্ভাব্যতা সম্পর্কে কমিটিকে অবহিত করার ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘বিষয়টিকে আমি হালকা করে দেখাতে চাই না। রঙিন চশমা পরিয়ে বলতে চাই না সবকিছুই সহজ।’ ম্যাকেঞ্জি জানান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনকে এ মাসের শেষ নাগাদ তাকে সব ধরনের বিকল্পের কথা জানাতে বলা হয়েছে। শীর্ষস্থানীয় এই জেনারেল আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে তার সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের পর যদি নতুন কোনও ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসী হুমকি মোকাবিলার জন্য দেশটিতে, এমনকি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যও আবার যেতে চায় তাহলে তাকে প্রচন্ড বাধার সম্মুখীন হতে হবে। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার অংশবিশেষের দায়িত্বপ্রাপ্ত মার্কিন বাহিনীর এই কমান্ডার এমন সময়ে এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করলেন যখন আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনীকে দেশে ফেরানো নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তারা। অন্যান্য কর্মকর্তারাও সম্ভাব্য সমাধানের দিকে নজর রাখছেন। সদ্য সাম্প্রতিক আমেরিকান গোয়েন্দা বিভাগের মূল্যায়নে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনাদের অনুপস্থিতিতে আফগানিস্তানে শান্তির সম্ভাবনা কমে আসবে। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এবং প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এই হামলার জন্য তালেবানদের দায়ী করে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই হামলার ২০তম বার্ষিকী অর্থাৎ আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর তালেবানদের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ১ মে-র মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেয় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বলে আসছিল ১ মে-র সময়সীমা পূরণ করা কঠিন হবে। পরে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর সেনা প্রত্যাহারের ডেটলাইন নির্ধারণ করা হয়। সিএনএন, আনাদোলু এজেন্সি।



 

Show all comments
  • Alam Hossain ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৪ এএম says : 0
    আফগানিস্তানের অবনতির জন্য দায়ী যুদ্ধবাজ আমেরিকা। তারা অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Sohel Arman ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৪ এএম says : 0
    ইংল্যান্ড আমেরিকা রাশিয়া সব পরাশক্তি বিশ্বের অন্য প্রান্ত থেকে এসে শত শত বছর ধরে অত্যাধুনিক অস্ত্র দিয়ে একটা দেশ ধংস করে দিবে আর তার প্রতিরোধ সংগ্রাম থেকে কোন ভূল ভ্রান্তি হবে না।এটাতো সম্ভব না।
    Total Reply(0) Reply
  • ফাহমিদা তাবাসসুম বর্ষা ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৪ এএম says : 0
    আফগানিস্তানের উন্নত অবশ্যই হইছে, তবে এখনো উন্নতি হইলো না ব্রিটিশদের.. অন্যের লেজ টেনে ধরা স্বভাব এখনো যায় নাই..
    Total Reply(0) Reply
  • পারভেজ আলম ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৫ এএম says : 0
    আফগানিস্তানের তালেবানরা তাদের দেশ স্বাধীন করেছে, সেই হিসেবে আফগানিস্তানের তালেবানরা বর্তমানে তাদের দেশের বীর মুক্তিযুদ্ধ,
    Total Reply(0) Reply
  • Kalam Mk ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৫ এএম says : 0
    আমেরিকা আফগানে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • Sk Kamrul Hashan ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৬ এএম says : 0
    আফগানিস্তানের মানুষ সবসময় জেহাদের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার পক্ষে। হাজার বছর ধরে শান্তির পথে ধাবমান
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Hamid Molla ২৫ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩৬ এএম says : 0
    আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাতো উন্নতি করতে আসে নাই ,এসেছে ধ্বংস করতে। কতটুকু ধ্বংস করেছে সে ব্যাপারে খোঁজ নেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ