Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্যসেবায় সকলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০৩ এএম

আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। দিবসটি আন্তজার্তিকভাবে এবং জাতীয় পর্যায়ে দেশে দেশে অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপিত হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়, এর কারণ হচ্ছে, জাতিসংঘের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’ ৭ এপ্রিল ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার ২ মাস পর ২৪ জুন ১৯৪৮ সালে এই সংস্থার প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল জেনেভায়। সেই সময় বিশ্বের ৪৬ টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। সেই সম্মেলন থেকেই সিদ্ধান্ত হয় বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরিতে ১৯৫০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে প্রতি বছর নিয়মিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতি বছর এমন একটি প্রতিপাদ্য বিশ্ববাসীর সামনে নিয়ে আসে যা বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৫০ সালের বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল, ‘নো ইউর হেলথ সার্ভিসেস’, যার অর্থ ‘নিজের স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কে সচেতন হোন।’ এভাবে ৭০ বছর ধরে ৭ এপ্রিল বিশ্ব জুড়ে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’। প্রতিবছর বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারনের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় উক্ত সংস্থার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদেরকে নিয়ে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক কাজের সাথে সম্পৃক্ত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহন করে থাকে। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কোভিড-১৯ নামক অদৃশ্য ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে পুরো বিশ্ব। বিশ্ব জুড়ে সকল সেক্টরেই কঠোর আঘাত করেছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে ১২ কোটি ৪৫ লক্ষাধিক মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং ২৭ লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য ‘একটি সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর বিশ্ব গড়ার প্রত্যয়’। আমরা বর্তমানে একটি অসম পৃথিবীতে বসবাস করছি। যেখানে কিছু লোক স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করছে, অন্যদের তুলনায় মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবায় বেশি সুযোগ পাচ্ছে, কাজের ক্ষেত্রে এবং বসবাসের ক্ষেত্রে অধিক পরিমান সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। অপর দিকে, বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ দৈনিক আয়ের জন্য রীতিমতো যুদ্ধ করছে। আবাসন সংকট প্রকট এবং সুশিক্ষার ক্ষেত্রে সীমিত সুযোগ পাচ্ছে। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সুযোগের অভাব, লিঙ্গ বৈষম্য, নিরাপদ পরিবেশ, বিশুদ্ধ পানি-নির্মল বায়ু ও নিরাপদ খাদ্য সংকট এবং সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে স্বাস্থ্য পরিসেবা। এ বিষয়গুলো আমাদের সমাজ এবং অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। সমস্যাগুলোর প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্ভব। এজন্য আমাদের প্রত্যেকের জীবনযাত্রার মান উন্নতকরণে, সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিশ্ব নেতৃত্বকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সকলের জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব নেতাদেরকে বদ্ধপরিকর হতে হবে।
কোভিড-১৯ এ বিগত এক বছরে বিশ্বে শ্রেণী বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। কোভিড-১৯ থেকে মুক্তির জন্য যেখানে বিশ্ব নেতাদের একত্রিত হয়ে কাজ করার কথা ছিল, সেখানে আমরা দেখেছি, বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারষ্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সংকীর্ণ আচরণ। মানবজাতির জন্য এ আচরণ অত্যন্ত লজ্জা এবং দুঃখজনক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বে কোভিড-১৯ টিকা কার্যক্রম সমান গুরুত্ব দিয়ে সকলের জন্য সমান সুযোগ রেখে পরিচালনার উপর গুরুত্বারোপ করেছে। বিশ্ব নেতাদের উচিৎ এই অতিমারি মোকাবেলায় একত্রে কাজ করা। একসাথে কাজ করার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসেবার অসম্পূর্ণ দিকগুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজন, নির্ভরযোগ্য তথ্য/ডাটা সংগ্রহ করা। সময়োপযোগী এবং নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্য তথ্য এমনভাবে সংগ্রহ করতে হবে যেন লিঙ্গ, বয়স, উপার্জন, শিক্ষা, মাইগ্রেশনের স্থিতিশীলতা, অক্ষমতা, ভৌগলিক অবস্থান এবং জাতীয় প্রসঙ্গ ইত্যাদি পৃথকভাবে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ প্রাধান্য পায়। অসমতার মূল কারণগুলো মোকাবেলায় এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারী সাহায্য সহযোগিতার পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করা খুবই জরুরী।
স্বাস্থ্যসেবায় ন্যায্যতা ও সমতা থাকতে হবে। বিশ্বব্যাপী সুরক্ষা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারলে কোভিড-১৯ অতিমারী নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে ভ্যাকসিন প্রাপ্তি এবং ন্যায়সঙ্গত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ব ব্যাপী স্বাস্থ্যসেবায় সকলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার মাধ্যমে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ‘করোনা মুক্ত বিশ্ব, অসমতাহীন মানবিক সমাজা’ এই হোক এবারের বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।
লেখক: উপাচার্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্যসেবা


আরও
আরও পড়ুন
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->