Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

এবার মধ্যপ্রাচ্যের দিকে নজর দিচ্ছে চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০২১, ৬:১৬ পিএম | আপডেট : ৬:৪৯ পিএম, ৩১ মার্চ, ২০২১

চীন নিজেকে একবিংশ শতাব্দী ও পরবর্তীর বিশ্বের উদীয়মান শক্তি হিসেবে মনে করে। আর এ পর্যায়ের শক্তিধর কোন রাষ্ট্র আসলে মধ্যপ্রাচ্যকে বাদ দিয়ে এগিয়ে যেতে পারে না। এই উদ্দেশ্যে চীন এবং ইরান গত সপ্তাহান্তেই একটি চুক্তিতে সই করেছে।

দেশ দুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলছেন যে, এই চুক্তিটির মাধ্যমে আগামী ২৫ বছর দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় থাকবে। চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইরানের তেল কিনবে চীন। পাশাপাশি ইরানে কিছু বিনিয়োগও করবে চীন। নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানে বিদেশী বিনিয়োগ অনেকটা বন্ধই রয়েছে।

চীনের সুবিস্তৃত 'বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ' কর্মসূচীতে সর্বশেষ সংযোজন এটি। বিশ্ব শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে এমন সব যোগাযোগ বাড়াতেই হবে বেইজিংকে। ইরান চীনের চেয়ে আকারে ছোট হলেও দেশটির বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং প্রতিবাদী বৈদেশিক নীতির কারণে এর একটি স্বকীয়তা রয়েছে। এখন চীনের সাথে যেহেতু ইরান একটি চুক্তি সই করেছে এবং এই দেশটিও যেহেতু জেসিপিওএ-র অংশ, তাই ধারণা করা হচ্ছে যে, সহযোগিতা শুধু তেল বিক্রির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। কারণ নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে ইরানের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতায় ইরানকে সুবিধা দেবে বলে ধরা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার দুই পূর্বসূরির মতোই মধ্যপ্রাচ্য থেকে নজর সরিয়ে আরো আকর্ষণীয় ও কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ এশিয়া-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের দিকে বেশি নজর দিতে চান। কিন্তু কার্যত এটা অসম্ভব, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এমন বিষয় প্রচুর পরিমাণেই রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। এই বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ইরান এবং এর পারমানবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা, যেটি তাদের নেই বলে দাবি করে ইরান।

যদিও যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যপ্রাচ্য থেকে নজর সরায়নি, কিন্তু সামনে এগোয়নি তারা। মধ্যপাচ্যে আমেরিকার অবস্থান আরো পোক্ত করার অনিচ্ছা তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য সুযোগ বয়ে এনেছে। সিরিয়ার যুদ্ধে জড়ানোর মাধ্যমে রাশিয়া ওই অঞ্চলে সোভিয়েত ইউনিয়ন যুগের ভূমিকা পুনরুদ্ধারের একটি সুযোগ হিসেবে দেখছে।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র চায়না ডেইলি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, তিনি পঞ্চমুখী একটি পরিকল্পনার সূচনা করেছেন যার উদ্দেশ্যে ‘ফিলিস্তিন-ইসরাইল’ আলোচনা শুরু, ইরানের পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবন এবং এই এলাকায় একটি সুরক্ষা কাঠামো গড়ে তুলে মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা। এ ধরণের বিষয়গুলো পশ্চিমা কূটনীতিকরাও বলে থাকেন। তবে স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যকে নিজেদের অধিকারে আছে বলেই ধরে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি তাই চেক সই করা ছাড়া অন্য ভূমিকা পালনের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিত্রদের মধ্যপ্রাচ্য থেকে দূরেই রেখেছে।

লোহিত সাগরে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এরিমধ্যে তাদের প্রথম বৈদেশিক সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছে, যেটি পড়েছে জিবুতিতে। এটি বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত জাহাজ চলাচলে অঞ্চলের উপর নজরদারি করে। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর আফ্রিকা কমান্ড থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান।

জো বাইডেন এবং তার প্রশাসন হয়তো ইরানের সাথে পরমাণু চুক্তি বা জেসিপিওএ-তে ফিরে আসার একটা পথ বের করে নেবে। নিজেদের স্বার্থেই তারা এটি করবে। তবে বিশ্বের সবচেয়ে অস্থিতিশীল এলাকায় চীন যে তাদের অবস্থান দৃঢ় করার চেষ্টায় গতি আনার ইঙ্গিত দিচ্ছে সেটা আমেরিকার জন্য অস্বস্তিকর হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ