Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বন্দরে অভিনব কায়দায় শীতলক্ষ্যা পাড়ের মাটি চুরি, ভাঙ্গনের আশংকা

নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ মার্চ, ২০২১, ১০:৫১ এএম

বন্দরে শীতলক্ষ্যা নদী তীরের ময়লা আবর্জনা অপসারণের নামে অভিনব কায়দায় মাটি চুরি করে বিক্রয় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে অপরিকল্পিতভাবে অস্বাভাবিক গভীর করে মাটি কেটে নেয়ার কারণে নদী ভাঙ্গনের আশংকা করছেন এলাকাবাসী।

নদী পাড়ের বাসিন্দারা জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীকে টাকায় ম্যানেজ করে প্রতিদিন কয়েকশ’ শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে নিয়ে ইটভাটায় বিক্রি করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে নদী ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় শংকিত তারা।

বন্দর খেয়াঘাটের ময়মনসিংহ পট্টি থেকে চিত্তরঞ্জন ঘাট সংলগ্ন ভাসমান ডকইয়ার্ড পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে চলছে নদীর তীর ভুমির মাটি চুরির মচ্ছব।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেও, মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন অনুমতি নিয়েই মাটি কাটছেন তারা ।
সূত্র জানায়, কফিলউদ্দিন নামে সিদ্ধিরগঞ্জের এনায়েতনগর এলাকার এক ব্যক্তি নদী পাড়ের ময়লা আবর্জনার স্তুপ অপসারনের জন্য বাংলাদেশ অভ্যন্তরিণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম পরিচালকের কাছে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি আবেদন করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ মার্চ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের বন্দর ও পরিবহন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল স্বাক্ষরিত এক পত্রে ১৫টি শর্তে শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব পাড়ে ভাসমান ডক ইয়ার্ডের দক্ষিণ পাশের ময়লা আবর্জনার স্তুপ নিজ খরচে কায়িক শ্রমে কোদাল দিয়ে অপসারণের অনুমতি দেয়া হয় বিআইডব্লিউটিএ ।
বিআইডব্লিউটিএ’র আবর্জনার স্তুপ অপসারণের অনুমিত পাওয়ার পরই শুরু হয় নদীর তীর ভুমি কেটে মাটি লুটের মহোৎসব।
সরেজমিন বন্দরের দেউলী চৌরাপাড়া বিআইডব্লিউটিসির ভাসমান ডকইয়ার্ড সংলগ্ন নদী তীরে গিয়ে দেখা গেছে মাটি চুরির মচ্ছব।
প্রভাবশালী চক্রের নিয়োগকৃত কয়েকশ’ শ্রমিক ময়লা আবর্জনা অপসারণ না করে নদীর তীরবর্তী স্থানে জমিয়ে রেখে কোদাল দিয়ে শুধু শীতলক্ষ্যা তীরের মাটি কেটে ট্রলারে ভরছেন।

এতে নদী তটে ১০/১২ ফুট গভীর গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটায় তীব্র ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। এতে আশপাশের ঘরবাড়ি ও কলকারখানা রয়েছে ভাঙ্গন ঝুঁকিতে।

আবর্জনা অপসারণের সময় নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের বন্দর ও পরিবহন বিভাগ, নৌ- সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগ এবং প্রকৌশল বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও মাটি কাটার সময় সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী জানান, প্রতিদিন সকালে ট্রলারে করে একদল লোক এসে কেটে নিয়ে যায় শীতলক্ষ্যা তীরের মাটি। এতে ভাঙ্গন আশংকা দেখা দিয়েছে। একইভাবে বন্দর খেয়াঘাট সংলগ্ন ময়মনসিংহ পট্টি এলাকায় কাটা হচ্ছে শীতলক্ষ্যা নদীর সমৃদ্ধ পাড়।
নদী খননের নামে এখানে চলছে মাটি চুরি। বিআইডবিøউটিএ’র সিবিএ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের ছত্র ছায়ায় কেটে নেয়া হচ্ছে পাড়ের মাটি। এতে লাভবান হচ্ছে একটি অসাধূ চক্র।

এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলম জানান, নদী খননের পর মাটি অপসারণের কোন বাজেট নাই। তাই যাদের সামর্থ্য আছে তারা মাটি নিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে বিআইডবিøউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ন পরিচালক শেখ মাসুদ কামালের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আবর্জনা অপসারণের অনুমতি নিয়ে তীরের মাটি কেটে নেয়া অন্যায়। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চুরি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ