Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে ঊর্ধ্বগতি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২১, ১২:০১ এএম

কভিড-১৯ মহামারীতে তীব্র সংকোচনের পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বেশির ভাগ দেশের অর্থনীতি। এক্ষেত্রে বেশি এগিয়ে আছে চীন। নতুন বছরের প্রথম দুই মাসে দেশটির অর্থনৈতিক কার্যক্রমে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অভ‚তপ‚র্ব হারে বেড়েছে। রফতানির হাত ধরে শিল্প উৎপাদন ও খুচরা বিক্রিতে এক-তৃতীয়াংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেলেও পিছিয়ে আছে অর্থনীতির অন্যতম একটি অনুষঙ্গ ভোক্তাব্যয়। ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে অসম পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। প্রকাশিত সরকারি ডাটায় অর্থনীতির মূল স‚চকগুলোয় অভ‚তপ‚র্ব বৃদ্ধির হার ৩০ শতাংশেরও বেশি দেখা যায়। মূলত মহামারীর কারণে গত বছর এ সময়ে তীব্র সংকোচনের পর এমন বৃদ্ধির হার দেখা যাচ্ছে। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়কালে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শিল্প উৎপাদন ৩৫ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি অর্থনীতিবিদদের প্রত্যাশা ৩২ দশমিক ২ শতাংশের চেয়েও বেশি। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রুখতে চীনের চান্দ্র নববর্ষের ছুটিতে কর্মীদের বাড়িতে যাওয়ার পরিবর্তে নিজ অবস্থানে থাকতে উৎসাহিত করেছিল সরকার। ফলে কর্মীরা ছুটির সময়ও কারখানায় কাজ করায় শিল্প উৎপাদনে এমন প্রবৃদ্ধির দেখা মিলেছে। তবে এ কারণে ভ্রমণ, রেস্তোরাঁ ও বিনোদনমূলক কার্যক্রমগুলোয় ব্যয় কমে যায়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দুই মাসে চীনের রফতানিও দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছে যায়। পাশাপাশি রফতানির ওপর ভর করে শিল্প উৎপাদন বৃদ্ধি এবং রিয়েল এস্টেটের মতো খাতগুলোয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে গত বছরের পুনরুদ্ধারের গতি বজায় রয়েছে। তবে বেইজিংয়ের অর্থনৈতিক ভারসাম্য অর্জনের প্রচেষ্টাকে বিলম্বিত করছে ভোক্তাব্যয়। এদিকে বøুমবার্গের জরিপে অর্থনীতিবিদরা যেখানে ৩২ শতাংশ বৃদ্ধির প‚র্বাভাস দিয়েছিলেন, সেখানে প্রথম দুই মাসে দেশটিতে খুচরা বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। তবে গত দুই বছরের গড়ের তুলনায় খুচরা বিক্রি বেড়েছে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। একই সময়ে দুই বছরের গড়ের তুলনায় শিল্প উৎপাদন বেড়েছে ৮ দশমিক ১ শতাংশ। চীনা পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে খুচরা বিক্রি জানুয়ারির তুলনায় মাত্র শ‚ন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের চীনা রেনেসাঁ সিকিউরিটিজের অর্থনীতিবিদ ব্রুস প্যাংয়ের মতে, এটি ইঙ্গিত দেয় চান্দ্র নববর্ষের জাতীয় প্রত্যাশার তুলনায় প্রবৃদ্ধির হার খুব কম বেড়েছে। গতকাল এ তথ্য প্রকাশের পর চীনের শেয়ারবাজারেও প্রভাব পড়ে। দুপুরে সিএনআই ৩০০ স‚চক ৩ শতাংশ কমে যায়। এছাড়া ডলারের তুলনায় ইউয়ান কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। এদিকে স্থিত সম্পদ বিনিয়োগ ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ প্রক্ষেপণের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন, মুনাফা পুনরুদ্ধারের পর চলতি বছর ডেভেলপাররা বিনিয়োগ আরো জোরদার করবেন। তবে প্রত্যাশার তুলনায় কম বিনিয়োগের এ পরিসংখ্যান বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নির্মাতাদের সতর্ক অবস্থানের বিষয়টি প্রতিফলিত করে। চীনা পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক মুখপাত্র একটি বিবৃতিতে বলেন, স্থানীয়ভাবে ভারসাম্যহীন পুনরুদ্ধার এখনো উল্লেখযোগ্য এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের ভিত্তি এখনো দৃঢ় নয়। গত মাসে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ শহুরে বেকারত্বের হার প্রাক-মহামারীর স্তরের উপরে থেকে গেছে। এক্ষেত্রে বিশেষত তরুণদের মধ্যে বেকারত্বের হার বেশি ছিল। শেনঝেন পিসফুল ইনভেস্টমেন্ট কো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক উইলিয়াম পিং বলেছেন, খুচরা বিক্রি ও শিল্প উৎপাদন প‚র্বাভাসের চেয়ে বেশি ছিল। সুতরাং এটি দেখায় অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা রয়েছে। তবে বর্তমানে আমার সবচেয়ে বেশি শঙ্কার বিষয় হলো দীর্ঘমেয়াদে ভোক্তাব্যয়ের ক্ষেত্রে যথেষ্ট জোর দেয়া হবে কিনা। চীন এখনো একমাত্র প্রধান অর্থনীতির দেশ, যা সংক্রমণের ওপর প্রাথমিক নিয়ন্ত্রণের পর মহামারী থেকে বেরিয়ে এসেছে। গত বছরও দেশটির অর্থনীতি ২ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং অর্থনীতিবিদরা এ বছর ৮ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প‚র্বাভাস দিয়েছেন। বøুমবার্গ, রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ