Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বিশ্ব রাজনীতির ছকে চাণক্য নীতিতে চীন

আজকের কৌটিল্য-১

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:০০ এএম

কৌটিল্য বা চাণক্য বা বিষ্ণুগুপ্ত (খ্রিস্টপূর্ব ৩৭০-২৮৩ অব্দ) একজন অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক ও রাজ-উপদেষ্টা এবং অর্থশাস্ত্র নামক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বিখ্যাত গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পান্ডিত্যের জন্য তাকে ভারতের মেকিয়াভেলি বলা হয়। তিনি সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের উত্থানে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন। মূলত তারই বিচক্ষণতা ও কূটনীতির কারনে চন্দ্রগুপ্তর হাতে বিশাল মগধের শক্তিশালী রাজা ধননন্দ পরাজিত হন। চাণক্যকে মৌর্য সাম্রাজ্যের মূল কারিগর বলা হয়। চানক্যের নীতিগুলি আজও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক।
কৌটিল্যের অব্যাহত প্রাসঙ্গিকতার বিষয়ে সংশয়বাদীদের কাছে বর্তমান ভূ-রাজনীতির খেলাগুলি কৌটিল্যের রাজামান্ডালা বা রাজ্যগুলির বৃত্তের প্রধান তত্ত্বগুলির আলোকে একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থার কথা বলছে, যা ভূ-রাজনৈতিক বন্ধু-শত্রু সম্পর্কের ধারণাটিকে চাণক্য নীতিতে সংজ্ঞায়িত করছে। এবং বিশ্বরাজনীতির দাবার ছক আমেরিকা, চীন, উপমহাদেশের দেশগুলির সাথে ভারতের সম্পর্কের ওপর ক্রমেই চাণত্য নীতির ছায়া পরিলক্ষিত হচ্ছে।

বর্তমানে যদি কোনও দেশ আন্তর্জাতিক স্তরে কৌটিল্যের ফ্রেমওয়ার্কের সুনির্দিষ্টভাবে উদাহরণ হয়ে থাকে, তাহলে সেই দেশটি চীন। দেশটি লাদাখ প্রসঙ্গে, কৌটিল্যের আন্ত:রাষ্ট্রীয় রাজ্যের ৫ম মধ্যমা (মধ্যখানের রাজা)। মধ্যমাকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, ‘তৎক্ষণাৎ আরি (শত্রু) এবং বিজয়ী (কাল্পনিক পাকিস্তান এবং ভারত) অঞ্চলগুলির নিকটবর্তী রাজ্যের রাজা, যে তাদের ঐকগঠনে সাহায্য করতে এবং বিচ্ছিন্নতায় দমন করতে সক্ষম।’
কৌটিল্যের সংজ্ঞার প্রকৃত সংজ্ঞা অনুসারে, চীন দক্ষতার সাথে পাকিস্তান এবং ভারতের সাথে তার রাজনৈতিক গতিশীলতার সামঞ্জস্য করেছে। চীন ১৯৯৩ সালের সীমান্ত শান্তি ও শান্তিপূর্ণ অবস্থা চুক্তি এবং ১৯৯৬, ২০০৩ এবং ২০১২ সালে আরও বেশ কয়েকটি চুক্তির মাধ্যমে এটি ভারতের সাথে একটি সমঝোতা চুক্তি (সামধি) এবং ১৯৯৬, ২০০৩ এবং ২০১২-এর অন্যান্য বেশ কয়েকটি চুক্তি করে। সেই সময়ে প্রতিবেশির সাথে স্থিতিশীল সম্পর্ক তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

ভারতের শান্তি বজায় রাখার মাধ্যমে চীন নিজের আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে এবং সেই সুযোগে কৌশলে ভারতকে তার মিত্রদের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। ভারতের উদ্যোগুলির সম্ভাব্য সাফল্যকে নস্যাৎ করে দিয়েছে দেশটি। দুই দশকেরও বেশি সংহতির পর চীন তার কৌশলগত সুবিধা অর্জন করেছে এবং সম্ভাব্যভাবে তার লাদাখ সংঘর্ষের মাধ্যমে সামধি থেকে সমধ্যায়নের (শান্তি চুক্তিতে প্রবেশের পর প্রস্থান করা) কৌশল বেছে নিয়েছে।
ভারত সাফল্যের সাথে চীনের আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের মোকাবিলা করে হয়তো আসনা’র (নিরব থাকার একটি ক্ষণস্থায়ী পর্যায়) জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হবে, যেখানে বিজয়ী এবং শত্রু একে অপরকে ছাড়িয়ে যেতে না পারলে এটি মীমাংসা অবলম্বন করে। সূত্র : দ্য প্রিন্ট (চলবে)



 

Show all comments
  • বাদল বাদল ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৪৯ এএম says : 0
    এই বিশ্লেষণের সাথে আমি অনেকটাই একমত।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫০ এএম says : 0
    চীন এখন অত্যন্ত ধূর্ত। ভারতকে নাকানি চুবানি কিভাবে দিতে হয় ভালো করে জানে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাজারেথ স্বনন ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫০ এএম says : 0
    প্রতিবেশীদের সাথে সুসম্পর্ক রেখে সামনে এগোতে চাইলে সে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • বাতি ঘর ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫১ এএম says : 0
    ভারতের মতো স্বার্থপর নীতি গ্রহণ করলে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেত না।
    Total Reply(0) Reply
  • তোফাজ্জল হোসেন ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫১ এএম says : 0
    আগামীতে মনে হচ্ছে চীনই বিশ্ব রাজনীতির নেতৃত্ব দেবে।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫২ এএম says : 0
    আমেরিকা, ভারতকে দমন করার জন্য ছীনের দরকার আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • তাসফিয়া আসিফা ১৩ মার্চ, ২০২১, ১২:৫৩ এএম says : 0
    বিশ্ব নে তৃত্ব হাতে নেয়ার জন্য েএকেক দেশ একেক নীতি গ্রহণ করেছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ