ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্রে বন্ধুত্বের সম্পর্কের টানে বরিশালে এসে ফাঁদে আটকা পড়া ১৬ বছরের তরুণীকে সাড়ে ৪ মাস পর উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ৩ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে বরিশালে মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেল জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ১৬ বছরের ওই তরুণী নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় মানুষের বাসায় পরিচারিকার কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতো। হঠাৎ করেই প্রায় ৭/৮ মাস পূর্বে ভিকটিমের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে পরিচয় হয় বরিশালের আরিফুল ইসলাম সুমনের সাথে। পরিচয়ের সূত্র ধরে ভিকটিম তার পারিবারিক অসহায়ত্ব ও অভাব-অনটনের কথা জানায় ফেসবুক ফ্রেন্ড সুমনকে।

ভিকটিমের কাছ থেকে সবকিছু শুনে সুমন তাকে আশ্বস্ত করে এবং ভিকটিমকে কাজ দেবার মত ভাল কাজ হাতে আছে বলে জানায় সুমন। তবে ভিকটিম যদি সুমনের কাছে বরিশাল চলে আসে তবেই সে ভালো কাজ দিতে পারবে বলে জানায়। পাশাপাশি সুমনের পরিবারের সাথেই ভিকটিম থাকতে পারবে বলেও জানায় সুমন।

এ আশ্বাস পেয়ে সুমন তার স্ত্রী হাবিবা আক্তার সুমিকে সাথে নিয়ে ঢাকা গিয়ে ভিকটিমকে বরিশালে নিয়ে আসে এবং নগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তাদের ভাড়া বাসায় ভিকটিমকে রাখে। তবে ভিকটিমকে চাকুরী না দিয়ে ওই বাসায় আটকে রাখে সুমন ও তার স্ত্রী। পরবর্তীতে তাদের বন্ধু আরিফের সহায়তায় ভিকটিমের সাথে অসামাজিক কার্যকলাপ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। বিভিন্ন সময় তাকে যৌন নিপীড়ন করতে থাকে। ভিকটিম যখন বুঝতে পারে অসৎ উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে তাকে এখানে এনে আটকে রাখা হয়েছে তখন সে পালিয়ে ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করলে সুমন তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখায়।

বিএমপির মিডিয়া সেলের এসআই তানজিল আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রায় ৪ মাস ১৯ দিন আটক থাকার পর কোতোয়ালী থানার সহকারী কমিশনার রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান বরিশাল নগরের ১৫নম্বর ওয়ার্ডস্থ জনৈক সাইদুল কবির রিপনের মালিকানাধীন ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি টিনসেড ঘর থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এঘটনায় মোঃ আরিফুল ইসলাম সুমন (২৪) তার স্ত্রী হাবিবা আক্তার সাথী (১৮) ও তাদের বন্ধু মোঃ আরিফকে (২২) গ্রেফতার এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে।