বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
অনুমতি মিলেছে তবে চার দেয়ালের ভেতর। আর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব ধরণের যানবাহন। এমনকি ট্রেনও চলবে না।
রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ যেন করতে না তার জন্য এতো সব ব্যবস্থা। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিএনপি মধ্য শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম রাস্তায় সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু এসব এলাকায় সমাবেশ করলে মানুষের চলাচল বাধাগ্রস্ত হবে। তীব্র যানজট দেখা দিবে। এ জন্য মধ্য শহরে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। আমরা তাদের ইনডোর সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছি।’
এদিকে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ‘হামলার আশঙ্কা’র কথা বলে রাজশাহী থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে আকস্মিকভাবে বাস বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বাস চলাচল বন্ধকে অযৌক্তিক বলছেন যাত্রীরা।
রাজশাহী পরিবহণ মালিক ও শ্রমিক নেতাদের দাবি, বাস চলাচল করলে হামলার আশঙ্কা আছে। তাই শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তারা বাস চলাচল আপাতত বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিস্থিতি বুঝে পরে তারা আবারও বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নেবেন।
রাজশাহীর বাস মালিকদের সংগঠন সড়ক পরিবহণ গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, মঙ্গলবার রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে তারা সড়কে বিশৃঙ্খলা ও যানবাহনে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা করছেন। এ কারণে তারা সোমবার বেলা ১১টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।
এদিকে, বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি প্রসঙ্গে আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘রাজশাহীর মাদ্রাসা ময়দান সংলগ্ন নাইস কনভেনশন সেন্টারে বিএনপিকে সমাবেশ করতে বলা হয়েছে। তারা যেন প্রস্তুতি নিতে পারে সে জন্য মৌখিকভাবে সোমবার দুপুরেই তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যায় তাদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’
ইনডোরে সমাবেশের অনুমতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, ‘আমরা শহরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, মনিচত্বর, সোনাদীঘি বা গণকপাড়া এলাকায় সমাবেশের জন্য অনুমতি চেয়েছিলাম। তারা জনসমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের ভয়ে সেসব স্থানে অনুমতি দেয়নি।’
মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন বলেন, বিএনপিকে ভয় পায় বলেই সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের ভয়ে বাস মালিক ও শ্রমিকদের দিয়ে সরকার ধর্মঘট পালন করছে। সরকারি ধর্মঘট উপেক্ষা করে মানুষ সমাবেশে অংশ নেবে।
এদিকে বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে সোমবার দুপুরে রাজশাহীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিএনপি। নগরীর একটি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, সমাবেশ পণ্ড করতে বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। সকাল থেকে হঠাৎ রাজশাহী থেকে দেশের সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এর আগেও বিএনপির সমাবেশ ঘিরে এ রকম করা হয়েছিল। এর কারণ বিভাগীয় সমাবেশে যেন মানুষ না আসতে পারে। এটি বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ নস্যাৎ করার অপচেষ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মঙ্গলবারের বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ এমপিসহ আট জেলার বিএনপির নেতারা অংশ নেবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফা, রাজশাহী মহানগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, সদস্য সচিব বিশ্বনাথ সরকার, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন উজ্জ্বল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।