বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রথমবার স্বর্ণ চুরি করে পার পেয়ে গেলেও দ্বিতীয়বারে রক্ষা হয়নি। দোকান মালিকের সন্দেহ হওয়ায় তাদের আটক করে তল্লাশি চালিয়ে স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে একমাস আগে চুরির বিষয়টিও নিশ্চিত হয়। এ ঘটনার পর তাদের পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
এমন ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলা সদরে আপন অর্নামেন্টস নামক একটি জুয়েলারি দোকানে। এ ঘটনায় দোকান মালিক জয়নাল আবেদীন আপন বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করলে মঙ্গলবার বিকেলে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান মোসা. আরজ খাতুন (৫২), একই গ্রামের ফররুখ আহম্মদের ছেলে শাহাদত হোসেন (২০) ও কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকার মৃত রাসেল মিয়ার স্ত্রী পাখি বেগম (৩৫)।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলা সদরের আপন অর্নামেন্টস নামক জুয়েলারি দোকান থেকে ৩ ভরি ওজনের ২টি স্বর্ণের চেইন, ১ জোড়া কানের দুল চুরি হয়। ওইদিন রাতে স্টক হিসেবে গড়মিল দেখে সিসিটিভি ফুটেজে নারী চোরের মাধ্যমে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হয় দোকান মালিক। কিন্তু তাদের হদিস পাওয়া যায়নি।
ঘটনার এক মাস পর সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুনরায় তারা এ দোকানে আসে। স্বর্ণক্রয়ের লক্ষ্যে দেখার একপর্যায়ে কৌশলে একটি নাকফুল ও একটি আংটি চুরি করে দোকান ত্যাগ করে। এ সময় স্বর্ণ গুছিয়ে রাখার সময় গড়মিল দেখে তাদের ডেকে এনে তল্লাশি করে নাকফুল ও আংটি উদ্ধার করা হয়। পরে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আগের চুরির ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত হয়।
দেবিদ্বার থানার ওসি জহিরুল আনোয়ার জানান, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে একমাস আগে চুরির ঘটনায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দোকান মালিক বাদী হয়ে ৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেন। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করলে বিজ্ঞ বিচারক জেল-হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন।
এদিকে দৈনিক কক্সবাজার অনলাইন পত্রিকা সূত্রে জানা যায়, আলোচিত উপক‚লীয় দস্যুরাণী আরজ খাতুন গ্রেফতারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্বস্তির নি:স্বাস ফেলেছেন এলাকাবাসী। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। তার বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ টু-শব্দ করে না। এতোদিন আরজ খাতুন একজন প্রভাবশালী নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
গত বছরের ২৪মে আরজ খাতুনের নির্দেশে যুবলীগ নেতা আনছুর চকরিয়ার ঢেমুশিয়ায় এক বৃদ্ধকে বিবস্ত্র করে অমানবিক নির্যাতন করেন। নির্যাতনের চিত্র ভিড়িও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন। ভিডিওটি মুহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এলাকাবাসীরা জানায়, চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নটি এখন অপরাধীদের স্বর্গ রাজ্যে পরিনত হয়েছে। এমন কোন দিন নেই ঘটনা ছাড়া। কোন না কোনা ঘটনা ঘটছেই। আরজ খাতুনের সহযোগি সন্ত্রাসী আনছুর নেতৃত্বে দা-বাহিনী, সেলিম বাহিনী, ডালিম বাহিনী, শহিদ বাহিনী ও খোকন বাহিনী নামের বেশ কয়েকটি বাহিনী রয়েছে। এসব বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে দস্যুরাণী আরজ খাতুন। যাদের কাজ ডাকাতি, দখলবাজি, ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসাবে কাজ করা, কাউকে তোয়াক্কা না করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, উক্ত বাহিনীর কারণে এলাকাবাসী চলাচলে সবসময় আতঙ্কে থাকে। কারণ আনছুর, সেলিম, ডালিম, শহিদ ও খোকনকে চাঁদা না দিলেই শান্তিতে কেউ থাকতে পারেনা। লবণ মাঠ, মাছের ঘেরসহ প্রত্যেকটি ব্যবসায় তাদের চাঁদা দিয়েই করতে হয়।
বিগত সময়ে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়ে সে দীর্ঘদিন ধরে কারাভোগ করেছে। আরজ খাতুন বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় কাউকে পরোয়া করেনা। বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, মাদক ব্যবসাসহ এমন কোন অপকর্ম নাই যা সংগঠিত করছে না। এলাকার সবাই কোনঠাসা এ বাহিনীর কাছে। আরজ খাতুন বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে বহু মামলা চলমান রয়েছে। স্থানীয় প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল আলমকে নির্যাতনের ঘটনায় আরজ খাতুন বাহিনীর অপকর্ম উঠে আসে পুরো উপজেলায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।