শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
হাসি ইকবাল
হে নিয়তি!
মানবতা আজ কোথায়?
কাঁটাতারে ঝোলে
অমানবিক বর্বরতায়?
নাকি বিকৃত পন্থার শিশুহত্যায়?
এ কেমন স্বার্থান্বেষী সমাজ!
মলদ্বারে কমপ্রেসার মেশিন ঢুকিয়ে
শিশুর পেটে বাতাস ভরে নির্মমভাবে হত্যা করে!
পানির বদলে খেতে বলে শরীরের লবণাক্ত ঘাম কিংবা মূত্র
ক্ষমা করো শিশু রাজন, ক্ষমা করো সামিউল, রাকিব
আমরা কবে যেন মানুষ ছিলাম ঠিক মনে করতে পারছি না।
ডিজিটাল সভ্যতা! তবে কি পশুর চেয়ে অধম আমরা?
চলছে ডিজিটাল কায়দায় মধ্যযুগীয় বর্বরতা
নেমে যাচ্ছি আমরা নিন্ম থেকে নিন্মস্তরে
প্রায় নিষ্ক্রিয় মনুষ্যত্ব।
নিজেকে ভুলে যাই
মুহাম্মদ ফরিদ হাসান
আজকাল গল্প ভুলে গেছি
একটা বিষণœ দুপুরের রঙভরা গল্প
ধোঁয়াওড়া চায়ের গল্প
ভুলে গেছি পথ হারানো রাতের প্রহর, পদাবলি।
সাঁতার শিখেছি শৈশবে, মনে নেই কৌশল কোমল
ভুলে গেছি প্রেমিকার চোখ
নরম জ্যোৎস্নার অবিরাম প্রহার
মুছে গেছে উদ্দাম ঘুড়ির লেজ, ধুলোয় ধুলোয় বিক্ষত বিকেল।
আজকাল নিজের নাম হারিয়ে যায়
স্মৃতি থেকে মুছে যায় অশ্রুমালা, সংসার
এপথ ওপথ হন্যে হয়ে ঘুরেফিরি
পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ওড়ে, উড়ে যায়
লাল চোখ কালো ভ্রু রক্তিম মুখগুলো...
আজকাল ভুলে যাই নিজেকে নিজেই
ডাস্টারে মুছে রাখি জীবন
মুছে থাকি চিরপুরাতন এই আমি...
শহর ছেড়ে পালিয়ে যাই
নাসির আহমেদ
গাঢ় নীল পূর্ণিমার প্রতিরাতের শেষপ্রহরে
ঘুমের ঘোরে আমি যখন তোমার স্বপ্নে বিভোর-
আমার শিওরের পাশে বসে মাথায় হাত বোলানোর সময়
একটিবারও কি তোমার মনে হয়নি
এ আমি এক জলজ্যান্ত মৃতদেহ!
নির্মেঘ আকাশে মেঘের হাহাকারে
আমিও এক নিঃসঙ্গ পদাতিক হেঁটে বেড়াই-
এক অনুভূতিহীন নারীর দেয়া কষ্ট নিয়ে।
এই তুমিই তো সেই-ই তুমি!
মায়ায় জড়িয়ে বলেছিলে-
ঐ শহরে বড্ড ধুলোবালু
ওখানে কাকডাকা ভোরে উঠে পাখি দেখার সুযোগ নেই,
অন্তরীক্ষের দিকে চেয়ে থাকার জায়গা নেই
ঐ প্রাণহীন শহরে অত দূরে আমার বাবা আমাকে কিছুতেই যেতে দিবে না,
আমি আমার বাবার মনে কষ্ট দিয়ে তোমার সাথে অত দূরে থাকতে পারব না।
শুনেছি, সেই তুমি-ই আজ এই শহরের অলিগলি সব চেন!!
আমি আজ নেই- কোথাও নেই
ছায়ায় নেই, মায়ায় নেই
আমি খুব সম্ভবত তোমার কোথাও নেই।
অথচ তুমি আছো আজ আমার সেই শহরজুড়ে,
শুধু আমিই নেই।
নিঃসঙ্গ এক পদাতিক হেঁটে চলি না জানা প্রান্তরে
নীলবসনা এক আয়তলোচনা নারীর ছবি প্রচ্ছদে এঁকে।
একদিন এসেছিল ঘুমিয়েছিল হৃদভূমিতে-
আজ সে ই থাকুক এই শহরজুড়ে
আমি-ই বরং পালিয়ে যাই প্রিয় শহর ছেড়ে;
প্রিয় শহর, এক প্রাণহীন সাদাটে শহর।
রুবাইয়াতে আকুতি-৪
সৈয়দ রনো
আমার যখন কেউ থাকে না
আমায় যখন কেউ বুঝে না
আমায় নিয়ে কেউ ভাবে না
তখন ভাব তুমি
তাই তো তুমি জগতে সেরা
তোমায় ভেবে কাবার পাথর
ক্লান্ত দেহে চুমি।
আমার পাশে কেউ থাকে না
অন্ধকারে ডুবি
তুমি তখন রাস্তা দেখাও
ভালো লাগে খুবই।
আমার পাশে কেউ থাকে না
দু চোখ যখন বুঝি
গভীর ধ্যানে নীল আকাশে
তোমায় তখন খুঁজি।
আমায় যখন কেউ থাকে না
তখন থাকো তুমি
তাই তো তোমায় আগলে বুকে
সকাল দুপুর চুমি।
আমার দেহের ফুলদানিতে
তুমি শ্রেষ্ঠ ফুল
সাত সমুদ্রে ভাসছে দেহ
তুমি দেখাও কূল।
তুমি আমার দেহের তারা
অন্ধকারের আলো
তোমায় ছাড়া এই ধরাধাম
কুচবিহারের কালো।
সবাই আমায় তুচ্ছ ভাবে
তুমি ভাব ফুল
তাই তো কানে পরে আছ
যেমন পরো দুল।
তুমি আমার সাতমণিহার
তুমি আমার সুখ
তুমি আমার সন্ধ্যাতারা
পবিত্র এক মুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।