পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আল জাজিরার সম্প্রচার বন্ধ নিয়ে করা রিট আবেদনটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দিয়েছেন অ্যামিকাস কিউরি। বাংলাদেশে আলজাজিরার সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিটের গ্রহণযোগ্যতার ওপর শুনানিতে অংশ নেন অ্যামিকাস কিউরির দায়িত্ব পাওয়া কামাল উল আলম, এ জে মোহাম্মদ আলী ও ফিদা এম কামাল। এই তিন জনই রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দিয়েছেন। এ বিষয়ে আরো তিনজন অ্যামিকাস কিউরির মত নেয়ার পর এ বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত জানাবেন। কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধে ও ভিডিও সরাতে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে নিয়োগ পাওয়া ৬ অ্যামিক্যাস কিউরি তাদের মতামত তুলে ধরেছেন হাইকোর্টে। এসময় সিনিয়র আইনজীবী কামাল উল আলম তার মতামত তুলে ধরে জানিয়েছেন, আলজাজিরার প্রচারিত তথ্যচিত্র ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বলা হচ্ছে। অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিবেদনটিতে তার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে কোনো যোগসূত্র দেখাতে পারেনি।
গতকাল সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে আইনজীবী কামাল উল আলম এমন মতামত তুলে ধরেন। আদালতে গতকাল রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন রিটকারী ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমন। বিটিআরসির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন খন্দকার রেজা- ই রাকিব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ মো. রাসেল।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে আল–জাজিরার প্রচারিত তথ্যচিত্র ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রসঙ্গে সিনিয়র আইনজীবী কামাল উল আলম হাইকোর্টকে বলেন, ঘণ্টাব্যাপী একটি প্রতিবেদন স¤প্রচার করা হলো। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম বলা হচ্ছে। অভিযোগ করা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিবেদনটিতে তার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে কোনো যোগসূত্র দেখাতে পারেনি। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তিকে বিতর্কিত করা হলে রাষ্ট্রকেই বিতর্কিত করা হয়। তিনি বলেন, এখানে রিট আবেদনকারীর সংক্ষুব্ধ হওয়ার যৌক্তিকতা নেই। রিটটি গ্রহণযোগ্য নয়। তার পাশাপাশি অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া সিনিয়র আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী ও ফিদা এম কামালও রিট গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দেন। তবে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু রিট আবেদনটির গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে মতামত দেন।
অন্যদিকে আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ক্ষেত্র বিশেষে রিটটি গ্রহণযোগ্য নয় বলে মত দেন। আর আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক রিট আবেদনটির গ্রহণযোগ্যতার বিষয় আদালতের ওপর ছেড়ে দিয়ে বলেন, আদালত চাইলে রিটটি শুনানির জন্য গ্রহণ করতে পারেন।
এরপর আদালত এ মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিনের বক্তব্য শুনবেন বলে মামলার কার্যক্রম আগামী বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত মুলতবির আদেশ দেন।
বাংলাদেশ থেকে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরার স¤প্রচার বন্ধের নির্দেশণা চেয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। একইসঙ্গে রিটে সংবাদমাধ্যমটির প্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ প্রতিবেদনটি ইউটিউব, টুইটার, ফেসবুকসহ সব অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে অপসারণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়। ব্যারিস্টার এনামুল কবীর ইমন এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সচিব, বিটিআরসি‘র চেয়ারম্যান, পুলিশের আইজি সহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বাংলাদেশে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সম্প্রচার বন্ধে ও ভিডিও সরাতে হাইকোর্ট কোন আদেশ দিতে পারে কি না, সে বিষয়ে মতামত জানাতে ৬ জন অ্যামিক্যাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ দেন হাইকোর্ট।
অ্যামিকাস কিউরি হলেন আদালতের আইনি সহায়তাকারী। রিট আবেদনকারীর সংক্ষুব্ধ হওয়ার দিক, রিটের প্রার্থনা অনুসারে এই আদালত থেকে কোনো আদেশ দেওয়া হলে বিদেশি কোনো টিভি চ্যানেলের ক্ষেত্রে তা কার্যকর করা যাবে কি না, কোনো আইনি নোটিশ ছাড়া রিট (ম্যান্ডামাস) চলে কি না, রিটের প্রার্থনা অনুসারে এই আদালত থেকে আল-জাজিরার তথ্যচিত্রটি সব অনলাইন মাধ্যম থেকে বন্ধ করার কোনো নির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না, ১ ফেব্রুয়ারি তথ্যচিত্রটি প্রকাশের পর এত দেরিতে রিট করার প্রেক্ষাপটে কোনো নির্দেশ দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না-এসব বিষয়ে অ্যামিকাস কিউরিদের মতামত দিতে বলা হয়। এরপর ওই নিয়োগ কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় সুপ্রিম কোর্টের ৬ আইনজীবী তাদের মতামত আদালতের সামনে তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, গত ১ ফেব্রুয়ারি ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার্স মেন’ শিরোনামে আল জাজিরায় একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে সরকার ও সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও এই প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, আল জাজিরার প্রতিবেদনটির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে। দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার অসৎ উদ্দেশ্যে এ প্রতিবেদন করা হয়েছে। যারা আগেও দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করেছে, তারাই এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।