পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
তুরস্কের সংবিধান পরিবর্তনের বিষয় জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, ‘তুরস্কের নতুন সংবিধান নিয়ে আলোচনার সময় হয়েছে।’ সোমবার আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট কমপ্লেক্সে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এ কথা জানিয়েছেন। এরদোগান বলেন, ‘পিপলস অ্যালায়েন্সে অংশীদারদের সাথে (এমএইচপি) সমঝোতায় পৌঁছাতে পারলে আমরা একটি নতুন সংবিধান প্রস্তুত করার পদক্ষেপ নেব, যার খসড়াটি হবে স্বচ্ছ।’ সংবিধান সংস্কারের ব্যাখ্যা দিয়ে এরদোগান বলেন, ১৯৬০ সালের পর থেকে দুই দফা সেনা অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে প্রণিত সংবিধানই তুরস্কের বর্তমান সমস্যার ম‚ল কারণ। এরদোগান বলেন, ’এর আগেও বেশ কয়েকবার আমরা সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু বিরোধী সিএইচপি দলের বিরোধিতা করার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।’ তিনি বলেন, সংস্কার মানে পরিবর্তন নয়। বরং যুগ ও দেশের মানুষের চাহিদা বা প্রয়োজন অনুযায়ী সংবিধানকে নবায়ন করা। এর আগে ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুরস্কের সংবিধানের পরিবর্তন আনা হয়েছিল। এরদোগান ও তার সমর্থকরা সে সময় বলেছিলেন, তুরস্কে অতীতের মতো ভঙ্গুর কোয়ালিশন সরকারব্যবস্থা যাতে ফিরে না আসে, তা নিশ্চিত করতে নির্বাহী ক্ষমতাসম্পন্ন প্রেসিডেন্ট প্রয়োজন।এরদোগান বলেন, শিগগির সংস্কার প্রস্তাবনা প্রকাশ করা হবে। সোমবার স্থানীয় আঙ্কারার প্রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্সে দেয়া এক ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। এরদোগান তার বক্তব্যে মুদ্রাবাজারে তুরস্কের লিরার স্থিতিশীলতার দিকে গুরুত্বারূপ করেন। করোনা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে এরদোগান বলেন, আমরা আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলো আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি খুলে দেব। তবে যদি করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় তখন তা পুনরায় বন্ধ করে দেয়া হবে। তুরস্কে গণতন্ত্র আর যাতে বিপন্ন না হয়, যেন ধর্মীয় স্বাধীনতা খর্ব না হয়- তার বিহিত করতেই রাজনৈতিক সংস্কার আনে এরদোগান সরকার। ২০১৬ সালের ১০ ডিসেম্বর তুরস্কের একেপি ও এমএইচপি এ দল দুটি সংবিধান সংশোধনের ২১টি প্রস্তাব সংসদ সদস্যদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে বিল আকারে উত্থাপন করে। তুরস্কে পার্লামেন্ট মেম্বাররা নিজ দলের প্রস্তাবের বিপক্ষেও ভোট দিতে পারেন। সংবিধানের ৯, ৭৫, ৭৬, ৭৭, ৮৭, ৮৯, ১০১, ১০৪, ১০৫, ১০৬, ১১৬, ১১৯, ১২৫, ১৪২, ১৪৬, ১৫৯, ১৬১, ১২৩ আর্টিকেল কেবিনেটের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতে ন্যস্ত ছাড়াও প্রেসিডেন্টকে প্রদেশ সৃষ্টির অধিকার প্রদান করেছে। ১৯২৩ থেকে বহাল প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তনের পক্ষে মত দেয় তুরস্কের জনগণ। গণভোটের রায়ের ওপর ভিত্তি করে সংবিধান সংশোধন হওয়ার পর ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট পদে ভোটাভুটি হয়। এর মধ্য দিয়ে তুরস্কে সংসদীয় পদ্ধতি থেকে প্রেসিডেন্ট শাসিত পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। প্রসঙ্গত, তুরস্কে প্রেসিডেন্টের শাসন ব্যবস্থার চালু আগে দেশটিতে প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকার ব্যবস্থা বহাল ছিল। তবে দেশটির কিছু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান মোটামুটি স্বাধীন ছিল। যেমন সশস্ত্র বাহিনী, বিচার বিভাগ, উচ্চতর শিক্ষা বোর্ড, নির্বাচন কমিশন ইত্যাদি। এসব প্রতিষ্ঠান সরকার কিংবা সরকারপ্রধান কারও মুখাপেক্ষী ছিল না। আর সামরিক দিক দিয়ে মুসলিম বিশ্বের শক্তিধর এ দেশটিতে সবচেয়ে প্রভাবশালী ছিল ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল’। দেশের নীতি নির্ধারণী বিষয়গুলো এর সভাপতি প্রেসিডেন্ট এবং সেনা, নৌ, বিমান বাহিনী ও ‘জানদারমা’ প্রধান এর সদস্য। নির্বাচিত সরকারের পক্ষে থাকেন প্রধানমন্ত্রী ও দু’-একজন সিনিয়র মন্ত্রী। দেশ পরিচালনার দিকনির্দেশনা ম‚লত ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল থেকেই আসতো। এর কারণে তুরস্কের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে’ ক্রমিক নং ১-এ প্রেসিডেন্ট, ২-তে প্রধানমন্ত্রী, ৩-এ জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং ৪-এ তিন বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব জেনারেল স্টাফ, যিনি তার নিজের মন্ত্রী অর্থাৎ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরও সিনিয়র। যেহেতু কামাল আতাতুর্ক নিজে এ বিধান প্রবর্তন করে গেছেন, তাই এর পরিবর্তনে কেউ সাহস দেখায়নি। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও লকডাউনের প্রভাবের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্য আমদানি চাহিদা বেড়েছে। এ বিষয়টা সামনে রেখে এ বছর ২০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্য রফতানির পরিকল্পনা করেছে তুরস্ক। ২০২০ সালে খাদ্যশস্য, ডাল ও তাজা সবজি-ফলের ক্ষেত্রে রফতানির উচ্চ রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। পাস্তা থেকে জুস পর্যন্ত সবধরনের উৎপাদিত খাদ্যের রফতানির আয় ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়কালে বেড়ে ১৮ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে চার দশমিক দুই ছয় ডলার উদ্বৃত্তি নিয়ে প্রথমবারের মতো খাদ্যখাতে প্রতি টন এক হাজার ডলারের বেশি ম‚ল্য ছাড়িয়েছে। তুরস্কের ফেডারেশন অব ফুড অ্যান্ড ড্রিংক ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল ইকনুর মেনলিক বলেন, খাদ্য শিল্পের জন্য সঙ্কট সর্বদাই আলোচ্য বিষয়। আগে থেকেই মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে করোনাভাইরাস মহামারীতে খাদ্য শিল্প সহজেই খাপ খাওয়াতে সক্ষম হয়। দুগ্ধজাত খাদ্য উৎপাদনসহ নতুন নতুন কারখানা চালু করা হচ্ছে। আনাদোলু, ইয়েনি শাফাক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।