মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
হংকংয়ের নাগরিকদের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ ন্যাশনাল (ওভারসিজ) পাসপোর্টের স্বীকৃতি বন্ধ করে দেবে চীন। হংকংয়ে বেইজিংয়ের কথিত দমনপীড়নের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্য যখন তাদের সাবেক কলোনীর বাসিন্দাদের জন্য নিজেদের পাসপোর্ট দেয়ার কথা জানিয়েছে, তখনই চীনের পক্ষ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া আসল। গত শুক্রবার তারা তাদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
আজ রোববার থেকে হংকংয়ের যেসব নাগরিক বিএন (ও) পাসপোর্টধারী তারা এবং তাদের পোষ্যরা অনলাইনে ব্রিটিশ ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন শুরু করতে পারবেন। এর ফলে তারা ব্রিটেনে বসবাস ও কাজকর্ম করতে পারবেন। এ ভিসায় প্রায় তিন লাখ নাগরিক হংকং ছেড়ে যুক্তরাজ্য যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হংকংয়ের ব্রিটিশ জাতীয় (বিদেশি) পাসপোর্টধারীরা এবং তাদের ঘনিষ্ঠজনরা স্মার্টফোনের অ্যাপ ব্যবহার করে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। পাঁচ বছর পর তারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার যোগ্যতা অর্জন করবেন। ব্রিটেনের নতুন এ অভিবাসন প্রকল্পটি গত বছর হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থীদের বিরুদ্ধে চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইন জারি করার সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে।
১৯৯৭ সালে ব্রিটেন নিজেদের উপনিবেশ হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তরের সময় হংকংকে ৫০ বছরের জন্য কিছু মৌলিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন দেয়া হবে এমন শর্ত দিয়েছিল। চুক্তিতে নিজেদের প্রাক্তন উপনিবেশের প্রতি নিজেদের নৈতিক দায়িত্ব বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার চীন আগের সেসব শর্ত রক্ষা করা হবে না বলে প্রকারান্তরে জানিয়ে দেয়।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, ৩১ জানুয়ারি থেকে চীন আর তথাকথিত বিএন (ও) পাসপোর্ট মানবে না। ব্রিটেন যদি বাড়াবাড়ি করে তাহলে চীন আরো কঠিন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। কঠিন পদক্ষেপটা কী হবে, সেটা অবশ্য বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়নি। তবে এর মধ্য দিয়ে যে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক তিক্ত হতে যাচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে।
হংকংয়ের নাগরিকরা অবশ্য চীন ভ্রমণকালে হংকংয়ের পাসপোর্টই বহন করে থাকে। কেবল বিদেশ ভ্রমণে গেলে তখন বিএন (ও) পাসপোর্ট ব্যবহার করে। হংকং বিশেষজ্ঞ উইলি লাম বলেন, হংকং ইস্যুতে যুক্তরাজ্যসহ বিদেশি দেশগুলো যাতে নাক না গলায় সে ব্যাপারে চীনের পক্ষ থেকে এটা একটা বিশেষ বার্তা।
জাতীয় নিরাপত্তা আইনটির প্রতিক্রিয়া হিসাবে গত গ্রীষ্মে এ প্রকল্পটি ঘোষণার পর থেকে সিদ্ধান্তটি হংকং ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য কয়েক হাজার মানুষকে প্রভাবিত করবে কিনা তা এখনও পরিষ্কার নয়। হংকংয়ের নাগরিক এবং বিদেশী বাসিন্দাদের একটি স্মার্টকার্ড আইডি ব্যবহার না করে হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়ার সময় পাসপোর্ট দেখাতে হবে না।
হংকংয়ের জাতীয়তার ওয়েব বিষয়টি আরও জটিল করে তুলতে পারে যেহেতু সমস্ত নাগরিক চাইনিজ পাসপোর্ট রাখেন না, যদিও মূল ভূখন্ডের সাথে ঐতিহাসিক পারিবারিক সম্পর্কযুক্ত সমস্ত হংকংবাসীকে বেইজিং চীনের নাগরিক হিসাবে বিবেচনা করে। কয়েক লাখ মানুষ, যার মধ্যে প্রধানত ৩ লাখ কানাডিয়ান এবং ১ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ছাড়াও দ্বৈত নাগরিকের পাশাপাশি এ শহরের প্রায় ৩০ লাখ বিএনও নাগরিক রয়েছেন।
বিএনও নাগরিকরা হংকংয়ে আজ রোববার থেকে একটি ইমিগ্রেশন স্কিম অনলাইনে যুক্ত হয়ে তাদের পরিবারকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যেতে আবেদন করতে পারবেন। এরপর ২৩ ফেব্রæয়ারি থেকে একটি স্মার্টফোন অ্যাপে যুক্ত হওয়া যাবে।
গত শুক্রবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পটির প্রশংসা করেন। তিনি বলেছেন, এটি তার প্রাক্তন নাগরিকদের প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুত সম্মান। বরিস জনসন বলেন, ‘আমি অত্যন্ত গর্বিত যে, আমরা হংকং বিএনওদের জন্য আমাদের দেশে বাস করতে, কাজ করতে এবং তাদের বাড়ি তৈরির জন্য এ নতুন পথে নিয়ে এসেছি’। ‘এটি করার মাধ্যমে আমরা হংকংয়ের জনগণের সাথে আমাদের ইতিহাস এবং বন্ধুত্বের গভীর বন্ধনকে সম্মানিত করেছি এবং আমরা স্বাধীনতা এবং স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে দাঁড়িয়েছি’।
কর্মকর্তাদের অনুমান, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে হংকং থেকে ১০ লাখেরও বেশি লোক যুক্তরাজ্যে আসতে পারে। এ প্রকল্পের আওতায় যুক্তরাজ্য অনুমান করে, প্রায় ৩০ লাখ হংকংবাসী ও তাদের উপর নির্ভরশীলরা পাঁচ বছরের জন্য ব্রিটেনে চলে যেতে এবং পুরো নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে।
বেইজিং কর্তৃক আরোপিত বিতর্কিত জাতীয় সুরক্ষা আইনটি হংকংয়ে কার্যকরভাবে রাজনৈতিক স্বাধীনতা কমাতে কার্যকর হওয়ার সাথে সাথেই বিএনও প্রকল্পটি প্রথম ঘোষণা করা হয়েছিল।
চীন বলেছে, নাগরিকত্বের পথটি আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং এর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে। হংকংয়ের অসন্তুষ্ট লাম উইং যিনি ২০১৯ সালে তাইওয়ানে চলে এসেছিলেন এবং গত বছর তার বইয়ের দোকান কজওয়ে বে বুকস পুনরায় চালু করেছিলেন, তিনি গার্ডিয়ানকে বলেন, তিনি ভাবেন যে, এ স্কিমটি ইতোমধ্যে তাইওয়ানে চলে গিয়েছিল এমন যুবকদের জন্যও বেশ কাজে আসবে। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, এনডিটিভি ও রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।