Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শি জিনপিংয়ের টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ

চীনে তৃণমূল পর্যায়ের নিহিত গণতন্ত্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ১৯৯৮ সালে চীনের গ্রামবাসীদের তাদের নেতা নির্বাচনের প্রস্তুতিতে বলেছিলেন, ‘আমি পরাজয়ের চেয়ে জয় বেশি পছন্দ করি। তবে যখনই কোনো নির্বাচন হয় এবং জনগণ সিদ্ধান্ত নেয়, প্রত্যেকেই জয়ী হয়।’ সেসময় পশ্চিমা নেতারা গ্রামীণ গণতন্ত্র নিয়ে চীনের নতুন এবং বহুল প্রত্যাশিত পরীক্ষায় উদ্দীপ্ত হয়েছিলেন। পশ্চিমা নেতারা আশা করেছিলেন যে, এটি দেশটিকে একটি বিস্তৃত রাজনৈতিক পরিবর্তনের দিকে পরিচালিত করবে। গণতন্ত্র চর্চায় চীনে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে, তবে, পশ্চিমা ধাঁচে নয়।

চীনের গণতান্ত্রিক নির্বাচন এমন একটি প্রক্রিয়া যা, বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে সম্পূর্ণভাবে সম্পন্ন হতে কয়েক মাস সময় নেয় এবং গত বছরের পল্লী নির্বাচনে চীনের ক্ষমতাসীন দল চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টিকে তৃণমূল পর্যায়ে বিজয় নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক চেষ্ট চালাতে হয়েছে। চীনের পল্লী অঞ্চলে বসবাসরত ৫শ’ ৫০ মিলিয়ন মানুষের কাছে নির্বাচনের ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গ্রামের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সিদ্ধান্ত মানুষের জীবন-জীবিকার উপর বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে।

চীনে একনায়কতন্ত্র বিরাজমান থাকলেও দেশটির তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্র চর্চা রয়েছে। আর এখানেই চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীনের আইন বলে যে, চীনের ক্ষমতাসীন সরকারের গ্রাম প্রতিনিধি বেছে নেয়ার সময় সাধারণ গ্রামবাসীর মতামত আবশ্যক। দেশটির আইন অনুযায়ী, গ্রাম প্রধানের পদে নির্বাচনের বিজয়ী হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোট প্রয়োজন এবং নির্বাচনকে বৈধ করতে হলে, নিবন্ধিত ভোটারদের অন্তত ৫০ শতাংশকে ভোট দিতে হবে।

পাশাপাশি, চীনের নাগরিকরা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার ফলে এবং নিজেদের নাগরিক অধিকার এবং রাজনৈতিক সচেতনতার ফলে চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে জনসমর্থন ধরে রাখতে খুব সাবধানতার সাথে নীতি নির্ধারণ করতে হচ্ছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এবং নির্বাচনগুলিতে পছন্দসই ফলাফলের প্রত্যাশায় দলটি কিছু কঠোরতা অবলম্বন করছে, যার ফলে ক্ষতাসীন দলের সদস্য হতে গেলে বা গ্রাম প্রধান পদে নির্বাচন করতে হলে গ্রামবাসীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠা এবং কঠোর পরিশ্রম করা আবশ্যক।

এছাড়া, তারা গ্রাম প্রধানদের ৩ বছরের পরিবর্তে ৫ বছরের জন্য দায়িত্বে রাখার আইন চালু করেছে। দেশটির নীতি নির্ধারকরা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, বারবার ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করে উন্নয়ন বিঘিœত না করে, এক ব্যক্তির জন্য ৫ বছরের মেয়াদ দেশটির পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে সহজতর হবে। তবে, অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, একজন ব্যক্তির হাতে এত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার ফলে ক্ষতিকর সিদ্ধান্তগুলি যাচাই বাছাই করা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দলের কাছে এটি পরের সমস্যা। আগে দলটিকে জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে হবে। সূত্র : দ্য ইকোনমিস্ট।



 

Show all comments
  • তাসফিয়া আসিফা ২৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
    সারা বিশ্বে এখন গণতন্ত্র নয় উন্নয়ন তন্ত্র চলছে।
    Total Reply(0) Reply
  • মশিউর ইসলাম ২৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১:০৫ এএম says : 0
    পশ্চিমা গণতন্ত্র এখন ভোতা হয়ে গেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • কাজী হাফিজ ২৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 0
    জিনপিং একজন সফল সৈরশাসক।
    Total Reply(0) Reply
  • বাতি ঘর ২৩ জানুয়ারি, ২০২১, ১:০৭ এএম says : 0
    এখন গোটা বিশ্বে গণতন্ত্রের আড়ালে নব্য সৈরতন্ত্র চলছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ