নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ফের দেশের দ্রুততম মানব হয়েছেন মো. ইসমাইল হোসেন এবং দ্রুততম মানবীর খেতাব জিতেছেন শিরিন আক্তার। দু’জনই বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কৃতি অ্যাথলেট। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া জাতীয় সিনিয়র অ্যাথলেটিক্সের উদ্বোধনী দিনেই অনুষ্ঠিত হয় আসরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্ট পুরুষ ও নারী বিভাগের ১০০ মিটার স্প্রিন্ট। এদিন বিকালে ইসমাইল ১০.৫৫ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌঁড় শেষ করে দ্রুততম মানবের হ্যাটট্রিক খেতাব জেতেন। এই ইভেন্টে সর্বশেষ তিন আসরেই সেরা ইসমাইল। অন্যদিকে নারী বিভাগে শিরিন ১১.৮০ সেকেন্ড সময় নিয়ে টানা ১১বারের মতো দেশের দ্রুততম মানবীর খেতাব জিতলেন।
স্প্রিন্টের রাজা হলেও সময়ে কিন্তু তেমন উন্নতি হয়নি ইসমাইলের। তবে করোনাকালে এ সময় নিয়েই সন্তুষ্ট তিনি। তাই দৌঁড় শেষ করে সাংবাদিকদের ইসমাইল বলেন,‘করোনাকালে প্রায় ৮ দেশের খেলাধুলা বন্ধ থাকায় এই সময়ে অনুশীলন করা খুব কঠিন ছিল। যদিও করোনার প্রভাব এখনো কমেনি। তারপরও অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে অনুশীলন করে স্প্রিন্টে সেরা হয়েছি। আমি খুশি দ্রুততম মানবের খেতাবটা ধরে রাখতে পারায়। আশাকরি আসন্ন বাংলাদেশ গেমসে সময় কমাতে পারবো।’
১০০ মিটার স্প্রিন্টের স্বর্ণজয়ী এই অ্যাথলেট আরো বলেন, ‘আমরা যেহতু সার্ভিসেস দলের অ্যাথলেট, তাই আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকতে হয়। তবে করোনাকালে কর্তৃপক্ষ অনেক সাপোর্ট দিয়েছে আমাদের। অ্যাথলেটরা কিভাবে অনুশীলন করতে পারে সে দিকে খেয়াল রেখেছিলেন কর্মকর্তারা। অনেক নিয়ম-কানুনের মধ্যে থেকে আমরা অনুশীলন করেছি।’
ইসমাইল যোগ করেন, ‘এই পর্যায়ে এসে বলবো সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে স্বর্ণ জেতা সম্ভব। এসএ গেমসে যারা স্বর্ণ জিতেছেন, তাদের সঙ্গে পয়েন্ট ২০ মাইক্রোসেন্ডের ব্যবধান ছিল। আমি দৌড়েছি ১০.৭০ সেকেন্ডে। আর তারা ১০.৫০ সেকেন্ডে। পয়েন্ট ২০ মাইক্রোসেকেন্ড বেশি। ওরা বিদেশে দীর্ঘদিন অনুশীলন করে সাফল্য পেয়েছে। আমাদের যদি বিদেশে দীর্ঘদিন অনুশীলন করানো হয়,তাহলে আমরাও সেরা হতে পারবো। তাছাড়া এখানে টাইমিংটা ভাল না হওয়ার জন্য টার্ফের দোষ রয়েছে। এই টার্ফে পুষ করলে রিটার্ন দিচ্ছে না। যে কারণে শক্তিটা চলে যাচ্ছে।’
অতীতে দীর্ঘদিন দেশের দ্রুততম মানবীর খেতাবটা ছিল নাজমুন্নাহার বিউটির দখলে। তিনি ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দেশের দ্রুততম মানবী হয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন। জাতীয় ও সামার অ্যাথলেটিক্সে টানা ১১বার সেরা হয়ে এবার বিউটির রেকর্ডে থাবা বসানোর অপেক্ষায় আছেন শিরিন। তবে টানা রেকর্ডটি নিজের বলেই দাবী করলেন নৌবাহিনীর অ্যাথলেট শিরিন আক্তার। তার কথায়, ‘ বিউটি আপুর রেকর্ড না, আমি নিজেই নিজের রেকর্ড বারবার ভেঙ্গেছি। এর আগে সুফিয়া ম্যাম ও লাভলী আপার ছিল টানা সাত বার। সেটিকে টপকে আমি ১১তে উন্নীত করেছি।’ কিন্তু এবার সেরা হয়েও নিজের টাইমিং নিয়ে খুব একটি খুশী নন শিরিন, ‘আমার কোচ আবদুল্লাহ হেল কাফি যদি খুশি হন, তাহলে আমিও খুশি। তবে তিনি নিশ্চয়ই আরো ভালো টাইমিং আশা করেছিলেন। আমি মোটামুটি খুশি। সামনেই বাংলাদেশ গেমস, আমি চেষ্টা করবো ওই গেমসে আরো ভালো টাইমিং করতে। ইনশাল্লাহ আমি তা পারবো।’
টানা সাফল্যের রহস্য নিয়ে শিরিন বলেন,‘কম্পিটিশন ছিল না। তবে করোনাকালে সেনাবাহিনী এবং নৌবাহিনীতে ভালো অনুশীলন হয়েছে। আমি নিজে অবশ্য অনুশীলন করেছি বিকেএসপিতে। আমার টানা সাফল্যের পেছনে নৌবাহিনীর অবদান অনেক।’ ভবিষ্যতে লক্ষ্য কি? এই প্রশ্নে শিরিনের উত্তর, ‘১০০ মিটারে আমার ইলেকট্রনিক্স টাইমিং ১১.৯৯ সেকেন্ড। এটা বাংলাদেশেরও রেকর্ড (গৌহাটি-শিলং এসএ গেমস, ২০১৬)। আমার ইচ্ছা এই সময়কে অতিক্রম করা। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্রুততম মানবী হওয়াই আমার প্রধান লক্ষ্য। এজন্য আগামী দুই-তিন বছরের মধ্যে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো। কঠোর অনুশীলন করে এসএ গেমসে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সেরা দেশের মান বাড়াতে চাই।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।