পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
আয়া সোফিয়াকে যখন মসজিদ ঘোষণা করা হয় সে সময়, গ্লি নামের একটি বিড়াল রাতারাতি ইন্টারনেট সেলিব্রিটি হয়ে যায় বিশ্বব্যাপী। তুর্কী প্রশাসনও বিড়ালটিকে মসজিদ থেকে না তাড়িয়ে সেখানে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। এমনই প্রাণীদের প্রতি তুর্কীদের মমতা। এমন প্রাণী আর পাখি তুর্কি ঐতিহ্যের অংশে পরিণত হয়েছে। পাখি নিয়ে তুরস্কে একটি ঐতিহ্য সারা বিশ্বে বিশেষভাবে প্রশংসা অর্জন করেছে।
ইসলামের প্রাথমিক যুগে শীতের মৌসুমে তুরস্কের পাহাড়ের চূড়াগুলো তুষারে ঢেকে যাওয়ায় পাখিদের খাদ্যের অভাব দেখা দিত। তখন খাবারের অভাবে হাজার হাজার পাখি মারা যেত। এখন অবশ্য সেই অবস্থা নেই। শুভ্র তুষারের চাদর যখন সবকিছুকে ঢেকে ফেলে তখন তুরস্কবাসী পাহাড়ে গিয়ে পাখিদের জন্য শস্যদানা ছিটিয়ে দেয়। এটি একটি অতিপ্রাচীন ইসলামী ঐতিহ্য যা এখনো তুরস্কে প্রচলিত।
এই অসাধারণ প্রথাটি সবার প্রথম চালু করেছিলেন উমাইয়া বংশীয় মুসলিম খলিফা উমার ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.)। অনেক ঐতিহাসিক বইয়ে বর্ণিত আছে খলিফা উমার ইবনে আবদুল আজিজ বলেছিলেন, “পাহাড়ের চূড়ায় গিয়ে পাখিদের জন্য খাদ্য ছিটিয়ে দাও। মুসলিম শাসনের অধীনে একটি পাখিও যেন না খেয়ে মারা না যায়।
আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টিকৌশলের এক মহা নিদর্শন অনিন্দ্যসুন্দর ও পরম আকর্ষণীয় পক্ষীকুল। আকাশে ডানা মেলে পাখিরা উড়ে বেড়ায় এবং নিজস্ব ভাষা ও পদ্ধতিতে সৃষ্টিকর্তার গুণগান করে। পক্ষীকুল মানবজাতির উপকারী, পরিবেশবান্ধব এবং পৃথিবীর সৌন্দর্যের একটি প্রতীক। পাখিরা প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষা করে।
মানবজাতির ন্যায় পশু-পাখিও খাদ্য-পানীয়সহ আল্লাহর অন্যান্য নিয়ামতের অংশীদার। আল-কুরআনে তাদের প্রাপ্য অংশ প্রদানের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘যিনি তোমাদের জন্য জমিনকে বিছানা বানিয়েছেন এবং তাতে তোমাদের জন্য চলার পথ করে দিয়েছেন। আর আসমান থেকে তিনি পানি বর্ষণ করেন; অতঃপর তা দিয়ে আমি বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদ উৎপন্ন করি। তোমরা নিজেরা খাও এবং তোমাদের গবাদিপশু চরাও। অবশ্যই এতে বিবেকবান লোকদের জন্য নিদর্শন রয়েছে (আল-কুরআন ২০:৫২-৫৩)।
এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, একদা নবী করীম সাঃ এমন একটি উটের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যার অনাহারে পেট ও পিঠ একত্র হয়ে গিয়েছিল। তা দেখে মহানবী সা. বললেন, তোমরা এসকল বোবা পশুদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। এদেরকে দানাপানি দিয়ে সুস্থ সবল রাখ ও সুস্থ সবল পশুর পিঠে চড় এবং খাওয়ার সময়ও সুস্থ সবল প্রাণীর গোশত খাও। (সুনানে আবু দাউদ- ২৫৩৯)।
পশু-পাখি আল্লাহর নির্দেশে মানবজাতির বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণ করার পাশাপাশি জীবন পর্যন্ত দিয়ে থাকে। কিন্তু মানবজাতি বিভিন্ন সময়ে তাদের সাথে অমানবিক আচরণ করে। তাদের প্রজনন, লালন-পালন, পরিবহণ, মালামাল বহন, ক্রয়-বিক্রয়, জবাই ও জবাই এর পরবর্তী পর্যায়েও তাদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করে থাকে। ইসলামী শরি‘আহ মানবজাতিকে পশু-পাখির সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর তাদের থেকে উপকার গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।