পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
সেনাবাহিনীর সঙ্গে ক্রসফায়ারে ছেলে নিহত হয়েছেন। নিয়মানুযায়ী ‘জঙ্গি’র তকমা দেওয়া নিহত ছেলের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেনি প্রশাসন। অজানা কোনো কবরস্থানে সমাধিস্থ করা হয়েছে। এদিকে একমাত্র ছেলের লাশের অপেক্ষায় দিন গুনছেন বাবা। চোখের পানি মুছে নিজেই পারিবারিক কবরস্থানে সন্তানের জন্য কবর খুঁড়ে রেখেছেন। আর এখানেই দাফন করতে চান ছেলেকে। বুধবার ভারতের শ্রীনগর লাগোয়া লইয়াপোরা এলাকায় আতার মুস্তাক, জুবের আহমেদ ও আজাজ আহমেদ নামে ৩ জন তরুণ নিহত হয়। সেনাবাহিনীর দাবি, ওই ৩ তরুণ ‘জঙ্গি’ শ্রীনগর-বারামুলা মহাসড়কে হামলার জন্য পরিকল্পনা করছিল। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি অ্যাসল্ট রাইফেল এবং দুটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। সেনাবাহিনীদের এমন দাবি নিহতের আত্মীয়রা মানছেন না। তারা বলছেন, ওই ৩ জন নির্দোষ। ভুয়া সংঘর্ষে তাদের হত্যা করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ উঠেছে। নিহতদের মধ্যে আতার একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ক্রসফায়ারের পর ৪ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও কারো লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, লাশগুলো সেনামর্গের অজানা কোনো জায়গায় সমাধিস্থ করা হয়েছে। এদিকে একমাত্র সন্তানের লাশফেরত দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন নিহতদের পরিবার থেকে। নিহত আতারের বাবা মুস্তাক আহমেদ ওয়ানি ছেলের জন্য কবর খুঁড়ছেন। কবরের মাটি সরাতে সরাতে আতারের বাবা বলেন, ছেলের দেহ ফেরত পাওয়ার অপেক্ষায় থাকব। আমি যাতে পারিবারিক কবরস্থানে সমাধিস্থ করতে পারি। আমার ছেলে নির্দোষ। ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে তাকে। নিজের খোঁড়া কবরে শেষবারের মতো একমাত্র সন্তানকে শুইয়ে দিতে চাইছেন আতারের বাবা। ছেলের দেহ ফেরত পাওয়ার জন্য পুলিশের সঙ্গেও দেখা করতে চান। চোখের পানি আটকে বলেন, দেহ ফেরত না পেলে আত্মহত্যা করব। তার মতো একই কথা বলেন ক্রসফায়ারে নিহত জুবের ও আজাজের পরিবারের সদস্যরা। কাশ্মীর অবজারভার এখবর জানায়। এদিকে ‘ভারতের অবৈধ দখলীকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে’ (আইআইওজেকে) ২০২০ সালে বিচার বহির্ভ‚ত হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ৬৫ কাশ্মীরি বেসামরিক মানুষ। সমাপ্ত বছরে কাশ্মীরে সংঘর্ষে এবং বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছেন কমপক্ষে ৪৭০ জন। বুধবার ‘লিগ্যাল ফোরাম ফর অপ্রেসড ভয়েসেস অব কাশ্মীর’ প্রকাশিত এক রিপোর্টে এ তথ্য দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, গত বছর ১লা জানুয়ারি থেকে ৩০ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত কাশ্মীরে মোট ৪৭০ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৩২ জন স্বাধীনতা যোদ্ধা। ১৭৭ জন ভারতীয় সেনা সদস্য। ৬৫ জন বেসামরিক ব্যক্তি বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকারে পরিণত হয়েছেন। আগস্টে শোপিয়ান জেলায় সাজানো হয়েছিল এক বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা। সেখানে তিন জন শ্রমিককে বিচার বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়। এরপর তাদের শরীরের ওপর অস্ত্র রেখে তাদেরকে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ভারতের সেনারা। কিন্তু বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ে। বোঝা যায়, ওই তিন শ্রমিককে খেয়ালখুশিমতো হত্যা করা হয়েছে। কাশ্মীরে কমপক্ষে ২৭৭৩ জন ব্যক্তিকে ভারতীয় সেনারা আটক ও গ্রেপ্তার করেছে। পুরো বছর তাদেরকে ভারতের বিভিন্ন জেলে রাখা হয়। ভারতীয় বাহিনী ৩১২টি ঘেরাও ও তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে। এর ফলে স্বাধীনতাপন্থি ও নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের সঙ্গে তাদের কমপক্ষে ১২৪টি সংঘর্ষ ঘটে। এসব সংঘর্ষের সময় ভারতীয় বাহিনী কমপক্ষে ৬৫৭টি বাড়ি ভাঙচুর ও ধ্বংস করে। কাশ্মীর অবজারভার, অনলাইন এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।