মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যকার যুগান্তকারী বাণিজ্য চুক্তিটি করোনা পরবর্তী বিশ্বের জন্য চীনের কূটনৈতিক অগ্রাধিকার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানান দিয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত বুধবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল, ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি চার্লস মিশেল এবং ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ফনডার লায়েনসহ ইইউ নেতাদের সাথে ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে এ চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করার পর ওয়াশিংটনকে মনে করে বলেছেন যে, নতুন বছরে চীন ও ইউরোপকে দুটি প্রধান আন্তর্জাতিক শক্তি হিসেবে বাজার এবং সভ্যতার প্রতি দায়িত্ববোধ প্রদর্শন করা উচিত এবং বিশ্ব শান্তি ও অগ্রগতিতে অবদান রাখতে সক্রিয় পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ মাসের শেষের দিকে তার দায়িত্ব গ্রহণের আগেই চুক্তি সম্পন্ন করার বিষয়ে চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ আগ্রহের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভবিষ্যতের সম্পর্ক নিয়ে তাদের কৌশলগত চিন্তাভাবনা প্রতিফলিত হয়েছে। চুক্তি আলোচনার সফল সমাপ্তি চীনের জন্য একটি স্পষ্ট ক‚টনৈতিক জয় এবং এমন এক সময়ে যখন করোনা মহামারি, বিতর্কিত আগ্রাসী কূটনীতি এবং হংকং ও শিনজিয়াংয়ের ওপর আরোপিত নীতিমালাগুলো সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে মিথ্যাচারের কারণে পশ্চিমে চীনের মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হ’ল, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চীনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের বাণিজ্য চর্চার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানোর উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় দেশসমূহ এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে একটি ঐক্যফ্রন্ট গঠন থেকে বিরত রাখতে সহায়তা করবে।
গত মাসের শেষদিকে, যখন আসন্ন চীন-ইইউ চুক্তির বিষয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছিল, তখন বাইডেনের পছন্দের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, আগত প্রশাসন এ চুক্তিতে সন্তুষ্ট নয় এবং ইইউ’র অপেক্ষা করাকে পছন্দ করবে। তবে খুব সম্ভবত বিষয়টি চীন ও ইইউকে পরিকল্পনা অনুযায়ী চুক্তিটি শেষ করতে উৎসাহিত করেছে। পাশাপাশি, ওয়াশিংটনের উদ্বেগকে উপেক্ষা করার ইইউর সিদ্ধান্তটি একটি আকর্ষণীয় সঙ্কেত প্রেরণ করেছে। তা হ’ল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের অপ্রত্যাশিত এবং অস্থিতিশীল শাসনামলের পর এখন ইইউ নিজের স্বার্থ রক্ষা করতে এবং নিজস্ব শর্তে চীনের সাথে মেল বন্ধনে বেশি আগ্রহী।
এ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, চীন ইউরোপীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিকে বৈদ্যুতিক গাড়ি, টেলিকম এবং বিমান পরিবহনের নতুন পরিষেবাগুলির পাশাপাশি বেসরকারী স্বাস্থ্য খাতে কাজ করার অনুমতি দেবে। বৈরী আন্তর্জাতিক পরিবেশ মোকাবেলার জন্য চীনের নতুন কৌশল হ’ল, বিদেশী বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের কাছে নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেয়া, উৎপাদনশিল্প স্থাপনের জন্য আকর্ষণীয় সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি তার অভ্যন্তরীণ বাজারের আরও বড় অংশীদারিত্ব প্রদান করা। এটি বিদেশী বিনিয়োগকারীদের পক্ষে চীনা বাজারকে উপেক্ষা করার সম্ভাবনা পুরোপুরি হ্রাস করবে এবং বেইজিংয়ের সাথে তার মূল অংশীদারদের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি গঠনের পথ তৈরি করবে। গত নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে গঠিত বিশ্বের বৃহত্তম বৃহত্তম বাণিজ্যিক বøক ‘রিজিওনাল ইকোনোমিক কম্প্রিহেনসিভ পার্টনারশিপে’ চীন অন্য ১৪টি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির সাথে যোগদানের পর চীন-ইইউ চুক্তির বিষয়টি সামনে আসে।
এদিকে, শি ইঙ্গিত দিয়েছে যে, চীন পুনর্গঠিত ট্রান্স-প্যাসিফিক পর্টনারশিপেও অনুক‚লভাবে যোগদানের বিষয়ে বিবেচনা করবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চীনকে বাদ দেয়ার লক্ষ্য ছিল। এছাড়াও, বেইজিং এশিয়ার প্রধান দুটি বাণিজ্য অংশীদার জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে একটি পৃথক ত্রিপক্ষীয় মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি গঠনের চেষ্টা করছে। পরিপ্রেক্ষিতে, চীন এখন এ অঞ্চলের প্রভাবশালী অর্থনৈতিক শক্তি হিসাবে তার অবস্থানকে আরও পোক্ত করার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। এ সবই বেইজিংকে আগত বাইডেন প্রশাসনের প্রভাব মোকাবেলায় আরও বেশি সুবিধা দেবে। সূত্র : সাউথ চায়না মর্র্নিং পোস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।