Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের ইউনান প্রদেশে পাঁচশ’ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত রহস্যময় ‘পাথরের বন’!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০, ৭:১৮ পিএম

চীনের ইউনান প্রদেশের পাঁচশ’ বর্গ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এক প্রস্তর অরণ্য। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিস্তৃত ঘন জঙ্গল। শুধু পার্থক্য একটাই। রহস্যময় এ জঙ্গলের রং কালো। কারণ, এ জঙ্গলের গাছগুলো সব পাথর! ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছোট বড় অগণিত প্রস্তর-বৃক্ষ। আগে এই অঞ্চলের নাম ছিল শাইলিন। শাইলিন শব্দের অর্থই হল পাথরের জঙ্গল। চীনের কুনমিং থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে শাইলিন। বাস্তবে পুরো অরণ্যটাই চুনাপাথরের। ২০০৭ সালে ইউনেস্কো এই বনটিকে বিশ্ব প্রাকৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে। - চায়না ডিসকভারি, আনন্দবাজার

গুহার মধ্যে যেমন স্ট্যালাগমাইট গড়ে ওঠে, এই পাথরের বন অনেকটা দেখতে তেমনই । গাছের মতোই মাটি ভেদ করে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সারি সারি পাথর। তাই এই জঙ্গলে প্রবেশ করলে তাজা অক্সিজেনের পরিবর্তে চুনাপাথরের গন্ধ নাকে আসবে। এই অরণ্য ৭টি অঞ্চলে বিভক্ত। জলপ্রপাত, দুটো বিশাল হ্রদ, প্রাকৃতিক গুহা এবং এই পাথরের জঙ্গল সব মিলিয়ে পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। ২০০৭ সালে এই এলাকার দুটো অংশ নাইগু প্রস্তর অরণ্য এবং সুওগেয়ি গ্রাম ইউনেসকো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে ঘোষিত হয়। বিস্ময়কর এই ভূমিরূপ ২৭ কোটি বছরেরও বেশি প্রাচীন। চীনের কুনমিং থেকে বাসে এই স্থানে যাওয়া যায়। প্রতি বছর দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক ভিড় জমান সেখানে। ফলে অনেক হোটেলও গড়ে উঠেছে।

প্রস্তর অরণ্যের সৃষ্টি নিয়ে একাধিক মতবাদ রয়েছে। এই অঞ্চলের আদি বাসিন্দাদের কাছে এক সুন্দরীর অপূর্ণ ভালবাসার সাক্ষী এই অরণ্য। অশিমা নামে ওই তরুণীর ভালবাসা নাকি পরিণতি পায়নি। তাকে অভিশাপ দিয়ে পাথর করে দেওয়া হয়েছিল। সেই দুঃখেই নাকি বাকি সব গাছ পাথর হয়ে যায়। তার সেই করুণ কাহিনির সাক্ষী এই প্রস্তর-অরণ্য। তবে ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এক সময় গভীর জলাশয় ছিল এখানে। জলাশয়ের নীচে নিমজ্জিত ছিল এই পাথরগুলো। ক্রমে জলের স্তর নামতে শুরু করলে জঙ্গলের মতো পাথরগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তার পর দীর্ঘ সময় ধরে বায়ুর সঙ্গে ঘর্ষণে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে এ রকম আকার ধারণ করেছে সেগুলো। প্রতি বছর ষষ্ঠ চন্দ্রমাসের ২৪ তারিখে এই এলাকার বাসিন্দারা এক বিশেষ উৎসব পালন করেন। তাদের লোকনৃত্য এবং কুস্তি পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়। চীন ছাড়াও তুরস্কে এমন পাথরের বিস্ময়কর জঙ্গল দেখতে পাওয়া যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ