পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
অন্য আরব মিত্রদের সামনে ঠেলে দিলেও ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সউদী আরব নিজে যে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে সেই ইঙ্গিত এখন স্পষ্ট। গত দুদিনে সউদী রাজপরিবারের অত্যন্ত গুরুত্বপ‚র্ণ দুই সদস্যের মুখে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যা শোনা গেছে, তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ইসরাইলি নেতারা। সউদী আরব খুব স্পষ্টবাদী যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইলে ফিলিস্তিন বিরোধ সমাধান করতে হবে, ২০০২ সালের আরব শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী স্বাধীন টেকসই একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র হতে হবে। সউদী আরব পিছিয়ে গেলে বাকি আরব দেশগুলোর সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ কী দাঁড়াবে তা নিয়েও ইসরাইলি নেতাদের মনে উদ্বেগ ঢুকছে সন্দেহ নেই। সউদী আরবের নিওম শহরে গত মাসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের মধ্যে গোপন এক বৈঠকের পর পর্যবেক্ষকরা বলতে শুরু করেন যে, সউদী আরব-ইসরাইল ক‚টনৈতিক সম্পর্ক এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। যদিও সউদী আরব ওই বৈঠক হওয়ার কথা অস্বীকার করেছে, কিন্তু ইসরাইল সরকারের মৌনতা এবং পশ্চিমা গোয়েন্দাদের ইঙ্গিতের ভিত্তিতে প্রায় সবাই নিশ্চিত যে বৈঠকটি হয়েছিল। কিন্তু বাহরাইনের রাজধানী মানামায় মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা নিয়ে এক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে শনিবার সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান একটি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে যেসব কথা বলেন, তাতে সউদী মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। প্রিন্স ফয়সাল বলেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র না হলে ইসরাইলের সঙ্গে সউদী আরবের স্বাভাবিক সম্পর্ক হবে না। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সউদীর অবস্থান শক্ত। কারণ হিসেবে সউদী মন্ত্রী বলেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের বিরোধ না মিটলে এ অঞ্চলে সত্যিকারের শান্তি ও স্থিতিশীলতা আসবে না। ২০০২ সালে সউদী উদ্যোগে ওই শান্তি পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে অধিকৃত ফিলিস্তিন ভ‚মি ইসরাইলকে ছেড়ে দিতে হবে এবং প‚র্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন করতে হবে। ইসরাইল সবসময় এ পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের যুক্তি এতে তাদের নিরাপত্তা দারুণভাবে বিঘিœত হবে। সউদীর এ অবস্থানের ফলে ইসরাইলের সঙ্গে অদ‚র ভবিষ্যতে স্বাভাবিক সম্পর্কের সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়ে যাবে। সউদী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিন বিরোধের সমাধানের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। বাহরাইনে ওই সম্মেলনে আরও আক্রমণাত্মক কথা বলেছেন সউদী সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান এবং রাজপরিবারে প্রভাবশালী সদস্য প্রিন্স তুর্কি আল ফয়সাল যিনি সউদী প্রতিনিধিদলের সদস্য ছিলেন। সরাসরি ইসরাইল কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ইসরাইল সবসময় নিজেদের দেখায় যে তারা ছোট একটি দেশ আর চারদিকে শত্রæ। সব দেশ সবসময় তাদের ধ্বংস চায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ইসরাইল নিজে একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। সউদী বাদশাহ সালমানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত প্রিন্স তুর্কি বলেন, এখনও ইসরাইল জবরদস্তি করে ফিলিস্তিনিদের ঘরছাড়া করছে, তাদের গ্রাম ধ্বংস করছে। বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।