Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আইনজীবীদের যা বলেছেন মাওলানা সাঈদী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:০৭ পিএম

সোমবার (৭ ডিসেম্বর) পুরান ঢাকার বকশীবাজারস্থ আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে দুই মামলার শুনানিতে দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীকে আদালতে হাজির করা হয়।

তখন আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াত নেতা মাওলানা দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদী। তিনি বলেন, আদালত ন্যায় বিচার নিশ্চিত করলে খালাস পাবেন তিনি।

মাওলানা দেলোওয়ার হোসেন সাঈদী বলেছেন, মামলার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নাই। আদালত যদি ন্যায় বিচার নিশ্চিত করে তাহলে তিনি খালাস পাবেন। তিনি দেশবাসীকে সালাম জানিয়েছেন এবং তার জন্য দোয়া করতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, আল্লাহ যেন আমাকে ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার তওফিক দান করেন। কেয়ামতে ময়দানে আল্লাহ যেন আমাকে পুরষ্কৃত করেন। তিনি সারাবিশ্বের আলেম, ওলামা, বাংলাদেশের জনগণ,আপামর জনতার কাছে তার সালাম পৌঁছে দিবেন।


সাঈদীর আইনজীবী মতিউর রহমান আকন জানান, আজ দুই মামলায় তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। তিনি এখন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কঠিন এবং মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এ অবস্থায় শুধুমাত্র হয়রানী করার উদ্দেশ্যে দুটি মামলায় তাকে আজ আদালতে হাজির করা হয়।


তিনি জানান, ৮২ বছর তার বয়স। শারীরিকভাবে তিনি খুবই অসুস্থ। তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। হাঁটতে পারেন না। অন্যের সহযোগিতা লাগে। এ অবস্থায় তাকে যে কষ্টটা দেয়া হলো তা অত্যন্ত কষ্টদায়ক এবং বেদনাদায়ক। আমরা তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেছি।


এদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরার আদালতে অর্থ আত্মসাতের মামলাটির চার্জশুনানির জন্য এবংঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে আয়কর ফাঁকির মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য রয়েছে।

কিন্তু এদিন চার্জশুনানির জন্য প্রস্তুত নয় জানিয়ে সময় আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। শুনানি শেষে আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে চার্জশুনানির তারিখ আগামি ২৮ ডিসেম্বর ধার্য করেন।

এদিন আয়কর ফাঁকির মামলায় সাক্ষী আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় সময় আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রফিক উদ্দীন (বাচ্চু)। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী তারিখ ৬ জানুয়ারি ধার্য করেন।

সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বকশিবাজারের আদালতে হাজির করা হয়। বেলা পৌনে ১১টার আবার কারাগারের উদ্দেশে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সাঈদীকে বকশীবাজারের আদালতে হাজির করার কারণে ওই এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ব্যাপক সংখ্যক পুলিশ নিয়োজিত করা হয়। এদিন তালিকাভুক্ত আইনজীবী ছাড়া আর কাউকেই আদালতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

এদিকে আয়কর ফাঁকির মামলায় দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদী একমাত্র আসামি। অর্থ আত্মসাতের মামলায় দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ৬ জন আসামি। অপর ৫ আসামি হলেন-ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি এডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক।

আসামিদের মধ্যে দেলোওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল কালাম আজাদ এবং আব্দুল হক পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে রয়েছে।

উল্লেখ্য, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ডের আদেশ নিয়ে বর্তমানে করাগারে রয়েছেন।

ইফার যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।


মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে ২০০৫-০৬ অর্থ বছরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যাকাত বোর্ডের ১ কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং ২০০৪-০৫ অর্থ বছরের ১৩ লাখ টাকাসহ যাকাত তহবিলের মোট ১ কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার দেশের ৬৪ জেলায় গরিব ও দুস্থদের না দিয়ে নিজেদের দলীয় প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দ করে আত্মসাত করেন। উক্ত অর্থের মধ্যে সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারেফ হোসেন শাহজাহান জাতীয় বন্ধুজন পরিষদ ভোলার অনুকুলে ৫০ লাখ, কাঠালিয়া মুসলিম এ.কে. ইনষ্টিটিউটের অনুকুলে ৬ লাখ ৫০ হাজার, মাওলানা আবুল কালাম আযাদের মসজিদ কাউন্সিল ফর কামউনিটি এডভান্সমেন্টের অনুকুলে ৪৫ লাখ, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তৎকালীন সভাপতি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ইসলামী সমাজ কল্যান কেন্দ্র পিরোজপুরের অনুকুলে ৫ লাখ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুতফুল হকের দারুল কারার সোসাইটি, শরিয়তপুরের অনুকুলে ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন।

মামলাটি তদন্ত করে দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।



 

Show all comments
  • Sadman ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:২২ পিএম says : 0
    Ei bigho alim er muktir jonno dowa kori. Amin
    Total Reply(0) Reply
  • Sadman ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:২২ পিএম says : 0
    Ei bigho alim er muktir jonno dowa kori. Amin
    Total Reply(0) Reply
  • Anwar Ashraf ৭ ডিসেম্বর, ২০২০, ২:৫৫ পিএম says : 0
    আদালত ন্যায় বিচার নিশ্চিত করলে মাওলানা দেলোওয়ার হোসেন সাঈদী খালাস পাবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ১১:৪০ এএম says : 0
    We used to say that Barbarian Pakistan sucking our wealth, when we liberated our beloved sacred Mother Land, majority become looter, still we are looting million million dollar till to-date. If মাওলানা দেলোওয়ার হোসেন সাঈদী loot the money it's pea nut comparing with those who looting our hard earned tax payers money. In Qiyammah Allah will exposed their crime in front of us. They will not be able to get away the severe punishment from Allah. The Taghut Government have forgotten Allah because they have power on us and they can do anything to us because we are power less.
    Total Reply(0) Reply
  • shazzadul ৯ ডিসেম্বর, ২০২০, ৩:২৫ পিএম says : 0
    খবরটা পড়ে চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না ? হে আল্লাহ তুমি সব পাড় ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাওলানা সাঈদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ