Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা তালেবানদের

আফগানিস্তানের অধরা শান্তি আলোচনা

দ্য ইকোনোমিস্ট | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের জন্য তালেবানদের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের পর আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনাপ্রত্যাহার শুরু হয়েছে। বিনিময়ে জঙ্গিরা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আফগান সরকারের সাথে মধ্যস্ততা আলোচনা শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যার ফলশ্রুতিতে প্রায় ৫ হাজার তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিতে বাধ্য করা হয়। এবছরের শেষ নাগাদ দেশটিতে আমেরিকান সেনার সংখ্যা ৫ হাজারেরও কমে নেমে আসে। তাহলে কি ১৯৭০ এর দশকের শেষভাগে সোভিয়েত আগ্রাসনের পর যুদ্ধ কবলিত আফগানিস্তানে শান্তি আসতে চলেছে? দুঃখজনকভাবে বিষয়টি এখনও বিষয় পরিষ্কার নয়। তবে মনে হচ্ছে, ন্যাটো এবং আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের বিদ্রোহীদের জোটের দ্বারা কাবুল থেকে বহিষ্কার হওয়ার দুই দশক পর, তালেবানদের ক্ষমতায় ফিরে আসার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তারা কোন ধরণের সরকারে যোগ দেবে সেটাই প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে।

আফগান সরকার এবং তালেবানদের মধ্যে আলেচনা শুরু করার কথা ছিল গত মার্চে। শেষ পর্যন্ত তা সেপ্টেম্বরে কাতারে অনুষ্ঠিত হয়। এবং সেখানে দু’পক্ষের মধ্যে প্রোটোকল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক আধিপত্য পায়। আফগান সরকার চেয়েছিল যে, তালেবানরা সমঝোতায় যাওয়ার আগে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হোক, তবে তা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। আমেরিকান সেনাবাহিনী হটিয়ে নেয়ার পর তালেবানদের বশ মানানোর ক্ষেত্রে দুর্বল হয়ে পড়েছে আফগান সরকার। গেন সুযোগে তালেবানরা আমেরিকান লক্ষ্যবস্তুগুলিতে আক্রমণ করা পরিহার করেছে এবং আফগান সরকারী কর্মকর্তাদের হত্যাকান্ড ত্বরান্বিত করেছে। তারা কাবুলের কয়েকটি বড় সড়কের উপর নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করেছে, যেগুলি থেকে তারা টোল সংগ্রহ করে। কাবুলের অবরোধ আরও জোরদার হওয়ার সাথে সাথে সরকারের আলোচনার ক্ষমতা লোপ পেতে শুরু করেছে।

তালেবানদের অবশ্য পরস্পরবিরোধী লক্ষ্য রয়েছে। তারা স্পষ্টভাবে যা চায় তা হ›ল, নতুন সরকারে একটি প্রভাবশালী শক্তিতে পরিণত হতে এবং ইসলামী আমিরাত তৈরি করতে, যা ২০০১ সালের আক্রমণের পর রচিত সংবিধানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না। তবে তারা আন্তর্জাতিক সহায়তাও চায় বলে মনে হচ্ছে, যেটির ওপর আফগানিস্তান টিকে আছে। অতএব শান্তি প্রতিষ্ঠার এক চিলতে সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। সেক্ষেত্রে ২০১৪ সাল থেকে ক্ষমতাসীন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সমস্যা হ›ল, তার পূর্ব শত্রুদের সাথে সরকার গঠনের জন্য তার প্রশাসনকে বিলুপ্ত করতে হবে। বিধ্বস্ত আফগানিস্তানকে সংস্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে তিনি এখন দেখতে পাচ্ছেন যে, সেজন্য একটি তেতো বড়ি তাকে গিলতে হবে। তবে, তিনি তা করতে রাজি হবেন কি না, আফগানিস্তানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্নটির উত্তর দেবে আসন্ন বছর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আফগানিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ