Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত সিরিজের আগে নিজেকে খুঁজে পেলেন স্মিথ

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

আইপিএলটা খুব বাজে কেটেছে স্টিভেন স্মিথের। বহু আশা নিয়ে তাঁকে দলে টেনেছিল রাজস্থান রয়্যালস। কিন্তু দলের সেরা ব্যাটসম্যানের তকমার মান রাখতে পারেননি। মাত্র ২৫.৯১ গড়ে রান নিয়েছেন, স্ট্রাইকরেটটাও খুব একটা ভালো ছিল না। তার বাজে ফর্ম সাহসী করে তুলেছে ভারতকে। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে স্মিথকে শর্ট বল দিয়ে ঘায়েল করার পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যেই জানাচ্ছে তারা। প্রতিপক্ষের সেরা ব্যাটসম্যানকে দমিয়ে রাখতে পারলেই যে সিরিজ জেতার কাজটা সহজ হয়ে যাবে।
স্টিভ স্মিথও বসে থাকেননি। ১ নভেম্বর থেকে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলছেন না। কিন্তু এ সময়টাই কাজে লাগিয়েছেন। নেটে অস্ট্রেলিয়া দলের বোলারদের বিপক্ষে খেলেই নিজের সেরাটা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তিন সপ্তাহেই সাফল্যের দেখা পেয়েছেন। কোয়ারেন্টিনের সময়টা কাজে লাগিয়েই নাকি নিজের সেরা রূপের দেখা পেয়ে গেছেন। সেই ফর্ম যা তাঁকে স্যার জন ব্র্যাডম্যানের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল বছর দুয়েক আগে।
স্মিথ নিজেই দাবি করেন, ক্রিকেটই তার ধ্যানজ্ঞান। প্রতিটি মুহ‚র্ত নিজের খেলা ভালো করার পেছনেই ব্যয় করেন। কিন্তু করোনার কারণে বহুদিন অনুশীলন ও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট থেকে বাইরে ছিলেন। আইপিএলেও তার ব্যাটিংয়ে তার ছাপ দেখা গেছে। কিন্তু দেশে ফেরার পর নিজের ব্যাটিং নিয়ে কাজ শুরু করে নাকি ভালো ফল পেয়েছেন স্মিথ। গতকাল সবাইকে সে খবরটাই জানিয়েছেন, ‘গত কয়েক দিনে আমি একটা জিনিস খুঁজে পেয়েছি। আমার হাতে এমন একটা জিনিস ফিরে পেয়েছি, যা আমাকে খুবই উত্তেজিত করে তুলেছে। যেটা খুঁজে পেতে সাড়ে তিন বা চার মাস সময় লেগেছে। সাধারণত এত সময় লাগে না। আমি জানি না কেন, হয়তো করোনার কারণে চার মাস ব্যাট করিনি বলেই। আমি আবার নেটে যাওয়ার অপেক্ষায়, যেন আবার সেটা করে দেখতে পারি।’
ভারতের জন্য দুশ্চিন্তার ব্যাপার হলো, এর আগে যখনই নিজের হাত খুঁজে পাওয়ার কথা বলেছেন, সেটা প্রতিপক্ষের জন্য সুখকর ছিল না। ২০১৭-১৮ অ্যাশেজের আগে নিজের ব্যাটিংয়ের এ দিকটার কথা বলেছিলেন। সেবার অ্যাশেজটা শেষ করেছিলেন ব্র্যাডম্যানীয় ১৩৭.৪০ গড়ে। টেস্ট রেটিংয়ে ইতিহাসে ব্র্যাডম্যানের সবচেয়ে কাছে চলে গিয়েছিলেন স্মিথ। এর আগেও এমন কিছুর কথা বলেছিলেন স্মিথ। ২০১৫-১৬ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পার্থ টেস্টের আগে প্রথম নতুন কিছু খুঁজে পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। সে ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন। পরের টেস্টই ছিল প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট। রান পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছিল সে ম্যাচে। অ্যাডিলেডেও ম্যাচের সর্বোচ্চ ৫৩ এসেছিল স্মিথের ব্যাট থেকে। পরের দুই সিরিজে ২১৪ ও ১৩১ গড় ছিল স্মিথের!
ব্যাটিংয়ে কী এমন পরিবর্তন আনেন যে কারণে এমন দুর্দান্ত হয়ে ওঠেন স্মিথ? সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়কের চোখে ব্যাপারটা খুব একটা ‘জটিল’ নয়, ‘কাগজে-কলমে জিনিসটা খুব সহজ। শুরু থেকেই আমার গোড়ালির পেছনে ব্যাট করতে স্বচ্ছন্দে আছি কি না, যেভাবে আমার হাতে ব্যাট উঠে আসছে; ব্যাপারটা আসলে ব্যাখ্যা কঠিন। তবে এটাই ঠিকভাবে করতে পারছিলাম না দুদিন আগ পর্যন্ত। আমি কিছু একটা খুঁজে পেলাম আর সবকিছুই খাপে খাপে মিলে গেল। কীভাবে বলটা খেলছি, সেটা বদলে দিচ্ছে এটা। আমি চাইলেই বিভিন্ন জায়গায় পাঠাতে পারছি বল। স‚² কিছু জিনিস এবং ছন্দটা ঠিক ছিল না। সেদিন অনুশীলনের পর মুখভরা হাসি ছিল আমার। আমি অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডের (সহকারী কোচ) পাশ দিয়ে হেঁটে গেলাম আর বললাম, “আমি আবার খুঁজে পেয়েছি ওটা।”’
ভারতের বিপক্ষে বরাবরই ভালো খেলেন স্মিথ। সব সংস্করণ মিলিয়েই ভারতের বিপক্ষে স্মিথের গড় ৬৯.৪১! অথচ গতবার ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরটা দর্শক হয়ে কাটাতে হয় তাঁকে। নিষিদ্ধ থাকায় খেলা হয়নি। বড় উপলক্ষ পেলেই জ্বলে ওঠা যাঁর অভ্যাস, সেই ব্যাটসম্যানের অভাবে ভারত সিরিজ জিতেই ফিরেছে। এবার সেটা যে করতে দেবেন না, সেটা জানিয়ে দিয়েছেন ইঙ্গিতে, ‘বড় সিরিজে আমি চেষ্টা করি নিজের সেরাটা বের করতে। সেটা অ্যাশেজ হোক কিংবা ভারত সিরিজ। নিজের ভেতর থেকে কিছু আসে কি না, আমি জানি না। এটা বোলারদের বিপক্ষে ছন্দ থেকেও আসে। প্রায়ই দেখা গেছে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ভালো করেছি, আর সেখান থেকেই ছন্দ পেয়েছি।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ