মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গত ১৫ নভেম্বর হ্যানয়ে স্বাক্ষরিত পৃথিবীর বৃহত্তম বহুমুখী বাণিজ্য চুক্তি এশীয় দেশগুলির রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনোমিক পার্টনারশিপ-আরসিইপি যেমন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, তেমনি কিছু রেকর্ড গড়েছে। তবে এ অর্জনের তাৎপর্য সম্পর্কে ভিন্নমতও রয়েছে। কেউ কেউ আরসিইপিকে শুধু কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ দেখছেন। বাকিরা এটিকে একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসাবে বিবেচনা করছেন, যেখানে চীন পুরো এশিয়া জুড়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
সত্যটি এর মাঝামাঝি কোথাও নিহিত রয়েছে। আরসিইপি এশীয় বাণিজ্য নীতিতে কোনও নাটকীয় উদারতার সূচনা করেনি। এটি বরং এসোসিয়েশন অফ সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশন-আসিয়ান এবং অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান, নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ এশিয়ার প্যাসিফিকের বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যে বিভিন্ন মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি বা ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টস-এফটিএ’কে একত্রিত করেছে।
ভারত তার দেশীয় শিল্প চীনা আমদানিতে সয়লাব হওয়ার আশঙ্কায় চুক্তির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। আরসিইপির সদস্যপদের জন্য কম্প্রিহেন্সিভ এন্ড প্রগ্রেসিভ এগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ-সিপিটিপিপি’র বিস্তৃত ও প্রগতিশীল চুক্তি। ২০১৮ সালে ১১টি দেশ সিপিটিপিপি চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের সাথে সাথেই এ থেকে সরে দাঁড়ান।
এটা সত্যি যে, আরসিইপি কম উচ্চাভিলাষী, যেমন এর স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে খুব ধনী জাপান এবং সিঙ্গাপুর থেকে শুরু করে খুব গরিব লাওস এবং মিয়ানমারও রয়েছে। তবে, পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্সের পিটার পেট্রি এবং মাইকেল প্ল্যামারের একটি গবেষণা প্রতিবেদন বলেছে যে, এটি ২০৩০ সালে সিপিটিপিপি’র ১৪৭ বিলিয়ন ডলার লাভের তুলনায় বার্ষিক বৈশি^ক জিডিপি ১৮৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে দেবে।
প্রতিবেদনটি বলেছে যে, এ থেকে ব্যাপক সুবিধা ভোগ করবে চীন, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া। দীর্ঘকাল ধরে আলোচনায় থাকা এবং রাজনৈতিক মারপ্যাচে জর্জরিত এ তিন দেশের নিজস্ব ত্রিপক্ষীয় মুকাত বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টাও বাড়িয়ে দেবে আরসিইপি। চীনও অন্যান্য দিক থেকেও লাভবান হবে। দেশটি তার প্রথম বহুপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিতে যোগদানের ক্ষেত্রে, এমন এক সময় বাণিজ্য উদারকরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রকে এ অঞ্চল থেকে খানিকটা বিচ্ছিন্ন বলে মনে হচ্ছে এবং দেশটি চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
এটি চীনের বাণিজ্য নীতিকে আঞ্চলিক দিকে ঝুঁকিয়ে দেবে। ইতোমধ্যেই পশ্চিমে রফতানির আগে এশীয়ার বিভিন্ন দেশ জুড়ে বিস্তৃত উৎপাদিত পণ্য সরবরাহের চেইনে আধিপত্যের প্যাটার্নটি পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। ওয়াশিংটন ভিত্তিক আর্থিক-শিল্প সংস্থা ইন্সটিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্সের মতে, চীনের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার হিসাবে আসিয়ান এবছরের প্রথমার্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ছাড়িয়ে গেছে।
আসিয়ান এ চুক্তিটিকে বাণিজ্য থেকে শুরু করে দক্ষিণ চীন সাগর পর্যন্ত সমস্ত খুঁটিনাটি আলোচনার ক্ষেত্রে তার ধীর, বর্ধনশীল প্রতিপত্তির নিয়ামক হিসাবে বিবেচনা করবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এর সদস্যদের কেউ কেউ এমন একটি সম্ভাব্য বিশে^ প্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যেখানে চীনের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামরিক বাহিনী এশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করবে। সে কারণেই, আসিয়ানের অনেকে আশা করছেন যে, জো বাইডেনের অধীনে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলটির সাথে আরও শক্তিশালীভাবে যুক্ত হবে। নইলে চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য এবং এশিয়ার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক উদাসীনতা এঞ্চলে শক্তির ভারসাম্যকে পুনর্নির্মাণ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।