Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৫৭ ধারায় গ্রেপ্তার রাবি সাংবাদিক বাপ্পীর মুক্তি দাবি সাংবাদিকদের

রাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০২০, ৪:৩৪ পিএম

পাঁচ বছর আগে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি মানিক রাইহান বাপ্পীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকসহ দেশের গণমাধ্যমকর্মীরা। গতকাল রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা।
মানববন্ধনে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, রাজশাহীর স্থানীয় সোনালী সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলীসহ ৮ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
রাবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসাইন বিপ্লবের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা সাংবাদিকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্ত বাক স্বাধীনতার প্রতি নগ্ন আঘাত। একজন শিক্ষক হয়ে শিক্ষার্থীকে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে যে হয়রানি করেছে এটির তার নৈতিক পদস্খলন হয়েছে। এখন এই হীন কাজ করে সাংবাদিকদের কলম রোধ করা যাবে না। মানববন্ধনে সাংবাদিকরা অবিলম্বে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি করে একই সাথে গ্রেপ্তার মানিক রাইহান বাপ্পীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি’র সভাপতি ও ডেইলি স্টারের বিশ^বিদ্যালয় প্রতিনিধি আরাফাত রহমান,রাবিসাসের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক দেশ রুপান্তরের প্রতিনিধি শাহিন আলম, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও নিউ নেশনের প্রতিনিধি বেলাল হোসাইন বিপ্লব, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আকরাম হোসাইন, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি হারুন অর রশিদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফরিদ, রাবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সাবেক সভাপতি সুজন আলী প্রমুখ।
এর আগে ২০১৫ সালের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের তখনকার আবাসিক শিক্ষক ও কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক কাজী জাহিদের বিরুদ্ধে সিট বরাদ্দ দিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ২৪ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ক্ষুব্ধ ওই শিক্ষক যুগান্তরসহ ১৬টি পত্রিকার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা দায়ের করেন। সে সময়ে বাপ্পী ২৪বিডিটাইম ডটকম নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মামলার এজহারে তার নামও উল্লেখ করা হয়েছিল। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল ইসলামসহ আরও সাত জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, মতিহার থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোমিন।
মামলায় তিনি দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম, যুগান্তরের তৎকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হাসান আদিব, যুগান্তরের বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মানিক রাইহান বাপ্পী ও রাজশাহীর স্থানীয় দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক লিয়াকত আলীসহ ৮ সাংবাদিককে আসামী করা হয়েছে।

এ মামলার প্রেক্ষিতেই গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হন সাংবাদিক মানিক রাইহান বাপ্পী। পরে ১৪ নভেম্বর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
এ সাংবাদিক নেতার গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, ডুয়েট সাংবাদিক সমিতি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতিসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।
মানিক রাইহান বাপ্পীর বাড়ি চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলায়। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ছাড়া, রাবি প্রেসক্লাবের ২৯তম কার্যনির্বাহী কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। বাপ্পী বর্তমানে যুগান্তরের রাবি প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানববন্ধন

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ