বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দল আজ টাকার কাছে জিম্মি, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সাতক্ষীরার তালায় আত্মাহত্যা করলেন এক ছাত্রলীগ কর্মী। তিনি তালা উপজেলার হরিসচন্দ্রকাটি গ্রামের শেখ মঞ্জুরুল রহমানের ছেলে শেখ রিয়াদ হোসেন বাবু (২৫)। ফেসবুকে তিনি ত্যাড়া মুন্সী বাবু নামেই পরিচিত। শুক্রবার বিকাল ৪ টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি বিষপান করেন। রাতে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
‘স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো’ নিজের কাছেই অবাক লাগছে। আজ এক সপ্তাহ হলোৃ, বিষের বোতলটা আমার বালিশের নিচে পড়ে আছে স্পষ্ট দেখতে পারছি। সবাই নির্বাক হয়ে গেছে। ছোটো ভাইটা পাগল প্রায়। জানি ছোট বোনটা খুব কাঁদছে। অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি হয়তো! এমনটা তো হবার কথা ছিলনা। জানেন? সেদিন খুব কেঁদেছিলাম আমি। যেদিন আমার হাতটা ছেড়ে দিয়েছিলেন সোহাগ দাদা। আমার বাঁচার শেষ আশা টুকু ছিলেন ওনি। অঝরে কেঁদেছি সারা রাত এই কদিন। প্রতি রাতে বাঁলিশ ভিজিয়েছি চোঁখের জলে। একটি বারও খোজ নাওনি কেমন ছিলাম আমি।
আর, দোস্ত তোদের অনেক ধন্যবাদ। ফেসবুকে আমাকে নিয়ে লেখালেখি করছিস। তবে কি জানিস ? বাস্তবে এতটা সময় তোরা যদি দিতি----তাহলে, না থাক কিছুনা, জানি তোমরা খুব কাঁদছো। জানি খুব ভালবাসতে আমাকে। হয়তো ঘৃণাও করতে অনেকে। যদি আর একটু খোজ করতে, আমার সমস্যা গুলো শুনতে যদি আমার দিকে আর একটু খেয়াল রাখতে যদি সবকিছু নির্ভয়ে বলতে পারতাম তোমাদের তাহলে আজ হয়তো ---ছোট বোন, কাঁদিস না লক্ষিটি। হয়তো সব থেকে বড় অন্যায়টা তোর সাথে হলো! মাফ করে দিস তোর এই অপরাধী ভাইটিকে। জানি এই ভুলের কোন ক্ষমা নেই।
ভাল থাকুক ভালবাসার মানুষগুলো। দুর থেকে না হয় দেখলাম সবার হাসি মাখা মুখ। ভাল থেকো সবাই, হয়তো ফিরার ইচ্ছা থাকলেও চাইলে পারবোনা। ক্ষমা করে দিয়ো তোমাদের সন্তানকে। এখানে খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। সবায়কে ছেড়ে থাকাটা অনেক অনেক বেশি কষ্টের। অনেক বেশি ভুল করে ফেলেছি। ইশ যদি আর একটু সময় পেতাম। কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব না।
ভাল থেকো সবায়। দুর থেকে দেখবো সবাইকে। ভাল থাকুক ভালবাসার মানুষ গুলো। ক্ষমা করে দিবেন এই বাজে ছেলেটাকে। আমি নাকি খারাপ, হুম মানলাম বাট হয়তো এমন কাউকে পাবেন না যে প্রমান করতে পারবে আমি খারাপ। কারন আমি আজ অবদি এমন কোনো কাজ করিনি যে প্রমাণ করতে পারবেন। ছোটো বেলা থেকে আমার রক্তে মিশে আছে রাজনীতি। আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে বিশ্বাসি।
তার দেখানো পথেই চলে আসছি আজ অবদি। চাকরি বা বিয়ে কোনোটাই করিনি ছাত্রলীগ করবো বলে। বাট আজ দলও টাকার কাছে জিম্মি। আমার জীবনে আর কি বাকি আছে, হয়তো বেচে থাকতাম দু মুটো ভাতের জন্যে। কিন্তু যখন অসহায় মানুষগুলো কাঁদে আমি তাদের কান্না শয্য করতে পারি না। আমার নেতা বঙ্গবন্ধুও পারিনী। তাই তো সে নিজের জীবন দিছে তবুও হার মানেনি, লড়াই করে গেছে অন্যায় এর বিপক্ষে সারাজীবন ।
আমিও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে পারিনি তাই আমি খারাপ। আমার জীবনে আজ অবদি যতো খারাপ সময় তার সব কিছু এই রাজনীতির জন্যে। ভবিষ্যতের কথা ভাবিনি কখনো, আজ জীবনের এই শেষ সময় ক্যানো জানি মনে হচ্ছে এই ছাত্রলীগের নেশাটাই আমাকে শেষ করে দিলো। হারিয়েছি সব, ঘর, পরিবার, ভালোবাসার মানুষ, কাছের মানুষ সব সব কিছু হারিয়েছি এই রাজনীতির জন্যে। তাই চলে গেলাম এই নিষ্ঠুর সার্থের পৃথিবী থেকে ক্ষমা করে দিবেন আমাকে।
শনিবার (৭ নভেম্বর) তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।