Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৩৬৫ কোটি টাকা নয়-ছয়

১৪ জেলায় ডাক বিভাগের মেইল সেন্টার

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

মানুষ আগের মতো চিঠি লেখে না। ডাক পিয়নের অপেক্ষায়ও থাকে না কেউ। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে থেমে গেছে চিঠির গুরুত্ব। নব্বইয়ের দশকেও একটি আঞ্চলিক ডাকঘরে দৈনিক চিঠি জমা পড়তো হাজার হাজার। এখন জমা পড়ে না ২শ’ চিঠিও। ক্ষয়িষ্ণু ডাক ব্যবস্থার এ বাস্তবতার মধ্যেই সারা দেশে ৩৬৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা হয়েছে ‘মেইল প্রসেসিং সেন্টার’ (ডাক প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্র)। অভিযোগ রয়েছে, কোনো ধরনের প্রয়োজনীয়তা ছাড়াই প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয়েছে এসব সেন্টার। সাড়ে ৩ হাজার টাকার মেশিন কেনা হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। বিপরীতে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে কোটি কোটি টাকার কমিশন।

রেকর্ডপত্র ঘেটে দেখা যায়, ‘মেইল প্রসেসিং ও লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টার নির্মাণ প্রকল্প’র বাস্তবায়নে একনেকে সিদ্ধান্ত হয় ২০১৮ সালের ২৯ মে। সরকারি (জিওবি) অর্থায়নে প্রকল্পে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৩৬৫ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু করোনা প্রকোপে মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, (ক) দেশের বিভিন্ন স্থানে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ডাক প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র নির্মাণ। (খ) ডাক বাছাই ও প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং প্রযুক্তিনির্ভর ও দ্রুতকরণ। (গ) বাণিজ্যিক পার্শ্বেল এবং লজিস্টিক বাছাই, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ ও বিতরণ ব্যবস্থার প্রবর্তন। (ঘ) দ্রুততম সময়ে ডাক বাছাই প্রক্রিয়াসম্পন্ন করে দেশের প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চল পর্যন্ত প্রাপকের নিকট গন্তব্যে ডাক সেবা প্রদান নিশ্চিতকরণ (ঙ) ডাক সেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণ এবং (চ) ই-কমার্স সেবার সম্প্রসারণ।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রকল্পের প্রথম পর্যায়েই ১৪টি জেলায় ‘মেইল প্রসেসিং সেন্টার’ বা ভবন নির্মাণ করা হয়। সেন্টারগুলো হচ্ছে- ঢাকা, গোপালগঞ্জ, ময়মনসিংহ, খুলনা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, রাজশাহী, পাবনা, রংপুর, বরিশাল, দিনাজপুর, হবিগঞ্জ, কুষ্টিয়া এবং যশোর। এসব জেলায় স্থাপিত একেকটি নতুন ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় ২৫ থেকে ৩৫ কোটি টাকা। উন্মুক্ত দরপত্র পরিহার করে অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে অবলম্বন করা হয় বিতর্কিত ডিপিএম পদ্ধতি (ডাইরেক্ট প্রকিউরমেন্ট মেথড)। প্রকল্পের যন্ত্রপাতিগুলোর ‘বিক্রেতা’ হিসেবে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ‘ক্রয়’ দেখানো হয় যে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট মেশিনগুলো উৎপাদন, বিপণন এমনকি সংযোজনের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পর্কিত নয়। ডিজিটাল যুগে সকল সরকারি কেনাকাটা ইজিপি’র মাধ্যমে সম্পাদনের বিধান রয়েছে। কিন্তু সুধাংশু শেখর ভদ্র অত্যন্ত চাতুর্যের সঙ্গে ডিপিএম পদ্ধতি প্রণয়ন করেন নিজস্ব ব্যক্তিদের কাছ থেকে কেনাকাটার উদ্দেশ্যে। পওস মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি মূল সরবরাহকারী আইটিসিএল। এটির মালিক মনির হোসেন এবং সাদী আব্দুল্লাহ। তারা এসএস ভদ্রের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত। ভদ্রের পক্ষে উপ-প্রকল্প পরিচালক ডিপিএমপি মো. শাহ আলম ভুইয়া এসব ‘ম্যানেজ’ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব কারণে মেইল প্রসেসিং সেন্টার প্রকল্পটিকে ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ বলেও উল্লেখ করেন ডাক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ। ‘ই-সেন্টার’ প্রকল্পের চেয়ে আরও বৃহৎ মাত্রায় ‘মেইল প্রসেসিং সেন্টার’ প্রকল্পে দুর্নীতি সংঘটিত হয়- মর্মে মনে করছেন তারা।

ডাক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভবন নির্মাণের পর আসবাবপত্র, যন্ত্রপাতি ক্রয়েও মোটা অংকের কমিশন হাতিয়ে নেয়া হয়। এমনসব আসবাব এবং যন্ত্রপাতি কেনা হয় যা মেইল প্রসেসিংয়ের সঙ্গে কোনোভাবে সম্পর্কিত নয়। এর আগে সাড়ে ৫শ’ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হয় ডাক বিভাগের ‘ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি প্রকল্প’। এ প্রকল্পের আওতায় কেনা হয়েছিল ৭০ কোটি টাকার পওস (পয়েন্ট অব সেল) মেশিন। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ৩টি তদন্তেই বলা হয়, মেশিনগুলো কোনো কাজে আসেনি।

এ পরিস্থিতিতেই মেইল প্রসেসিং সেন্টার প্রকল্পের জন্য কেনা হয় আরও ২২ হাজার পওস মেশিন। মেইল প্রসেসিংয়ের সঙ্গে পওস মেশিনের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই। শুধুমাত্র কমিশন হাতিয়ে নেয়ার লক্ষ্যেই অপ্রয়োজনীয়ভাবে এসব মেশিন কেনা হয়েছে মর্মে অভিযোগে জানা যায়। একই প্রকল্পের আওতায় কেনা হয় ফ্রাঙ্কিং মেশিন এবং নোট কাউন্টিং মেশিন। মেশিনগুলো মেইল প্রসেসিং সেন্টারের কোনো কাজেই আসবে না বলে জানা গেছে।

ডাক সূত্র জানায়, দেশের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ডাক বিভাগের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে বিশেষ দুর্বলতা। তিনি বিভাগটির প্রতি সবসময়ই ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। এ কারণে গ্রাহকসেবা এবং বিভাগটির অস্তিত্বের কথা চিন্তা করে ডাক ব্যবস্থার আধুনিকায়নে বেশ কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদন দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত আকাক্সক্ষার এই প্রকল্পগুলোকেই ছুটি ভোগরত ডাক মহাপরিচালক এসএস ভদ্র কাজে লাগান ব্যক্তিগত আখের গোছানোর ক্ষেত্রে। লুটপাটের সংস্থান হিসেবে বেছে নেন তিনি। ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে আত্মনিয়োগ করেন প্রকল্পের নামে কেনাকাটায়। প্রয়োজনীয়তার চেয়ে কেনাকাটাই যেন মুখ্য। প্রকল্পের বাস্তবিক উপযোগিতার চেয়ে কমিশনটাই হয়ে ওঠে মুখ্য।

এ লক্ষ্যে কেনাকাটায় যত ধরনের চাতুর্যের আশ্রয় নেয়া সম্ভব- সবই তিনি অবলম্বন করেন। যদিও সেটি সম্পন্ন করতে গিয়ে সৃষ্টি করেছেন লেজে-গোবরে অবস্থা। অভিযোগ রয়েছে, ৩৬৫ কোটি টাকায় মেইল প্রসেসিং ও লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টার’ স্থাপনের আগে এটির প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) করা হয়নি। কারণ, পোস্টাল ভলিউম অনুযায়ী প্রতিবছর ফেব্রæয়ারি এবং সেপ্টেম্বর মাসে ‘ই-নিউমারেশন’ বা চিঠি গণনা করা হয়।

কোন্ সেন্টারে, কোন্ জেলা এবং বিভাগীয় সদরের কত সংখ্যক চিঠি বা মেইল আদান-প্রদান হয় এটির একটি নিরীক্ষণ হয়। যদিও এই নিরীক্ষণের সঠিকতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তদুপরি ডাক বিভাগের যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের এটিই এখন পর্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিবেচ্য। কিন্তু ‘মেইল প্রসেসিং ও লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টার’ স্থাপনে এ পদ্ধতিতে ভিত্তি ধরা হয়নি বলে জানা গেছে। অথচ ব্রিটিশ শাসনামল থেকে এ পদ্ধতি কার্যকর রয়েছে।

নির্মিত মেইল প্রসেসিং সেন্টার থেকে সাধারণ মানুষের উপকৃত হওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান, ডাক বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা। তাদের যুক্তি হচ্ছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলাকে বলা হয় ‘মেইল হাব’। এটি একটি বৃহৎ ‘মেইল-জংশন’। এ জংশন থেকে খুলনা, যশোর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরা বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা, রাজবাড়ি, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ডাক সঞ্চালন (ট্রান্সমিশন) করা সম্ভব স্বল্পব্যয়ে। এ ছাড়া ভাঙ্গা থেকে গোপালগঞ্জ, কাশিয়ানি ভাটিয়াপাড়া, নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত মেইল ট্রান্সমিশন করা সম্ভব। ভাঙ্গা থেকে আরেকটি ট্রান্সমিশন রুট হচ্ছে- গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট-খুলনা-সাতক্ষীরা পর্যন্ত। অথচ ফরিদপুরের ভাঙ্গার মতো গুরুত্বপূর্ণ জংশনে কোনো মেইল প্রসেসিং সেন্টার ও লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টার’ নির্মাণ করা হয়নি।

এভাবে মেইল ভলিউম অনুযায়ী প্রসেসিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়। ভলিউম বিচারে কুষ্টিয়া, পাবনা, হবিগঞ্জ, নোয়াখালীতে মেইল প্রসেসিং সেন্টার প্রয়োজনই নেই। এসব সেন্টারে প্রতিদিন গড়ে একবস্তা মেইলও আসে না। অথচ সেখানে স্থাপন করা হয়েছে মেইল সেন্টার। সবগুলো বিভাগীয় শহরে সেন্টার প্রয়োজন। অথচ সেখানে স্থাপন করা হয়নি। প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই না করার কারণেই এসব মেইল প্রসেসিং সেন্টার থেকে ডাক বিভাগ খুব বেশি উপকৃত হবে না বলে মনে করছেন ডাক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই।

এদিকে প্রকল্প সূত্র জানায়, মেইল প্রসেসিং সেন্টারে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত আগ্রহে পচনশীল দ্রব্যের জন্য ফ্রিজিং চেম্বারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কিন্তু এ ব্যবস্থাটি থেকেও সুফল পাওয়া সম্ভব নয় যদি ‘স্পিড পোস্ট’কে কার্যকর করা না হয়। ডাক অধিদফতরের অবসরে যাওয়া মহাপরিচালক সুশান্ত কুমার মন্ডল ‘স্পিড পোস্ট’ চালু করেন। সেবাটি গ্রাহকের মাঝে আশার সঞ্চার করে। কারণ এতে ডাক মাসুল কম। এক থেকে দু’দিনের মধ্যে ডাক পৌঁছে যেতো। কিন্তু পরবর্তী মহাপরিচালক সুশান্ত শেখর ভদ্র ‘স্পিড পোস্ট’র কোনো উন্নয়ন না ঘটাননি। ফলে সেবাটি গ্রহণযোগ্যতা পেলেও পরে মুখ থুবড়ে পড়ে। এখন মেইল প্রসেসিং সেন্টারে ফ্রিজিং চেম্বার রাখা হলেও স্পিড পোস্ট’ সেবাটি না থাকায় তেমন সুফল বয়ে নাও আনতে পারে।

ডাক সংশ্লিষ্টরা জানান, কুষ্টিয়া মেইল প্রসেসিং সেন্টারের বাস্তবিক কোনো উযোগিতা নেই। অথচ উক্ত মেইল সেন্টারটি চালুর জন্য ১শ’ ৩১ কোটি ৬লাখ ৪০ হাজার টাকার ৩৫ ধরণের ১২৮৭টি যন্ত্রপাতি কেনা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ওয়েইং স্কেল, ফর্ক লিফট, ম্যানুয়াল হাইড্রলিক ফর্ক লিফট, হ্যান্ড ট্র্যাকার, কলাপসিবল ট্রলি কেস, ফোল্ডিং ট্রলি কেস, প্যালেট কেস, প্ল্যাটফর্ম ট্রলি, হ্যান্ড ট্রলি, রোলার কনভেয়্যর ১৫ফিট, এক্স-রে গুডস স্ক্যানার মেশিন, চিলার মেশিন উইথ ইনস্টলেশন ৫০০ ফিট, বার কোড স্ক্যানার, স্ট্যাম্প ক্যান্সেলার, মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে গেট, বারকোড প্রিন্টার, এয়ার কন্ডিশন, সোলার সিস্টেম (এসকেডবিøউ), স্মোক ডিটেক্টর, জেনারেটর-৫০০ কেভিএ, স্মার্ট এক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম, ফায়ার ইস্টিংগুইশার, কমার্শিয়াল পওএস মেশিন ১০০টি, ফ্রাঙ্কিন মেশিন সার্ভার বেসড, স্মার্ট পোস্টেজ সল্যুশন, নোট কাউন্টিং মেশিন, নোট বাইন্ডিং মেশিন, কিউ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, মেইল মনিটরিং সফটঅয়্যার, সিলিং ফ্যান, সিসি ক্যামেরা উইথ ইনস্টলেশন (১০ সেট), ক্যামেরা, ডিভিআর, ক্যাবল ও অন্যান্য, ইউপিএসসহ কম্পিউটার ডেস্কটপ এবং পিওএস রুল। হবিগঞ্জ মেইল সেন্টার ও লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টারের জন্য কেনা হয় ৩৫ ধরনের ১৩শ’ ৭৭টি যন্ত্রপাতি। এভাবে ১৪টি মেইল প্রসেসিং সেন্টারের ভবন নির্মাণের পর একই হারে যন্ত্রপাতি কেনা প্রায় সম্পন্ন করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, প্রকল্প পরিচালক মো. মনসুর রহমান মোল্লাকে নামমাত্র পিডি’র চেয়ারে রেখে কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে অন্তত: ১০৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ছুটিতে থাকা মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র। তারপক্ষে উপ-প্রকল্প পরিচালক শাহ আলম ভুইয়াই সব ‘দেখাশোনা’ করেন।

ডাক বিভাগের অভিজ্ঞ কর্মকর্তারা জানান, মেইল প্রসেসিং সেন্টারের সঙ্গে পিওএস (পওস মেশিন)র কোনো সম্পর্কই নেই। শুধুমাত্র কেনার জন্যই কেনা হয়েছে অন্তত: ২২ হাজার নতুন পওস মেশিন। সাড়ে ৩ হাজার টাকা পওস মেশিন ক্রয় দেখানো হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায়। একইভাবে ফ্রাঙ্কিং মেশিন এবং নোট কাউন্টিং মেশিনেরও কোনো প্রয়োজন নেই মেইল প্রসেসিং সেন্টারে। এটিও শুধুমাত্র কমিশন হাতিয়ে নেয়ার জন্যই কেনা। এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হয় মহাপরিচালকের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত মহাপরিচালক বাহিজা== আক্তারের সঙ্গে। কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। সাক্ষাত চাইলেও তিনি সাক্ষাত দেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক মো. মনসুর রহমান মোল্লা এই প্রতিবেদককে বলেন, ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) অনুসারে প্রকল্পের কাজ প্রায় ৯৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। মাঝে করোনার কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে এ জন্য আমরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বর্ধিত সময় পেয়েছি। আশা করছি আগামী জুনের মধ্যেই প্রকল্প ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব।

প্রকল্পের নামে সরকারি অর্থ নয়-ছয় এবং সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়াই মেইল প্রসেসিং ও লজিস্টিক সার্ভিস সেন্টার নির্মাণ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পর্কে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার গতকাল রোববার এ প্রতিবেদককে বলেন, যেহেতু প্রকল্পটি একনেকে পাস হয়েছে তাই ক্ষেত্রে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়নি- এ কথা বলা যাবে না। প্রকল্পে ত্রুটিবিচ্যুতি থাকতে পারে। সেগুলো তুলে ধরুন। আমরা নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেব। তিনি বলেন, ডাক বিভাগকে ডিজিটালাইটেশনের মাধ্যমে চেহারা বদলে দেব। কিন্তু সে জন্য আমাকে সময় দিতে হবে। সহযোগিতা করতে হবে।



 

Show all comments
  • Rohul Mollik ২ নভেম্বর, ২০২০, ১:৫৫ এএম says : 0
    অবৈধ সরকার রন্ধে রন্ধে অবৈধ কাজ, দেশ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
    Total Reply(0) Reply
  • Sahabuddin Gazi ২ নভেম্বর, ২০২০, ১:৫৬ এএম says : 0
    কোথায় যাবে মানুষ সব জায়গায়ই দুর্নীতি আর দুর্নীতি। শুদুমাত্র সঠিক বিচার না থাকায় হয়ে যাচ্ছে একের পর এক,,,,,,,?
    Total Reply(0) Reply
  • Rafiqul Islam ২ নভেম্বর, ২০২০, ১:৫৬ এএম says : 0
    সর্বনাষ, ডাকবিভাগ গরীবের আস্তার জায়গা ছিলো
    Total Reply(0) Reply
  • Atif Mahmud ২ নভেম্বর, ২০২০, ১:৫৮ এএম says : 0
    সরকার বর্তমানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। তাই দুর্নীতিবাজ যেই হোক না কেনো সরকার তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবেই। কেউ রক্ষা পাবে না আইনের হাত থেকে।
    Total Reply(0) Reply
  • তাসফিয়া আসিফা ২ নভেম্বর, ২০২০, ১:৫৯ এএম says : 0
    আগে গুরুত্বপূর্ণ দলিল দস্তাবেজ ডাকযোগে পাঠানো হতো। যোগাযোগের পাশাপাশি অর্থের লেনদেনে মানুষ ডাক বিভাগের ওপর নির্ভর করত। বর্তমানে ডাক বিভাগের কার্যক্রম সীমিত হলে হলেও খরচ কমেনি। এটাই আমাদের অবসথা।
    Total Reply(0) Reply
  • কে এম শাকীর ২ নভেম্বর, ২০২০, ২:০০ এএম says : 0
    ‘পোস্ট-ই-সেন্টার ফর রুরাল কমিউনিটি’ নামের একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে ডাক বিভাগে হরিলুটের খবর প্রকাশ হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সময় এর অনিয়ম নিয়ে কেউ কথা বলতে পারেননি। এখন দেখা যাচ্ছে, ১৬০ কোটি টাকার কোনো হিসাব নেই। ৫৪১ কোটি টাকার বাকি প্রকল্পের কেনাকাটায় চরম অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • হোসাইন এনায়েত ২ নভেম্বর, ২০২০, ২:০০ এএম says : 0
    জনগণের অর্থ-সম্পদ রক্ষায় দরকার পাহারাদার। যারা নৈতিকতার প্রশ্নে থাকবেন অবিচল। আমরা দেখতে পাচ্ছি, গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো ক্রমেই দখলে যাচ্ছে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের। ‘শিয়ালের কাছে মুরগি বর্গা’ দিয়ে কেউ মুরগির নিরাপত্তা আশা করতে পারে না।
    Total Reply(0) Reply
  • বায়েজীদুর রহমান রাসেল ২ নভেম্বর, ২০২০, ২:০০ এএম says : 0
    দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করে জনগণের স্বার্থকে সুরক্ষিত করতে হলে সরকারের নীতিগত পরিবর্তন দরকার। সরকারকে আগে সংকল্পবদ্ধ হতে হবেÑ দুর্নীতিবাজদের আর ছাড় দেয়া হবে না। তবেই জনগণের সম্পদ সুরক্ষিত হবে। আশা করি, সরকারের বোধোদয় হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • মুহামমদ রশিদ ২ নভেম্বর, ২০২০, ৩:০১ এএম says : 1
    ডাক বিভাগকে দেখার দায়িত্বশীল লোকের অভাব।বিসিএস ডাক অফিসার কি করেন? সরকার বেতন তিনগুন করেছেন।দায়িত্ব পালন করেন।দেশকে ভালবাসেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Rn ariyen ২ নভেম্বর, ২০২০, ৭:৩১ এএম says : 0
    সব তো জনগনের টাকা ওদের বাবার টাকা হলে গায়ে লাগত। ঘৃণা হয় আমার যারা দিনমজুর ঠিক মতে খেতে পারছে না।ওদের টাকার আমলা গিরি নয় ছয় করে।
    Total Reply(0) Reply
  • Jack Ali ২ নভেম্বর, ২০২০, ৮:৩৯ পিএম says : 0
    Allah disobedient government have destroyed our country.. every where corruption is pandemic. O'Muslim this is our fault, you claim yourself muslim but you don't want to be ruled by the Law of Allah.. Still there is time unite under one banner of Islam and establish the Law of Allah and we will arrest all the Criminals who have destroyed our country and we will punish them according to Qur'an and Sunnah.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাক বিভাগ

২৫ ডিসেম্বর, ২০২০
৩ নভেম্বর, ২০২০
১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০
১৯ অক্টোবর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ